কয়েক দিনের বিরতির পর ঢাকায় আবার কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামছে বিএনপি। আজ ঢাকায় দুই ভাগে গণমিছিল করবে মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি। ঢাকার ৫ প্রবেশ পথে অবস্থান কর্মসূচিতে বাধা ও হামলার প্রতিবাদে সর্বশেষ ৩১শে জুলাই ঢাকায় সমাবেশ করে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। এরপর আজ আবার মাঠের কর্মসূচিতে নামছে বিরোধী দলগুলো। আজকের গণমিছিলে ব্যাপক লোক সমাগমের প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। সমমনা দলের মিছিল কর্মসূচি পৃথক স্থানে অনুষ্ঠিত হবে বলে দলগুলোর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
বিএনপি নেতাদের দাবি, বড় শোডাউনে পরিণত হবে আজকের গণমিছিল। কর্মসূচির রোডম্যাপও জানিয়েছে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি। কর্মসূচি সফল করতে গত কয়েকদিন দফায় দফায় বৈঠক করেছেন বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। দলের ও অঙ্গ সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের বিশেষ বার্তাও দিয়েছেন দলীয় হাইকামান্ড। দলটির নেতারা বলছেন, আন্দোলন জোরদার রাখতে আজকের গণমিছিল থেকে সময়োপযোগী কর্মসূচি আসতে পারে।
গণমিছিল শুরুর আগে বক্তব্য রাখবেন দলটির শীর্ষ নেতারা। আজ জুমার পরে রাজধানীর বাড্ডা সুবাস্তু টাওয়ার থেকে আবুল হোটেল পর্যন্ত গণমিছিল করবে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি। এ ছাড়া একই সময়ে কমলাপুর স্টেডিয়াম থেকে মালিবাগ রেলগেট পর্যন্ত গণমিছিল করবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি। ঢাকা মহানগর উত্তর আয়োজিত গণমিছিলে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দক্ষিণে স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস উপস্থিত থাকবেন। এ ছাড়া দলের অন্য স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ বিএনপি’র শীর্ষ নেতারা গণমিছিলে অংশ নেবেন। ২৯শে জুলাইয়ের অবস্থান কর্মসূচির অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে আজকের গণমিছিলে নেতাকর্মীদের মধ্যে দায়িত্ব বণ্টন করে দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ঢাকা দুই মহানগর বিএনপি’র আহ্বায়ককে নেতাকর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় করে সর্বোচ্চ উপস্থিতি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। বিএনপি নেতারা জানান, একদফার আন্দোলন ঘোষণার পর চলতি মাসে এটাই প্রথম কর্মসূচি। এজন্য গণমিছিলে দলের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করার কথাও ভাবছেন নেতারা। গত ২৯শে জুলাই ঢাকায় অবস্থান কর্মসূচির পর কিছুটা ছেদ পড়ে একদফার আন্দোলনে। গত সোমবার রাতে বিএনপি’র সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামের বৈঠকে গণমিছিলের সিদ্ধান্ত হয়। সূত্র বলছে, এখন থেকে প্রতি সপ্তাহে অন্তত একটি করে বড় কর্মসূচির কথা ভাবছেন নেতারা।
সমমনা দলগুলোর কর্মসূচি: সরকার পতনের একদফা দাবিতে বিএনপি’র পাশাপাশি ঢাকায় আজ সমাবেশ, গণমিছিল ও বিক্ষোভ করবে সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো। এদিন পৃথক পৃথক জায়গায় সমমনা দলগুলো এই কর্মসূচি পালন করবে। বিকাল ৪টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে সরকার ও শাসন ব্যবস্থা পরিবর্তনের একদফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসেবে মিছিল করবে গণতন্ত্র মঞ্চ, বিকাল ৩টায় সরকারের পদত্যাগসহ নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার একদফা দাবিতে পূর্ব পান্থপথস্থ এফডিসি সংলগ্ন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে গণমিছিল করবে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)। মিছিলটি মালিবাগ মোড়ে গিয়ে শেষ হবে। গণমিছিল পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন এলডিপি’র প্রেসিডেন্ট ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম। বিকাল ৪টায় একদফা দাবিতে বিজয়নগর পানির ট্যাঙ্কির সামনে থেকে শান্তিনগর মোড় পর্যন্ত গণমিছিল করবে ১২ দলীয় জোট, বিকাল ৩টায় পল্টন আলরাজী কমপ্লেক্সের সামনে থেকে একদফা দাবিতে গণমিছিল করবে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট। এতে সভাপতিত্ব করবেন জোটের সমন্বয়ক ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ।
বিকাল ৩টায় মতিঝিলে গণমিছিল করবে গণফোরাম ও বাংলাদেশ পিপলস পার্টি, সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ ও মিছিল করবে বাংলাদেশ লেবার পার্টি। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান। সকাল ১১টায় বিজয়নগরস্থ বিজয়-৭১ চত্বরে ‘অবৈধ সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন ও রাষ্ট্র মেরামতের রূপরেখা বাস্তবায়নের দাবিতে’ আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করবে বলে জানিয়েছেন দলগুলোর নেতারা।
এ ছাড়া সন্ধ্যা ৭টায় রাজধানীর মালিবাগ মোড়ে গণমিছিল এবং বিক্ষোভ করবে এনডিএম, সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন ও একদফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করবে সমমনা পেশাজীবী গণতান্ত্রিক জোট, বিকাল ৩টায় পুরানা পল্টন কালভার্ট রোডে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে গণঅধিকার পরিষদের একাংশ (নুরুল হক নুর) গণমিছিল করবে এবং আরেক অংশ (ড. রেজা কিবরিয়া) বিকাল ৩টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে গণমিছিল বের করবে।