‘চাঁদে’র মাটিতে মিলল অক্সিজেন, ‘বড় অগ্রগতি’ বলছে নাসা

পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদের অনুকরণে তৈরি নকল চাঁদের মাটি থেকে সফলভাবে অক্সিজেন নিস্কাশিত হয়েছে। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা’র সাম্প্রতিক এক পরীক্ষা-নিরীক্ষায় এই সাফল্য পাওয়া গেছে। এটাকে ‘বড় অগ্রগতি’ বলে অভিহিত করেছে নাসা।

গবেষণাগারে বৈজ্ঞানিক উপায়ে তৈরি করা হয় এই নকল চাঁদ। আর তা মাটিতেই বিশেষ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বের করা হয় বেঁচে থাকার অন্যতম রসদ-অক্সিজেন। আর্টেমিস মিশনে মহাকাশচারীদের চাঁদে পাঠাচ্ছে নাসা। এর মধ্যে চাঁদের মাটি নিয়ে গবেষণার এই ফলাফল নতুন দিশা দেখাবে বলে মনে করছেন মহাকাশ বিশেষজ্ঞরা।

নাসা জানিয়েছে, পরীক্ষাগারে তৈরি ‘লুনার সয়েল’ বা চাঁদের মাটি মূলত একটি বিশেষ কায়দায় তৈরি গুঁড়ো গুঁড়ো মাটি। এই মাটিই মূলত ছড়িয়ে আছে চাঁদের পিঠে। বায়ুশূন্য পরিবেশে (ভ্যাকুয়াম এনভায়রনমেন্ট) ওই মাটি থেকে অক্সিজেন নিস্কাশন করা সম্ভব হয়েছে।

আর এই সাফল্যই নতুন করে ভাবাচ্ছে নাসাকে। এর ফলে একইভাবে মহাকাশচারীরাও চাঁদে গিয়ে অক্সিজেন তৈরি করতে পারবে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রাণের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রসদ তৈরি করা গেলেই সেখানে জীবনের খোঁজ চালানো সহজ হবে বলেই মনে করছেন নাসার মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। ইন সিটু রিসোর্স ইউটিলাইজেশন প্রক্রিয়ায় নেয়া হবে আগামী পদক্ষেপ।

দীর্ঘ সময় ধরে অক্সিজেন চাঁদের মাটির একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে রয়েছে। শ্বাস নেয়ার পাশাপাশি অক্সিজেন চন্দ্রভ্রমণসহ আরও অনেক দুরূহ সমস্যার সমাধান করতে পারবে।‌ নাসার কার্বোথার্মাল রিডাকশন ডেমনস্ট্রেশন দল জনসন স্পেস সেন্টারে এই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে।

১৫ ফিট ব্যাসের গোলাকার ডার্টি থার্মাল ভ্যাকুয়াম চেম্বারে এই পরীক্ষা হয়। এই চেম্বারকে ডার্টি বলা হচ্ছে কেন? সে কারণও জানানো হয়েছে নাসার পক্ষ থেকে। বলা হয়েছে, অশুদ্ধ নমুনা নিয়েও এই চেম্বারের ভিতরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা যেতে পারে।

এই বিষয়ে নাসার পক্ষ থেকে এক বিবৃতি জারি করা হয়েছে। তাতে বলা হয়, এই পরীক্ষার মাধ্যমে দেখা গেছে যে, চাঁদের মাটি থেকে অক্সিজেন তৈরি করা সম্ভব। পাশাপাশি নিয়মিতভাবে তৈরি অক্সিজেন সংকটজনক মুহূর্তেও মানুষকে বেঁচে থাকতে সাহায্য করবে। একই সঙ্গে সহজ হবে বহির্বিশ্বের বাইরে জগতে ভ্রমণের পন্থাও।