‘এটাই এই দেশের স্বার্থপর শিল্পী সমাজের আসল নিয়তি’

দেশের অন্যতম শীর্ষ সংগীতশিল্পী আসিফ আকবর। মাঝে-মধ্যেই তিনি বিভিন্ন অন্যায় ও অসঙ্গতি নিয়ে লিখে থাকেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এবার ধ্বংসের মুখে পতিত হওয়া গানের ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে তিনি লিখেছেন। আসিফ লেখেন, গত বাইশ বছর অডিও সার্কিটের সব ডাইমেনশনে কাজ করেছি। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ক্যাসেট সিডি’র যুগ গত হয়েছে ২০১০ সালেই। এখন ইউটিউবের যুগও ধুঁকছে, একটি গানে কোটি ভিউয়ে রিটার্ন বিশ হাজার টাকাও আসে না। মিউজিক ভিডিওতে মোটা অঙ্ক বিনিয়োগ করে ভিউয়ের ইঁদুর দৌড় আপাতত শেষ। আসিফের মতে, গানের প্রডিউসররা তাদের বিনিয়োগ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল নাটকের পেছনে, সেই খাতও মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে। নাটকের ভেতরে গান ঢুকিয়ে আপৎকালীন অক্সিজেন দিয়ে গানের ব্যবসার দিনও শেষ। সব মিলিয়ে গানের বাজারে পেশাদার অডিও প্রযোজকরা এখন সরে যেতে বাধ্য হয়েছেন, আর কখনোই ফিরে আসবেন না।

তার মতে, প্রযোজকদের দ্রুত মুনাফা অর্জন আর গানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের ভুলের কারণেই গানের বাজার মৃত। এখন অ্যামেচার শিল্পী আর মৌসুমি প্রযোজকদের জন্যই কিছু বিনিয়োগ ঢুকছে। ইউটিউব নির্ভরতার কারণে মূলত এই বিপর্যয়। বিশ্বের প্রায় দুইশ’ অ্যাপ বা পোর্টালে ডিজিটালি গান বিক্রির সুযোগ আছে, সেখানে কোম্পানিগুলো পৌঁছতে ব্যর্থ হয়েছে, নতুন বিনিয়োগের সক্ষমতাও হারিয়েছেন। যোগ করে আসিফ বলেন, আসছে রোজার ঈদের অডিও বাজার দেখলেই সবাই বুঝে যাবেন গানের বাজারের কফিনে শেষ পেরেক ঠোকার কাজ সম্পন্ন হয়ে গেছে। অতি উৎসাহী কিছু শিল্পী গীতিকার, সুরকারের মামলার কারণে টেলকোগুলোও গানের জগতে ব্যবসা বৃদ্ধির আগ্রহ দেখায়নি। এই ফাঁকে গানের বাজারের দখল নিবে বহুজাতিক কোম্পানি, তবে সেখানে লিমিটেড কিছু আর্টিস্ট ছাড়া সবার কাজের সুযোগ থাকবে না। আসিফ বলেন, দীর্ঘ গবেষণায় নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, কোনো অডিও কোম্পানি আর কখনোই মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না। এখন গীতিকার, সুরকার, শিল্পী আর প্রযোজকদের মধ্যে বানরের পিঠা ভাগের মতো যুদ্ধ চলছে, চলবে আর এটাই এই দেশের স্বার্থপর শিল্পী সমাজের আসল নিয়তি।