বিশ্বকাপে সাফল্য পেতে ‘আক্রমণাত্মক’ খেলার টোটকা লিটনের

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে নিজেদের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের নজির গড়ে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে আগের টোটালকে ছাপিয়ে নতুন রেকর্ড গড়ে টাইগাররা। দুই ইনিংসেই আক্রমণাত্মকভাবে খেলেছে বাংলাদেশের ব্যাটাররা। আর এভাবেই বিশ্বকাপে সাফল্য পাওয়া সম্ভব বলে জানালেন টাইগার ওপেনার লিটন কুমার দাস। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ৮ উইকেটে ৩৩৮ রান তোলে বাংলাদেশ। এরপর বোলিংয়ে ছন্দ দেখিয়ে ১৮৩ রানের জয় তুলে নেয় টাইগাররা। দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩৪৯। বৃষ্টির কারণে ম্যাচ পরিত্যক্ত না হলে হয়তো ফের বড় জয়ই পেতো সাকিব-লিটনরা। দ্বিতীয় ম্যাচ পণ্ড হওয়ার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে লিটন বলেন, ‘যখন নিয়মিত ৩০০ থেকে ৩৫০ রান তুলছেন, বোঝা যাচ্ছে আপনি ভালো ক্রিকেট খেলছেন। আমরা আক্রমণাত্মক খেলতে চাই।

আর আমাদের ব্যাটাররা যদি বড় ইভেন্টে (বিশ্বকাপে) স্কোর করতে চায়, এভাবেই করতে হবে। আক্রমণাত্মক খেলে ৩০০ রান তুলতে না পারলেও ন্যূনতম ২৮০ এর বেশি রান হতে পারে। সবসময়ই ভালো উইকেটে খেলে ইতিবাচক ফল আশা করি আমরা।’ লিটনের ভাষ্য, ওয়ানডেতে বড় দলগুলো শেষ ১০ ওভারে ১০০ রানের মতো তুলতে চেষ্টা করে। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচেই সেই কৃতিত্ব দেখিয়েছে বাংলাদেশ। লিটন বলেন, ‘বড় দলগুলো শেষ ওভারে ১০০ রান তুলতে চায়। এটা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ ছিল। টি-টোয়েন্টিতে কীভাবে শেষ দশ ওভারে ১০০ রান তোলা যায়, তা নিয়েও ভাবছি আমরা। তাই এটি একটি ভাল লক্ষ্মণ যে আমরা এটি করতে শুরু করেছি।’ আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে শেষ ১০ ওভারে ৯৬ রান তোলে টাইগাররা। দ্বিতীয় ম্যাচের শেষ দশ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১০৮ রান। বাংলাদেশ সাধারণত নিচু এবং স্লো উইকেট তৈরি করে থাকে। তাই এই আবহে ২৭০ রানই বড় দলীয় সংগ্রহ হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে বিশ্বকাপকে সামনে রেখে টাইগারদের হাই স্কোরিং ম্যাচ খেলানোর অভ্যাস করানোর চিন্তা মাথায় রেখে ভিন্ন আদলে তৈরি করা হয়েছে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। সেখানে ব্যাটারদের সঙ্গে বোলাররাও সুবিধা পাচ্ছেন, বিশেষত পেসাররা। তাই ম্যাচের শুরুতে ফাস্ট বোলারদের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে ব্যাটারদের। লিটন বলেন, ‘(পেসবান্ধব উইকেট) এটা আমাদের সাহায্য করবে। কারণ বিশ্বকাপে আপনাকে দুর্দান্ত বোলারদের মোকাবিলা করতে হবে। সেখানেও (ভারতে) এমন মুভমেন্ট থাকবে এবং বোলাররাও একই সুবিধা পাবে।’ প্রথম ওয়ানডেতে টপ অর্ডারের প্রথম তিন ব্যাটারের কেউই ত্রিশোর্ধ্ব ইনিংস খেলতে পারেননি। চতুর্থ উইকেটে ১৩৫ রানের জুটি গড়েন সাকিব আল হাসান ও তাওহীদ হৃদয়। এর মধ্যে সাকিব ৯৩ এবং হৃদয় ৯২ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন। মুশফিকের সংগ্রহ ছিল ৪৪ রান। দ্বিতীয় ম্যাচে তামিম ইকবাল ২৩ রানে ফেরার পর ১০১ রানের পার্টনারশিপ গড়েন লিটন দাস এবং নাজমুল হোসেন শান্ত। তাওহীদ আউট হন ৪৯ রানে। শেষে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে অপরাজিত থাকেন মুশফিকুর রহীম। লিটনের মতে, দুই ইনিংসেই টাইগাররা দলের জন্য ব্যাটিং করেছে। তিনি বলেন, ‘ (দ্বিতীয় ম্যাচে) টপ অর্ডারের চার জন ইনিংস শেষ করে আসতে চেয়েছি। দলের কারোরই সেঞ্চুরি টার্গেট হওয়া উচিত নয়। শান্ত এবং আমি যদি ৪৫ ওভার ব্যাট করতাম, তাহলে আমরা ১৫০-১৮০ রান করতে পারতাম। আমরা বেশ ভালো ব্যাটিং করছিলাম। মুশফিক ভাই আমাদের চেয়েও ভালো খেলেছেন।’ লিটন বলেন, ‘১০ থেকে ৪০ ওভারের মধ্যে সবাই মারমুখী খেলার চেষ্টা করেছে। তারা শুধু বড় ছক্কাতেই নজর দিচ্ছে না, একই সঙ্গে সিঙ্গেল এবং চার হাঁকানোর চেষ্টা করছে। দুই ম্যাচেই ব্যাটিংয়ে সফলভাবে পরিকল্পনা কাজে লাগিয়েছি আমরা। আজ প্রথম দশ ওভারে কোনো উইকেট দিইনি আমরা। যদিও তারা খুব ভালো বল করছিল। দশম ওভারের শেষে আমরা একটা উইকেট হারাই।’