এই রেজিমের বিদায় ঘটাতে হবে: আমীর খসরু

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বিচার বিভাগ হলো এখন পুলিশের এক্সটেনশন। তারা এখন সবার সামনে চলে এসেছে। এটা খুবই গুরুত্বের সঙ্গে মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে দেশের পরিবর্তন করতে বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটাতে হবে। গতকাল দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার সহধর্মিণী ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে সাজা দেয়ার প্রতিবাদে এই সভার আয়োজন করে জিয়া পরিষদ কেন্দ্রীয় সংসদ।

আমীর খসরু বলেন, যে রায় দেয়া হয়েছে তা বিচার বিভাগীয় রায় নয়। এটি একটি ফ্যাসিস্ট রেজিমের রায়। যারা জনগণকে বাইরে রেখে ক্ষমতায় বসে আছে। আইনের নামে যত বেআইনি কাজ আছে সবই তারা করছে। অসাংবিধানিকভাবে সংবিধান সংশোধন করেছে। বিচার বিভাগ, আইন বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগ যার যার অবস্থান থেকে স্বাধীনভাবে কাজ করার কথা।

কিন্তু অসাংবিধানিকভাবে সংবিধান সংশোধন করার কারণে দেশকে এমন জায়গায় নিয়ে গেছে সবই একাকার হয়ে গেছে। কারণ সত্যিকার অর্থে সাংবিধানিকভাবে দেশ পরিচালনা হলে ফ্যাসিস্ট রেজিমের অস্তিত্ব থাকবে না। অবৈধ সরকারের অস্তিত্ব থাকবে না। এজন্যই তারা জবাবদিহিতা চায় না।
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, আজকে তারেক রহমান ও তার সহধর্মিণী ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে যে সাজা দিয়েছে সেখানে বিচারকের করার কিছু নাই। কারণ এটা তো সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে আসে। যা সাবেক প্রধান বিচারপতি সিনহা এমনকি বর্তমান বিচারকরাও বলেছেন। সুতরাং তাদের কাছে কোনো প্রত্যাশা করে লাভ নেই। আমীর খসরু বলেন, আমাদেরকে ঘুরে দাঁড়াতে হলে এই ফ্যাসিস্ট রেজিমের বিদায় ঘটাতে হবে। তারেক রহমানের ২৭ দফার ভিত্তিতে রাষ্ট্র নতুনভাবে মেরামত করতে হবে। এজন্য এই সরকারের বিদায় ছাড়া কোনো উপায় নেই।

তিনি বলেন, আজকে দেশ কোথায় গিয়ে ঠেকেছে তা সম্পর্কে দেশবাসীকে জানানো দরকার। ১৪ই আগস্ট একটি বই প্রকাশ করা হবে। যেখানে মিডিয়ার রিপোর্ট তুলে ধরা হবে। সেরকমভাবে রোহিঙ্গা শরণার্থী নিয়ে একটি বই প্রকাশ করা হবে। দেশের বিচার বিভাগ আজ কোথায় দাঁড়িয়ে আছে সেটা নিয়ে দেশে বিদেশে তুলে ধরতে হবে।

আমীর খসরু বলেন, বিচার বিভাগ হলো এখন পুলিশের এক্সটেনশন। তারা এখন সামনে চলে এসেছে। এটা খুবই গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরতে হবে। বিচার বিভাগ কিন্তু আজকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতির আওতায় চলে এসেছে। তাহলে বোঝা যায়- দেশে ন্যায়বিচার হয় না। যার প্রমাণ তারেক রহমান ও জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে সাজা। কারণ জোবাইদা রহমানকে সরকার ভয় করে। আগামী নির্বাচনে তিনি আসলে ভয়। কিন্তু এসব তো ভেসে যাবে। তাহলে জাইমা রহমানকে বাদ রাখলেন কেনো? আপনি যার সঙ্গেই নির্বাচন করবেন দাঁড়াতে পারবেন না। সুতরাং যা করছেন তার প্রতিদান পাওয়ার আগেই সরে দাঁড়ান।

মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, বর্তমান সরকার অবৈধ। তারা একটি হাইব্রিড রেজিম তৈরি করেছেন। অন্যদিকে বিচার বিভাগ এখন পুলিশের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। দেশে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা, পুলিশের লোকসহ কতো রকম মানুষ গুম হয়েছে কোনো হদিস আছে? তো দেশে যারা আইন মানার হুকুম দেয় তাদের আইন আমরা মানবো কেন?

জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যান ডা. মো. আবদুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে ও আবুল কালাম আজাদের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. বোরহানউদ্দিন খান, গাজীপুর জেলা বিএনপি’র সভাপতি ফজলুল হক মিলন, বিএনপি’র শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কামরুল আহসান, জিয়া পরিষদের মহাসচিব অধ্যাপক এমতাজ হোসেন, কেন্দ্রীয় নেতা ড. শফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক ইয়ারুল কবির, আব্দুল্লাহিল মাসুদ, প্রকৌশলী রুহুল আলম, ড. তোজাম্মেল হোসেন প্রমুখ।