শুধু পাঞ্জাবেই গ্রেপ্তার ২৮০০ পিটিআই নেতাকর্মী, ধরপাকড় অব্যাহত

ইমরান খানের মুক্তির দিনেও অন্তত ৫৪০ পিটিআই নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পাঞ্জাব পুলিশ। এর ফলে শুধু এক প্রদেশ থেকেই গ্রেপ্তার হওয়া পিটিআই নেতাকর্মীর সংখ্যা দাঁড়ালো ২৮০০ জনে। লাহোরের সেনা কর্মকর্তার বাড়িতে হামলার ঘটনায় পুরো পাঞ্জাব প্রদেশজুড়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে ধরপাকড় চলছে। এছাড়া সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনায়ও গণগ্রেপ্তার অব্যাহত আছে। পুলিশ জানিয়েছে, সিসিটিভি ফুটেজ এবং মোবাইলে করা ভিডিও দেখে বেশিরভাগ গ্রেপ্তার সম্পন্ন হয়েছে।

খবরে জানানো হয়, ৯ই মে থেকে পাঞ্জাবে পিটিআই নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ২০৫টি মামলা দায়ের করা হয়। বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ এবং পিটিআই কর্মীদের মধ্যে বেশ বড় সংঘর্ষ হয়। এরপর বিভিন্ন থানায় দায়ের করা মামলায় যাদের নাম ছিল তাদের ধরতে জেলরোডে পিটিআই’র দলীয় কার্যালয়ে অভিযান চালায় পুলিশ। প্রথমে পিটিআই কর্মীরা পুলিশকে ঢিল ছুড়ে ঠেকানোর চেষ্টা করে। তবে পরে আরও পুলিশ ডাকা হলে তারা পালিয়ে যায়।
শুক্রবার সন্ধ্যায় নিজের জামান পার্কের বাড়িতে ফিরে আসেন ইমরান খান।

এসময় তাকে স্বাগত জানাতে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হন সেখানে। ফলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খানের বাসভবনের আশেপাশে পুলিশ মোতায়েন বাড়ানো হয়। তবে তার মুক্তির পরেও গ্রেপ্তার অব্যাহত রয়েছে। ফয়সালাবাদে আইনজীবী সম্প্রদায় প্রাক্তন মন্ত্রী আলী আফজাল সাহিকে গ্রেপ্তারের নিন্দা জানান। আইনজীবীরা এই গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন ও প্রতিক্রিয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
উত্তেজনা প্রশমিত করার জন্য পাঞ্জাব পুলিশ প্রধান উসমান আনোয়ার এক বিবৃতিতে বলেন, সংবেদনশীল স্থাপনা, সরকারী ও ব্যক্তিগত সম্পত্তি এবং পুলিশের ওপর হামলার সাথে জড়িত অপরাধীরা কোনও সহানুভূতির যোগ্য নয়। সিসিটিভি ফুটেজ, ভিডিও রেকর্ডিং এবং সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের মাধ্যমে এই দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। শুক্রবার গ্রেপ্তারের পর আটক নেতা ও সমর্থকদের সংখ্যা বেড়ে প্রায় ২৮০০ জন হয়েছে বলে জানিয়েছে পাঞ্জাব পুলিশ। উসমান আনোয়ার জানান, পাঞ্জাবের সহিংস বিক্ষোভকারীদের হামলায় ১৫২ জনেরও বেশি পুলিশ কর্মকর্তা ও কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। এরমধ্যে ৬৩ জন কর্মকর্তা ও কর্মী প্রাদেশিক রাজধানী লাহোরে, ২৬ জন ফয়সালাবাদে, ১৩ জন গুজরানওয়ালায়, ২৯ জন রাওয়ালপিন্ডিতে, ১৯ জন অ্যাটকে, ছয়জন মিয়ানওয়ালিতে এবং পাঁচজন শিয়ালকোটে আহত হন। এছাড়াও, পাঞ্জাব পুলিশের ব্যবহৃত ৭২টি যানবাহন এবং আটটি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।

এদিকে, জেল রোড অফিসে দলীয় নেতাদের গ্রেপ্তার এবং পুলিশের অভিযানের তীব্র নিন্দা করেছে পিটিআই। দলটি দাবি করেছে, পুলিশ জিনিসপত্র, ইলেকট্রনিক গ্যাজেট এবং পার্টির রেকর্ড পুড়িয়ে দিয়েছে। পাঞ্জাব পুলিশ ‘রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের’ সাথে জড়িত বলে দাবি করেছে ইমরান খানের দল। এমনকি পার্টি অফিস থেকে টাকা চুরির জন্যও পুলিশকে দায়ী করেছে তারা।