‘স্পেস জুম’ ফিচার নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাল স্যামসাং

সম্প্রতি স্যামসাং গ্যালাক্সি সিরিজের স্মার্টফোনগুলোতে ‘স্পেস জুম’ নামে একটি ফিচার নিয়ে আসা হয়েছে। কিন্তু ওই ফিচারে ব্যবহার কযে যে ছবি তোলা হয়, সেগুলো আসলে ভুয়া বলে দাবি করেছেন রেডিট ব্যবহারকারী। যা নিয়ে রীতিমত তোলপাড় শুরু হয়েছে। তবে সে পোষ্টের প্রতিক্রিয়াও জানিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিষ্ঠানটি।

সম্প্রতি ওই পোস্টের বিপরীতে একটি বিবৃতি দিয়েছে স্যামসাং। গত বছরও কোরিয়ান ভাষায় একই বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। তারই কিছুটা পরিবর্তন করে এবার ইংরেজিতে বিবৃতিটি প্রকাশ করা হয়েছে।

রেডিট ব্যবহারকারী তার পোস্টে দাবি করেছেন, স্যামসাংয়ের ‘স্পেস জুম’ ব্যবহার কযে যে ছবি তোলা হয়, সেগুলো আসলে ভুয়া। তার দাবি, এই ফিচারে একাধিক ডিটেলিংয়ের কথা বলা হয়েছে, কিন্তু সেগুলির কোনোটিই নেই এখানে। তারা মাল্টি-ফ্রেম এবং মাল্টি-এক্সপোজার উল্লেখ করেছে, কিন্তু বাস্তবে এআই বেশিরভাগ কাজ করে, অপটিক্স নয়।

ওই ব্যবহারকারী আরও জানান, স্যামসাং দাবি করেছে যে, একটি ছবি তোলার সময় কোনো ইমেজ ওভারলেয়িং বা টেক্সচার এফেক্ট যুক্ত করা হয় না। কারণ, এটি বস্তুর অনুরূপ টেক্সচার প্যাটার্নের কারণ হতে পারে, যা সিন অপটিমাইজার দ্বারা অবজেক্ট শনাক্ত করে বিভ্রান্ত করতে পারে। যদিও প্রযুক্তিগতভাবে, প্রক্রিয়া চলাকালীন কোনো টেক্সচার প্রয়োগ করা হচ্ছে না, যা বাস্তবিক দিক থেকে ব্যবহৃত সব প্রযুক্তিগত ভাষা থেকে ভিন্ন। মূলত, এই প্রক্রিয়ায় একটি এআই মডেল দ্বারা চাদের টেক্সচার যুক্ত করা হয়েছে।

নিজের দাবি প্রমাণ করার জন্য ওই ব্যবহারকারী তার মোবাইলে চাঁদের একটি উচ্চ রেজ্যুলেশনের ছবি ডাউনলোড করে সেটির রেজ্যুলেশন অনেকটা কমিয়ে ফেলেন। তারপর সেই ছবিটি ব্লার করে ফুল স্ক্রিন করে রুমের লাইট বন্ধ করেন। এরপর স্যামসাংয়ের একটি মোবাইল দিয়ে দূর থেকে চাঁদের একটি ছবি তুলেন। ডাউনলোড করা ছবির সঙ্গে স্যামসাং ফোনে তোলার ছবির সঙ্গে তুলনা করে দেখেন স্যামসাংয়ের ক্যামেরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ছবিটিকে আরও আকর্ষনীয় করার জন্য বাড়তি উপাদান যোগ করেছে, বাস্তবে যা ব্লার করা ছবিটিতে ছিল না। এতে প্রমাণিত হয় স্যামসাংয়ের ক্যামেরা যদি বুঝতে পারে চাঁদের ছবি তোলা হচ্ছে, তাহলে কৃত্রিমভাবে সেই ছবিকে একই রকম অন্য আরেকটি স্পষ্ট ও সুন্দর ছবি দিয়ে প্রতিস্থাপন করে।

এ বিষয়টির ব্যাখায় স্যামসাং বলছে, চাঁদের উন্নত ছবি তোলার জন্য স্যামসাংয়ের ফোন কয়েক ধাপের ‘সিন অপটিমাইজার’ পদ্ধতি ব্যবহার করে, যার মধ্যে ‘সুপার রেজুলেশন’ ফিচারও আছে। এ ফিচার ছবির নয়েজ কমিয়ে স্পষ্টতা বাড়াতে ভূমিকা রাখে। সেই সঙ্গে ফিচারটি ডিজিটাল এবং অপটিক্যাল ইমেজ স্ট্যাবিলাইজেশনের সাহায্যে ছবির ঝাপসা অবস্থা কমিয়ে ফেলে।

স্যামসাং বলছে, তাদের ক্যামেরা যখন বুঝতে পারে চাঁদের ছবি তোলা হচ্ছে, তখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে ছবির ডিটেইলস পরিবর্তন করা হয়। গ্যালাক্সি ফোনের ক্যামেরা ‘এআই ডিটেইল এনহান্সমেন্ট ইঞ্জিনের’ সাহায্যে ছবির নয়েজ কমিয়ে স্পষ্টতা আরও বাড়ায়।

মূলত, চাঁদের মতো অত দূরের কোনো বস্তুর দিকে যখন ক্যামেরা ধরা হয়, তখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যেই ক্যামেরা বুঝতে পারে যে এটি আসলে চাঁদ। এরপর ক্যামেরাটি তার প্রশিক্ষণ অনুসারে ছবিকে আরও স্পষ্ট ও বাস্তবধর্মী করার জন্য যা যা করার দরকার, তা করে।

তবে আসলেই চাঁদের ছবি তোলা হচ্ছে, নাকি চাঁদ কীরকম হতে পারে, সেই ধারণা থেকে ক্যামেরা চাঁদের ছবি তুলছে সেটি স্যামসাংয়ের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে বলা হয়নি।