লিটনের রেকর্ডে অবাক হননি আশরাফুল

দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আসর। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ৭ চার ও বিশাল ৩ ছয়ের মারে ২০ বলে ফিফটি তুলে নেন মোহাম্মদ আশরাফুল। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে প্রথম দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড এটি। যদিও রেকর্ডটি একই আসরে ভারতের যুবরাজ সিং (১২ বল) ভেঙে দেন। এরপর একে একে এই ফরম্যাটে ২০ বলের নিচে ফিফটির রেকর্ড বাড়তে থাকে ক্রমান্বয়ে। এর মধ্যে কেটে গেছে ১৬ বছর। কিন্তু বাংলাদেশের কেউই আশরাফুলের সেই রেকর্ড স্পর্শ করতে পারছিলেন না। সবশেষ গেল বছর অস্ট্রেলিয়াতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে অ্যাডিলেডে লিটন তার একেবারেই কাছে চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু হয়নি, ২১ বলে ফিফটি হাঁকিয়ে একটু দূরে থেকে গিয়েছিলেন লিটন। তবে ৫ মাস পর সেই লিটনই ভেঙে দিলেন আশরাফুলের রেকর্ড।

না, এতে আশরাফুল অবাক হননি। বরং এত বছর কেন লাগলো সেটিই চিন্তার কারণ ছিল তার। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে লিটনের ১৮ বলে ফিফটির ইনিংসটি নিয়ে বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল বলেন, ‘দারুণ খেলেছে লিটন। সত্যি কথা বলতে ২০০৭ এ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম দ্রুততম ফিফটি করেছিলাম। এরপর তো যুবরাজ ১২ বলে রেকর্ড গড়ে। আরো অনেকেই তখন দ্রুততম ফিফটি করতে থাকেন। কিন্তু বাংলাদেশের জন্য অপেক্ষাটা লম্বা হলো। এর আগেও ওই (লিটন) করতে পারতো। সবেশষ ২১ বলে ফিফটি করেছে ও ভারতের সঙ্গে। তাই আমি অবাক হইনি যে রেকর্ডটি ভেঙে গেছে। সত্যি কথা বলতে রেকর্ডতো ভাঙার জন্যই কিন্তু আমাদের কারো করতে অনেক সময় লাগলো।’ গত বছর নভেম্বরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে ব্যাট হাতে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেন লিটন দাস। ৬টি চার ও ৩টি ছয়ের মারে ২১ বলে ফিফটি করেন। এরপর ২৭ বলে ৬০ রান করে রান আউট হন তিনি। মাত্র এক বল কম খেললেই তিনি ছুঁয়ে ফেলতে পারতেন আশরফুলের সেই রেকর্ড। বিশ্বকাপের পর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লিটন প্রথম দুই ম্যাচে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। কিন্তু সিরিজের শেষ ম্যাচে খেলেন ৭৩ রানের ইনিংস। সেই ম্যাচে করেছিলেন ৪১ বলে ফিফটি। এরপর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ২৩ বলে ৪৭ রান করে আউট হন এই ওপেনার। ৩ রানের জন্য ফিফটি না পাওয়ার ক্ষুধা পরের ম্যাচে আরো বেড়ে যায় তার। ১৮ বলে ফিফটির পর শেষ পর্যন্ত ৪১ বলে খেলেন ৮৩ রানের ইনিংস। হাঁকান ১০ চার ও ৩টি ছয়ের মার। তার ব্যাটে ভর করে ১৭ ওভারে ২০২ রান করতে সক্ষম হয় টাইগাররা। রেকর্ড ভাঙা ইনিংস দেখে কতটা উচ্ছ্বসিত ছিলেন আশরাফুল! এ বিষয়ে আশরাফুল বলেন, ‘অবশ্যই দারুণ লেগেছে। লিটন যখন খেলে তখন ছবির মতো লাগে তার ব্যাটিং। ও কিন্তু আরো আগেই ভাঙতে পারতো। আমার ভালো লেগেছে। বিশেষ করে যখন প্রিয় কোনো ব্যাটসম্যান এমনটা করে তখন আরো বেশি ভালো লাগে।’ ৮ বছর পর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জাতীয় দলে ফেরানো হয় রনি তালুকদারকে। তবে সেই সিরিজে তিনি নিজের যোগ্যতা ও প্রতিভা অনুসারে ব্যাট করতে পারেননি। কিন্তু ধিরে ধিরে যেন খোলস ছেড়ে বের হচ্ছেন। আইরিশদের বিপক্ষে ক্যাারিয়ারের প্রথম ফিফটি তুলে নেন। খেলন ৩৮ বলে ৬৭ রানের ইনিংস। লিটনের সঙ্গে ৯১ রান করে দেশের ওপেনিংয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জুটির রেকর্ড উপহার দেন। পরের ম্যাচে ২৩ বলে ৪৬ রান করে আউট হন রনি। তবে তার আগে লিটনের সঙ্গে ওপেনিংয়ে সর্বোচ্চ ১২৪ রানের জুটি গড়েন তারা। দারুণ জমে উঠেছে দু’জনের জুটি। তবে এই জুটি নিয়ে আশরাফুল স্বস্তি প্রকাশ করলেও আরো একটু অপেক্ষা করতে চান। তিনি বলেন, ‘লিটন ও রনি দারুণ খেলছে। তবে আমাদেরতো মাঝে মাঝে ভালো সময় কাটে। এখনই আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না। আমি চাই ওরা ধারাবাহিকতা ধরে রাখুক। ওদের যে স্বাধীনতা দিয়ে খেলতে দেয়া হয়েছে সেটি ধরে রাখতে হবে।’