ইবিতে অনার্সের আগেই মাস্টার্স পাস, সনদ বাতিল

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগে ঘটেছে এক ভূতুড়ে কাণ্ড। বিভাগের এক শিক্ষার্থী অনার্স শেষ হওয়ার আগেই মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন। ইতিমধ্যে অনার্স ও মাস্টার্স পাশের সাময়িক সনদপত্রও উত্তোলন করেছেন ওই শিক্ষার্থী। তবে মাস্টার্স শেষ করার চার বছর পর তিনি অনার্স শেষ বর্ষের অকৃতকার্য কোর্সের পরীক্ষা দেয়ার জন্য আবেদন করেছেন। বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে শুরু হয় নানা গুঞ্জন। পরে সর্বশেষ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২৬তম একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় তার সনদ বাতিলের সুপারিশ করা হয়। সুপারশটি সোমবার (২৯শে মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫৮তম সিন্ডিকেট সভায় অনুমোদিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সিন্ডিকেট সদস্য বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সূত্র জানায়, সনদ বতিলকৃত ওই শিক্ষার্থীর নাম শামীরুল ইসলাম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৩-২০১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। ২০১৭ সালে ঐ শিক্ষার্থীর স্নাতক (অনার্স) শেষ বর্ষের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

পরে স্নাতক শেষ বর্ষের ৪১৫ নম্বর কোর্সে ফেল করেন ওই শিক্ষার্থী। তবুও তিনি ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে স্নাতকোত্তরে (মাস্টার্স) ভর্তি হন এবং ২০১৮ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।
এদিকে তিনি স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের সাময়িক সনদপত্রও উত্তোলন করেছেন। সনদে তাকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর উভয় পরীক্ষায় কৃতকার্য দেখানো হয় বলে জানা গেছে।

এ বছরের জানুয়ারিতে মূল কাগজপত্র উত্তোলন করতে গিয়ে তিনি জানতে পারেন অনার্সে একটি কোর্সে অকৃতকার্য হয়েছিলেন তিনি। পরে অকৃতকার্য সেই কোর্সে পরীক্ষার জন্য আবেদন করেন।
এ বিষয়ে শামীরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘মূল কাগজপত্র উত্তোলন করতে গিয়ে আমি জানতে পারি অনার্সে একটি বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছিলাম। এ বিষয়টি আমাকে আগে জানানো হয়নি। এর আগে আমি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দফতর থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের সাময়িক সনদপত্র উত্তোলন করি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে আমি সব ডকুমেন্ট উপস্থাপন করেছি।’

এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমানকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করে কর্তৃপক্ষ। কমিটির প্রতিবেদন দাখিলের পর রোববার (২৮ শে মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় ঐ শিক্ষার্থীর দুই সনদই বাতিলের সুপারিশ করা হয়। এছাড়া স্নাতকের অকৃতকার্য হওয়া কোর্সের স্পেশাল পরীক্ষা গ্রহণ করার এবং এ পরীক্ষায় কৃতকার্য হওয়া সাপেক্ষে স্নাতকোত্তরে ভর্তির সুযোগ প্রদানের সুপারিশ করা হয়। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫৮তম সিন্ডিকেট সভায় সুপারিশগুলোকে অনুমোদন করা হয়।

এ বিষয়ে প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় দুই সনদ বাতিল করে মানবিক দিক বিবেচনা করে তাকে পুনরায় পরীক্ষার গ্রহণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।