যেভাবে ফিরে এলো ভারতে পাচার হওয়া দুই কিশোরী

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থেকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ভারতে পাচার করে দেয়া দুই কিশোরী শ্যামলী রানী (১৭) ও শিলা রানী (১৭)কে শনিবার গভীর রাতে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার গোপালপুর বর্ডার এলাকা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রূপগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) আতাউর রহমান জানান, চলতি বছরের পহেলা জানুয়ারি উপজেলার ভুলতা এলাকা থেকে শ্যামলী রানী ও তার বান্ধবী শিলা রানীকে উচ্চ বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে একটি চক্র ভারতে পাচার করে দেয়।

তাদের খুঁজে না পেয়ে এ ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন তাদের পরিবার। পরে গত ২৪শে জানুয়ারি ভারতীয় একটি মোবাইল নম্বর থেকে নিখোঁজ শ্যামলী তার মাকে ফোনে জানায়, অধিক বেতনের লোভ দেখিয়ে সোনারগাঁও এলাকার হাশেম আলীর ছেলে নবী হোসেন মোল্লা ও আইজা মিয়ার ছেলে জাকির হোসেন তাদের ভারতে পাচার করে দিয়েছেন। এ ঘটনায় ২৫শে জানুয়ারি শ্যামলীর মা মুক্তা রানী রায় বাদী হয়েছে রূপগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করলে গত ১৩ই মার্চ সকালে সোনারগাঁও থেকে প্রধান আসামি নবী হোসেন মোল্লাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তার দেয়া তথ্যমতে গত শনিবার গভীর রাতে পুলিশ ঝিনাইদহের মহেশপুর থানাধীন গোপালপুল বর্ডার এলাকা থেকে তাদের উদ্ধার করে।

উদ্ধার হওয়া কিশোরীদের বরাত দিয়ে ওসি আরও জানান, তাদের প্রথমে সিদ্ধিরগঞ্জের একটি আবাসিক হোটেলে রাখে চক্রটি। পরের দিন সকালে নবী ও রশিদ তাদের ঢাকায় শাকিল নামে একজনের কাছে রেখে আসে। সেখান থেকে গত ৩রা জানুয়ারি শাকিল ও তার এক বন্ধু তাদের যশোর নিয়ে যায়। সেখানে শাকিল তাদের বিনাইদহের মহেশপুর থানাধীন গোপালপুর বর্ডারের কাছে এক দালালের বাড়িতে নিয়ে যায়। ওইদিন রাতেই দালাল তাদের ভারতের বর্ডার পার করে ভারতের অপর দালালের নিকট তুলে দেয়। তখন কিশোরীরা জানতে পারে তাদেরকে ৬ লাখ টাকার বিনিময়ে মুম্বাইয়ে পতিতালয়ে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। এই কথা জানার পর ওই দুই তরুণী কৌশলে সেখান থেকে পালিয়ে বর্ডারের নিকট ভারতের পরিতোষ নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে আশ্রয় নেয়।

সেখান থেকে বিভিন্ন কৌশলে বর্ডার পার হয়ে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার গোপালপুর বর্ডারে আসে। সেখান থেকে পুলিশ তাদের দুজনকে উদ্ধার করেন। পরে উদ্ধার হওয়া দুই কিশোরীকে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তরের জন্য আদালতে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠানো হয়।