যুক্তরাষ্ট্রে শুল্কমুক্ত পোশাক রপ্তানি চেয়ে পিটার হাসকে বিজিএমইএ’র চিঠি

যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা তুলা দিয়ে উৎপাদিত তৈরি পোশাক আবারও দেশটিতে রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত চেয়ে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসকে চিঠি দিয়েছেন বিজিএমইএ। তৈরি পোশাক খাতের রপ্তানিকারকদের সংগঠনটির সভাপতি ফারুক হাসান এ চিঠি দেন। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট ও সিনেটর টেড ক্রজকে একই চিঠি দিয়েছেন ফারুক হাসান। তিনটি চিঠির কথাগুলো প্রায় হুবহু। এতে উভয় দেশের যেসব লাভ হবে সেসব যুক্তি তুলে ধরা হয়। মঙ্গলবার চিঠির বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে বিজিএমইএ।

একক দেশ হিসেবে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের প্রধান গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে পোশাক তৈরির প্রধান কাঁচামাল তুলার বড় অংশই বাংলাদেশ আমদানি করে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। আর ২০২২ সালে দেশটিতে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি করা পোশাকের মধ্যে ৭১ শতাংশ কটন বা তুলা থেকে তৈরি। এ কারণে রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়া হলে উভয় দেশেরই লাভবান হওয়ার সুযোগ রয়েছে বলে চিঠিতে তুলে ধরা হয়।

বিজিএমইএ চিঠিতে পোশাক রপ্তানি ও তুলা আমদানির সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান তুলে ধরে লিখেছে, ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ৯.৭৪ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করা হয়। এর ৭১% বা ৬.৯১ বিলিয়ন ডলারের পোশাক কটন বা তুলা দিয়ে তৈরি।

অপরদিকে বাংলাদেশের আমদানি করা তুলার বড় অংশ আসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে।

বাংলাদেশের বন্দরে তুলা আমদানি করার পর জীবাণুমুক্ত করার প্রক্রিয়া ফিউমিগেশন সহজ করা নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে আলোচনা চলছি। গত ১৯শে ফেব্রুয়ারি এ প্রক্রিয়ার শর্ত কিছুটা শিথিল করার বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত গেজেট আকারে প্রকাশও করা হয়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করেন ফারুক হাসান।
এটি যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা আমদানি সহজ করবে ও খরচ কমাবে উল্লেখ করে চিঠিতে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়ার আহ্বান জানানো হয়।

এতে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি বাড়বে যুক্তরাষ্ট্রে, যা প্রকারান্তরে দেশটির তুলা রপ্তানি বাড়াবে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

ফারুক হাসান চিঠিতে লেখেন, ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বাজারে বাংলাদেশি পোশাক প্রবেশের জন্য দেশটির আমদানিকারকরা ১৫৫ কোটি ডলারের শুল্ক দিয়েছেন। দেশটিতে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া পণ্যের মধ্যে তৈরি পোশাকের শুল্ক অনেক বেশি।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা তুলা দিয়ে উৎপাদিত তৈরি পোশাক রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা চেয়ে বিজিএমইএ’র সভাপতি চিঠিতে লিখেছেন, তৈরি পোশাকের বৈশ্বিক বাজারে শীর্ষ রপ্তানিকারক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশের। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের তুলার উৎপাদক ও রপ্তানিকারকদেরও বাংলাদেশে ব্যবসা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের তুলা দিয়ে তৈরি পোশাকে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়া হলে দেশটির (যুক্তরাষ্ট্র) তুলার উৎপাদক ও রপ্তানিকারকেরা ব্যবসায়িকভাবে লাভবান হবেন। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তারা বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ কম দামে তৈরি পোশাক কিনতে পারবে।