অসময়ে ভাঙন: দিশেহারা যমুনা পাড়ের বাসিন্দারা

অসময়ে সিরাজগঞ্জের দুই উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকায় দেখা দিয়েছে যমুনা নদী ভাঙন। গত কয়েকদিনে এ ভাঙনের তীব্রতায় বিলীন হয়ে গেছে প্রায় অর্ধশত বসতবাড়ি, ফসলি জমি ও গাছপালাসহ বিস্তীর্ণ এলাকা।

ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ, ভাঙনরোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের কথা থাকলেও কাজই শুরু হয়নি এখন অবধি। আর তা হচ্ছে না ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতিতে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বোঝার উপায় নেই এক সময় সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর ও এনায়েতপুর উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় ছিল পুরো গ্রামসহ অনেক কিছু। কিন্তু যমুনার করাল গ্রাসে গত কয়েক বছরের অব্যাহত ভাঙনে সেসব বিলীন হয়ে গেছে। এ বছরও যমুনা যেন গিলে খাচ্ছে এ জনপদে অনেকের বসতবাড়ি, গাছপালা ও ফসলি জমি।

জানা যায়, গত কয়েক দিন ধরে বাড়তে শুরু করেছে যমুনা নদীর পানি। এর সঙ্গে বেশ কয়েকটি এলাকায় দেখা দিয়েছে ভাঙনও। গত কয়েকদিন ধরে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর ও এনায়েতপুরের ব্রাহ্মণগ্রাম, আরকান্দি, বাঐখোলা, হাটপাচিলসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় দেখা দিয়েছে তীব্র নদী ভাঙন।

অসময়ের এ ভাঙনে দিশেহারা নদীপাড়ের বাসিন্দারা। ভাঙনে ভিটেমাটি আর বসতবাড়িসহ সহায়-সম্বল হারিয়ে এখন খোলা আকাশের নিচে ঠাঁই নিয়েছেন অসহায়রা। ভাঙন আতঙ্কে অনেকেই নদীর তীর থেকে সরিয়ে নিচ্ছে বসতঘর।

আসলাম হোসেন নামে ভাঙনকবলিত এলাকার একজন জানান, ‘গতে কয়েক দিনের ভাঙনে আমাদের এলাকার বেশ কয়েকটি বাড়ি নদীতে চলে গেছে। এখনো পানি উন্নয়ন বোর্ড কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আমরা অসহায়ের মতো নদীর পাড়ে খোলা আকাশের নিয়ে দিন কাটাচ্ছি।

আব্দুর রহমান নামে আরেকজন জানান, এখানে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের কাজ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো তা শুরু করা হয়নি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবহেলার কারণেই অসময়ে এ ভাঙন দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

তবে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মিলটন হোসেন জানান, শাহজাদপুরে ও এনায়েতপুরে যে অংশে ভাঙন দেখা দিয়েছে, সেখানে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। সেই সঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন কবলিত স্থানে বালিভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থেকে হাটপাচিল পর্যন্ত প্রায় ৬৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে সাড়ে ৬ কিলোমিটার নদীর ডান তীর রক্ষা প্রকল্প চলমান রয়েছে বলে জানায় পানি উন্নয়ন বোর্ড।