বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের ‘ছায়া নিষেধাজ্ঞা’ দিতে যাচ্ছে ভারতীয় বোর্ড

আইপিএলে খেলা নিয়ে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের বিষয়ে কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। দেশটির কলকাতাভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হয়। যেখানে বলা হয়, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের নেয়া সিদ্ধান্ত ‘দেশের আগে আইপিএল নয়’- এর পাল্টা ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। ‘ছায়া নির্বাসন’ পেতে যাচ্ছেন সাকিবরা। আগামী ৩১শে মার্চ শুরু হবে আইপিএলের নতুন মৌসুম। আসন্ন আসরে বাংলাদেশ থেকে ৩ ক্রিকেটারের অংশ নেয়ার কথা রয়েছে। কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে খেলবেন সাকিব আল হাসান ও লিটন কুমার দাস। দিল্লি ক্যাপিটালসে থাকছেন মোস্তাফিজুর রহমান । তবে আন্তর্জাতিক সূচি থাকায় এই তিন ক্রিকেটারকে পুরো মৌসুম পাচ্ছে না ফ্র্যাঞ্চাইজিরা। ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর, ভবিষ্যতে আইপিএল নিলামে ছায়া নিষেধাজ্ঞা পেতে যাচ্ছেন বাংলাদেশি খেলোয়াড়রা।

কী এই ছায়া নির্বাসন?
জানা গিয়েছে, কোনও বোর্ড যদি আইপিএল খেলার জন্যে নিজেদের ক্রিকেটারদের না ছাড়ে বা দেরি করে ছাড়ে, তা হলে ভবিষ্যতে সেই দেশের ক্রিকেটারদের হয়তো আইপিএলে খেলতে দেখা যাবে না।

অর্থাৎ, বাংলাদেশ বোর্ড এ ভাবে অসহযোগিতা করলে ভবিষ্যতে সাকিবরা আইপিএলে হয়তো কোনও দলই পাবেন না। সেই দেশের ক্রিকেটারদের অগ্রাহ্য করা হবে নিলামের সময়।
আইপিএলের এক ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিক এক ওয়েবসাইটে বলেছেন, “আমাদের অভিযোগ করার কোনও জায়গা নেই। কারণ ক্রিকেটারদের ব্যাপারে বিসিসিআই বাকি বোর্ডগুলির সঙ্গে সমঝোতা করে। কিন্তু পরের দিকে নির্দিষ্ট কিছু দেশের ক্রিকেটার নেওয়ার ব্যাপারে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলি সতর্ক হয়ে যাবে। এর আগে তাসকিন আহমেদও এনওসি (নো অবজেকশন সার্টিফিকেট) পায়নি। এখন শাকিবদের ক্ষেত্রেও একই জিনিস। যদি ওরা ক্রিকেটারদের আইপিএলে খেলতে দিতেই না চায়, তা হলে নথিভুক্ত করারই দরকার নেই। তবে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের নিয়ে ধারণা যে বদলাবে এ ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত।”

শুক্রবার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান বলেন, ‘‘আইপিএলের জন্য ক্রিকেটারদের কবে ছাড়া হবে, এই প্রশ্ন আমাকে বার বার করা হচ্ছে। আমার উত্তর একটাই। আইপিএলের নিলামের আগে সংশ্লিষ্ট কর্তারা আমার কাছে জানতে চেয়েছিলেন, কবে থেকে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের পাওয়া যাবে। আমি বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সূচি পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। তার ভিত্তিতেই নিলামে আমাদের ক্রিকেটারদের নাম রাখা হয়েছিল। এখন অন্য কিছু হওয়ার সুযোগ নেই।’’ বিসিবি সভাপতি আরও বলেছেন, ‘‘বাংলাদেশের খেলা চলাকালীন শাকিব, লিটন, মোস্তাফিজুরদের জন্য কিছু করা কঠিন। আমার কাছে কোনও বিকল্প উপায় নেই। অনুমতিপত্র দেওয়া হবে, এমন কিছু কখনও বলা হয়নি। এর পরেও এত সংশয়ের কী রয়েছে? বিষয়টা কি পরিষ্কার হচ্ছে না!’’

বিসিবি বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড সিরিজ শেষ না করে ক্রিকেটারদের আইপিএলে যাওয়ার অনুমতি দিতে চাইছে না। এমনকি আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে অ্যাওয়ে সিরিজের আগে আবার আইপিএল ছেড়ে দেশের হয়ে খেলতে বলা হয়েছে তাদের।
শুধু বাংলাদেশকে নিয়েই যে বিসিসিআই এমন কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে তা নয়! এই তালিকায় আছে শ্রীলঙ্কার নামও। আসন্ন মৌসুমে দেশটির ৪জন ক্রিকেটার অংশ নেবেন। তবে আন্তর্জাতিক সূচির কারণে তাদেরকেও শুরু থেকে পাওয়া নিয়ে রয়েছে জটিলতা।
এ প্রসঙ্গে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমটিকে বিসিসিআইয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘এটা পুরোপুরি খেলোয়াড়দের দায়িত্ব। তারা কীভাবে তাদের বোর্ডকে রাজি করাবেন। ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ড বা অন্য দেশের খেলোয়াড়রা এই পথটি খুঁজে বের করেছে, তাদের বোর্ড বাধা দিচ্ছে না। আইপিএলের মান নিয়ে তো কোনো সন্দেহ নেই। এ ছাড়া তাদের বোর্ডও এর লভ্যাংশ পেয়ে থাকে। এখন সিদ্ধান্ত পুরোপুরি খেলোয়াড়দের।’