“একাত্তরের জলপুত্র মু্িক্তযোদ্ধা সুনীল কান্তি জলদাস”

বাসন্তী হাওয়ায় নতুন বইয়ের ঘ্রাণ

রশীদ এনাম

জলপুত্র নিয়ে আগে দেশবরেণ্য লেখকরা বেশ কয়েকটি গল্প লিখেছেন। বিশেষ করে মানিক বন্ধোপাধ্যায়ের ‘পদ্মানদীর মাঝি’, হরিশংকর জলদাস স্যারের ‘জলপুত্র’ জেলেজীবন নিয়ে বই দুটি অনবদ্য রচনা। ১৯৭১ সালে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বাংলাদেশের রূপকার স্বাধীনতার ঘোষক প্রয়াত রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সেই কালজয়ী ভাষণ শুনে ধর্ম বর্ণ নির্বেশেষে সকল শ্রেণি ও বিভিন্ন পেশার লোকজন নিজের জীবন হাতে মুঠোয় নিয়েছিল। তেমনি পটিয়া ভাটিখাইন ইউনিয়নের করল গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা সুনীল কান্তি জলদাস একাত্তরে দেশ স্বাধীন করার জন্য সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। নিচুজাতের হওয়াতে থেকে যান লোকচক্ষুর আড়ালে,বলা যায় অনেকটা বিস্মৃত অধ্যায়। তাতে কি সত্য কখনো কবর দিয়ে রাখা যায় ? সুনীল জলদাসের যে দেশপ্রেম সত্যি তা আজ বিরল। পেটের তাগিদে জাল নিয়ে জলের সাথে য্দ্ধু করে যে কিনা সংসার চালাতেন। মা মাটি ও মাতৃভূমির টানে একসময় জাল ফেলে অস্ত্র কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন। দেশ স্বাধীন হলো কিন্তু পরিতাপের বিষয়। একটি স্বাধীন দেশে যে নিষ্পেষিত পরিবারের সন্তান একাত্তরের সুনীল যে কিনা ২০০২ সালে ৫ জুলাই অর্থের অভাবে একসময় বিনা চিকিৎসায় না ফেরার দেশে চলে যান। এটা কোনোভাবে মেনে নেয়া যায় না। জেলে সম্প্রদায়ের হওয়াতে কেউ এগিয়ে আসেনি এটা আমাদের জন্য বড়ো লজ্জার। সমগ্র বাংলাদেশে জলদাস মুক্তিযোদ্ধা খুব কম বলা যায়। চট্টগ্রামে সুনীলের জলদাসের মতো দ্বিতীয় কোনো জলদাস মুক্তিযোদ্ধা আছে কিনা সন্দেহ। জলদাস মুক্তিযোদ্ধা এটি প্রথম রচনা। চট্টগ্রামে সুনীল জলদাস ব্যতীত কোনো জলদাস মুক্তিযোদ্ধার সন্ধান পাওয়া যায়নি যে কিনা অর্থের অভাবে চিকিৎসা করতে না পেরে একসময় তার শেষের ঠিকানা হলো শ্মশান ঘাটে। লেখক ও প্রাবন্ধিক রশীদ এনামের রচনা মুক্তিযুদ্ধ ও ইতিহাসভিত্তিক গ্রন্থ “একাত্তরের জলপুত্র মুক্তিযোদ্ধা সুনীল কান্তি জলদাস”। বইটির প্রচ্ছদ করেছেন শিল্পী মোমিন উদ্দীন খালেদ। অমর একুশের বইমেলায় শৈলী প্রকাশনের ১৮৭ নং স্টলে পাওয়া যাবে।