সিরাজুল আলম খানের প্রথম জানাজা সম্পন্ন

স্বাধিকার আন্দোলন ও স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম প্রধান সংগঠক সিরাজুল আলম খানের প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। আজ সকাল ১০টায় রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। বায়তুল মোকাররমের জানাজায় অংশ নেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সভাপতি আসম রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক সাইফুল হক, বিএনপি নেতা আবদুস সালাম প্রমুখ।

এদিকে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ থেকে তার মরদেহ নেয়ার কথা ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে বেলা সাড়ে ১১টায় বিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পারিবারিক সিদ্ধান্তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদে নেয়া হয়নি। বায়তুল মোকাররম থেকে তার মরদেহ সরাসরি নেয়া হবে গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীতে। নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আলীপুর গ্রামে তৃতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে সমাহিত করা হবে রাজনীতির এই রহস্যপুরুষকে।

উল্লেখ্য, শুক্রবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন ‘দাদাভাই খ্যাত’ সিরাজুল আলম খান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ রক্তচাপ, শ্বাসকষ্ট, ফুসফুসে সংক্রমণসহ বার্ধক্যজনিত নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। তার মৃত্যুতে প্রেসিডেন্ট মো. সাহাবুদ্দিন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিভিন্ন দল ও ব্যক্তি শোক প্রকাশ করেছেন।

পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রাষ্ট্রীয় মর্যাদা চান না তারা।
১৯৪১ সালের ৬ই জানুয়ারি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আলীপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন সিরাজুল আলম খান। ১৯৫৬ সালে ম্যাট্রিক পাস করেছিলেন তিনি। ওই বছরই ঢাকা কলেজে ভর্তি হন। পরে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে। ছাত্রজীবনে ফিদেল ক্যাস্ত্রোর মুক্তি সংগ্রাম, আলজেরিয়া, ফিলিস্তিন, ভিয়েতনামের সশস্ত্র সংগ্রাম তাকে উদ্বুদ্ধ করেছিল দারুণভাবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ নেতাদের সাহচার্যে একসময় জড়িয়ে পড়েন রাজনীতিতে। একপর্যায়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শিষ্য হিসেবে পরিচিতি পান তিনি। স্বাধীনতার আন্দোলন-সংগ্রাম পরিচালনার জন্য সিরাজুল আলম খান, আব্দুর রাজ্জাক ও কাজী আরেফ আহমেদের নেতৃত্বে ষাটের দশকের প্রথমার্ধে স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ বা স্বাধীনতার ‘নিউক্লিয়াস’- গঠিত হয়। পরে ছাত্র-তরুণদের আন্দোলন সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তারা।

তবে মুক্তিযুদ্ধের পর ছাত্রলীগে পুরনো দ্বন্দ্ব নতুন করে দেখা দেয়। এরই প্রেক্ষাপটে ১৯৭২ সালের ৩১শে অক্টোবর জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল বা জাসদ গঠন করেন সিরাজুল আলম খান। যার ধারাবাহিকতায় নানা বিয়োগান্তক ঘটনাও ঘটে