পাঁচ শতাধিক কিডনি রোগী থাকলেও নাটোরে সরকারিভাবে চিকিৎসার কোনও ব্যবস্থা নেই। এ জেলায় একটি বেসরকারি হাসপাতালের মাত্র দুটি বেডে কিডনি রোগের চিকিৎসা দেয়া হয়। এ কারণে অধিকাংশ রোগীকে চিকিৎসা নিতে অন্য জেলায় যেতে হয়। এতে রোগীদের যেমন ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে, তেমনি বাড়ছে চিকিৎসা ব্যয়ও।
রোগীদের ভোগান্তি নিরসনে এবং চিকিৎসা ব্যয় কমাতে নাটোর সদর হাসপাতালে দ্রুত কিডনি ইউনিট চালুর দাবি সংশ্লিষ্টদের।
এদিকে, সদর হাসপাতালে কিডনির চিকিৎসা শুরু করতে আরও তিন মাস সময় লাগবে বলে জানিয়েছে গণপূর্ত বিভাগ।
নাটোরে পাঁচ শতাধিক কিডনি রোগীকে প্রতি সপ্তাহে ডায়ালাইসিস করতে ছুটতে হয় ঢাকা, রাজশাহী ও বগুড়ার সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে। শহরে মাত্র একটি বেসরকারি হাসপাতালে দুই বেডের কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার রয়েছে। এখানে প্রতিবার ডায়ালাইসিস করতে খরচ হয় আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা। আর সদর হাসপাতালে এ ব্যবস্থা থাকলে খরচ পড়তো সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা।
জেলা শহরের গাড়িখানা মহল্লার বাসিন্দা ও নাটোর পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান খন্দকার জুবায়ের হোসেন বলেন, তার স্ত্রীকে ডায়ালাইসিস করতে ঢাকা কিংবা রাজশাহী ছুটতে হয়। এখানকার একতা ক্লিনিকে একটি ডায়ালাইসিস সেন্টার থাকলেও দরিদ্র মানুষের এ চিকিৎসা ব্যয় বহন করা সম্ভব না।
এ ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এস এম জাকির হোসেন বলেন, কিডনি ডায়ালাইসিস যন্ত্রাংশের দাম ও ডায়ালাইসিসের প্রক্রিয়া ব্যয়বহুল হওয়ায় রোগীদের খরচ বেশি পড়ছে। সরকারি চাকরি থেকে অবসরগ্রহণের পর মানুষকে স্বাস্থ্য সেবা দেয়ার লক্ষ্য নিয়ে ডায়ালাইসিস সেবা শুরু করেছেন তিনি। প্রতিষ্ঠানটি চালাতে যেটুকু খরচ নিতে হয়, সেটুকু খরচই তিনি নিচ্ছেন বলে জানান।
ডা. এস এম জাকির আরও বলেন, জেলায় পাঁচ শতাধিক কিডনি রোগী আছে। এদের দুর্ভোগ লাঘব ও অর্থ সাশ্রয়ে সদর হাসপাতালে নির্মাণাধীন কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার দ্রুত চালুর বিকল্প নেই।
নাটোর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিত কুমার দেব বলেন, তারা নাটোর সদর হাসপাতালে ১০ বেডের কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার নির্মাণ করছেন। ২০২৪ সালের জুন মাসে এটি হস্তান্তরের সময় নির্ধারণ থাকলেও বিষয়টি জনগুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় চলতি বছরের আগস্টের মধ্যে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন তিনি।
তিন কোটি ৪৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা ব্যয়ে নাটোর সদর হাসপাতালে ১০ বেডের কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টারটির নির্মাণকাজ চলছে।
