বৃষ্টির পর লিটন ঝড়

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচ মাঠে গড়ানো নিয়েই ছিল শঙ্কা! ম্যাচ শুরুর আগে দুই দফায় বৃষ্টির বাধা। শেষ পর্যন্ত ম্যাচ নির্ধারণ হয় ১৭ ওভারের। আর বৃষ্টি থামার পর সাগরিকা স্টেমিয়ামে ওঠে লিটন কুমার দাসের ব্যাটিং ঝড়। টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে আইরিশ অধিনায়কের সিদ্ধান্তকে ভুল প্রমাণ করে পাওয়ার প্লে’র পাঁচ ওভারে ৭৩ রান তোলে বাংলাদেশ। এরপরই ১৮ বলে ফিফটি তুলে নেন লিটন। শুধু টি- টোয়েন্টি নয়, দেশের হয়ে যে কোনো ফরম্যাটে এটি দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরির রেকর্ড। এর আগে রেকর্ডটি ছিল মোহাম্মদ আশরাফুলের। ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২০ বলে ফিফটি করেছিলেন সাবেক এই ব্যাটার। গতকাল আরেক ওপেনার রনি তালুকদারও কম যাননি। দুজনের ওপেনিং জুটিতে আসে ১২৪ রান।

টি-টোয়েন্টিতে ওপেনিং জুটিতে এটাই বাংলাদেশ দলের সর্বোচ্চ সংগ্রহ। ২০২১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারারে স্টেডিয়ামে মোহাম্মদ নাঈম শেখ ও সৌম্য সরকার ১০২ রানের জুটি গড়েন। এতদিন সেটাই ছিল টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের ওপেনিং জুটিতে সর্বোচ্চ। শুধু তাই নয়, ২০ ওভারের ক্রিকেটে এটি যে কোনো উইকেটে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের জুটি। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও তামিম ইকবাল মিলে ১৩২ রানের সর্বোচ্চ জুটি করেছিলেন দ্বিতীয় উইকেটে ২০১২তে। গতকাল রনি অর্ধশতক মিস করেন। আর লিটন মিস করেন শতক। দারুণ খেলতে থাকা লিটন ব্যক্তিগত ৮৩ রানে বাজে শটে আউট হন। অফ স্টাম্পের বাইরের ওয়াইড বল তাড়া করে ব্যাটের খোঁচায় উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন লিটন। দেশের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এটি চতুর্থ সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত। ১৭ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ পৌঁছে ২০২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ব্যাট হাতে তাণ্ডব চালানো বাংলাদেশের ব্যাটাররা সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচেও সেই ধারা অব্যাহত রাখেন। আগের ম্যাচে পাওয়ার প্লেতে দেশের সর্বোচ্চ ৮১ রান করেছিলেন লিটন ও রনি। গতকাল ৫ ওভারে করলেন চতুর্থ সর্বোচ্চ ৭৩ রান। ৪১ বলে ৮৩ রানের ইনিংসে লিটন হাঁকান ১০ চার ও ৩টি ছক্কা। অষ্টম ওভারের প্রথম বলে বাংলাদেশের রান ১০০ স্পর্শ করে। দশম ওভারের দ্বিতীয় বলে ভাঙে বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি। আয়ারল্যান্ডের লেগ স্পিনার বেন হোয়াইটের বলে লং-অনে মার্ক অ্যাডায়ারকে ক্যাচ দেন রনি। ৩টি চার ও দুই ছক্কায় ২৩ বলে ৪৪ রান করেন রনি। সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৪৩ বলে ৯১ রানের সূচনা করেছিলেন লিটন-রনি। ১২তম ওভারের শেষ বলে থামেন লিটন। হোয়াইটের বলে উইকেটরক্ষক লরকান টাকারকে ক্যাচ দেন লিটন। টি-টোয়েন্টিতে এটিই তার সেরা ইনিংস। দলীয় ১৩৮ রানে লিটন ফেরার পর বাংলাদেশের রানের চাকা দ্রুত ঘুরিয়েছেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও তাওহিদ হৃদয়। তৃতীয় উইকেটে ২৯ বলে ৬১ রান তুলে বাংলাদেশকে বড় সংগ্রহ এনে দেন তারা। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে আগের ম্যাচেই ১৯ দশমিক ২ ওভারে ৫ উইকেটে ২০৭ রান করেছিল বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস তামিম ইকবালের। ওমানের বিপক্ষে ২০১৬তে ১০৩ রানের অপরপজিত ইনিংস খেলেছিলেন টাইগার ওপেনার। এই ফরম্যাটে এটি বাংলাদেশি কোনো ব্যাটারের একমাত্র সেঞ্চুরি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮৮* রানের ইনিংসটিও তামিমের। ৮৪ রানের তৃতীয় সর্বোচ্চ ইনিংসটি এসেছে সাকিব আল হাসানের ব্যাট থেকে। এরপর আরেকটি ৮৩ রানের ইনিংসের মালিক তামিম। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ১২টি অর্ধশতক রয়েছে সাকিব আল হাসানের। তালিকায় তার পরেই রয়েছেন ১০ ফিফটির মালিক লিটন।