সৌদিতে সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত সবুজের গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম

সৌদিতে ওমরা হজে যাওয়ার সময় সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত সবুজের গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার চরমোহনার দক্ষিণ রায়পুর এলাকায় চলছে শোকের মাতম। উপার্জনক্ষম ছেলেকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ বাবা-মাসহ পরিবারের লোকজন। স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠছে পুরো এলাকা।

সৌদিতে ওমরা হজে যাওয়ার আগে বাসে উঠে বাবা-মাসহ পরিবারের লোকজনের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলে দোয়া চেয়েছেন সবুজ হোসাইন। এটাই তার শেষ কথা ছিল বলে জানান নিহত সবুজের বাবা হারুনুর রশিদ। যত দ্রুত সময়ের মধ্যে সবুজের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের কাছে দাবি জানান তারা। পাশাপাশি ক্ষতিপূরণও চান সবুজের পরিবার। নিহত সবুজ হোসাইনের বাবা হারুনুর রশিদ পেশায় মাছ ব্যবসায়ী। চার ভাইবোনের মধ্যে সবুজ দ্বিতীয় হলেও সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিই ছিলেন তিনি।

পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়, সবুজ হোসাইনের বাবা হারুনুর রশিদ মাছ বিক্রি করে সংসার চালাতেন। আর্থিকভাবে তেমন একটা স্বচ্ছল নয়। ধার-দেনা করে প্রায় ৩ বছর আগে বড় ছেলে সবুজকে চাকরির উদ্দেশ্যে সৌদি আরব পাঠানো হয়।

তার পাঠানো টাকাতেই পরিবার স্বচ্ছলতার মুখ দেখেছে। খুব শিগগিরই সবুজ দেশে ফেরার কথা ছিল। এর আগে সে ওমরাহ করবে বলেছিল। কিন্তু ওমরাহ করতে যাওয়ার পথে সোমবার (২৭ মার্চ) বাস দুর্ঘটনায় সবুজ হোসাইনসহ কমপক্ষে ৮ বাংলাদেশি নিহত ও কয়েকজন নিখোঁজ হয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পরিবারের কাছে খবর আসে সবুজ সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত হয়েছে। এ খবর শোনার পর পরিবারের সবাই বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক ও দু:খজনক বলে দাবি করেন স্থানীয় এলাকাবাসী। তারা বলেন, সবুজ হোসাইন এলাকায় ছিল নম্্রভদ্র ভালো স্বভাবের একজন মানুষ। তার এই মৃত্যু কোনভাবে মেনে নেয়ার মতো নয়। তাড়াতাড়ি তার লাশ স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে দিতে সরকারের কাছে দাবি করেন নিহতের চাচা বাচ্চু মিয়া ও তারেক হোসেনসহ অনেকেই।

জেলা প্রশাসক মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দ বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক। ক্ষতিপূরণ ও লাশ দেশে ফিরিয়ে আনতে পরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ করা হচ্ছে। নিহত সবুজের পরিবারের পাশে জেলা প্রশাসন রয়েছে।