সাধারণ মানুষ কষ্ট পায় এমন কিছু করবেন না: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বৈশ্বিক সংকটের মধ্যেও দেশের অর্থনীতি এখন পর্যন্ত ভালো অবস্থানে রয়েছে। নিজেদের প্রতিষ্ঠান চালু রেখে, দেশের মানুষের চাহিদা মেটানোর জন্য শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদের উদ্যোগ নিতে হবে। এমন কিছু করবেন না যাতে সাধারণ মানুষ কষ্ট পায়।

রোববার (২০ নভেম্বর) সকালে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি কর্ণফুলি ড্রাইডক স্পেশাল ইকোনমিক জোনসহ ৫০টি শিল্প ও অবকাঠামো উদ্বোধন এবং ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন তিনি।

বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, নির্দিষ্ট অঞ্চল নয়, সারা দেশেই শিল্পায়নের উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। যার ফলশ্রুতিতে কর্ণফুলি ড্রাইডক স্পেশাল ইকোনমিক জোনসহ ৫০টি শিল্প ও অবকাঠামো উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হলো।

অনুষ্ঠানে যুবসমাজকে শিল্প উদ্যোক্তা হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, নিজের দেশের সম্পদ কাজে লাগিয়ে নিজেই উদ্যোক্তা হয়ে উঠুন। তার জন্য সব ধরনরে সুযোগ-সুবিধা দেয়া হবে। নিজেকে সেভাবে গড়তে হবে, যেন অন্য দেশের মানুষ আপনার কাছে কাজের জন্য আসে।

বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুনের স্বাগত বক্তব্যের মধ্যদিয়ে শুরু‍ হওয়া অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের কার্যক্রমের ওপর ভিডিও প্রদর্শন করা হয়। এরপর চট্টগ্রাম-১ আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন ও প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বক্তব্য দেন।

আরও পড়ুন: অর্ধশত শিল্প ও অবকাঠামো উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

কর্ণফুলি ড্রাইডক স্পেশাল ইকোনমিক জোন নদীর দক্ষিণে বাদলপুরা ও শাহ মীরপুর মৌজায় অবস্থিত। বেজার কাছ থেকে বরাদ্দ পাওয়া জমিতে এটি প্রতিষ্ঠা করে দেশের অন্যতম বৃহৎ প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলি শিপ বিল্ডার্স। ড্রাইডকের নির্মাণ ব্যয় হিসেবে বিশ্বব্যাংক ৮শ কোটি টাকা সহজ শর্তে ঋণ দিয়েছে।

এ ড্রাইডকটি লম্বায় ২৮৫ মিটার এবং প্রস্থে ৫৬ মিটার। ডকে এক লাখ টন ওজনের জাহাজ নির্মাণ ও মেরামত করা সম্ভব। ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে আরেকটি ড্রাইডকের নির্মাণকাজও চলছে।

কর্ণফুলি নদীর দক্ষিণ পাড়ে আনোয়ারায় ‘কর্ণফুলি ড্রাইডক স্পেশাল ইকোনমিক জোন’-এর অধীন দুটি জেটির নির্মাণকাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। জেটিতে আমদানি পণ্যবাহী জাহাজ ভিড়তে শুরু করেছে এবং নিয়মিত চলছে লোডিং-আনলোডিং কার্যক্রম, যা চট্টগ্রাম বন্দরের পণ্যবাহী জাহাজের জট কমানো তথা উৎপাদনশীলতা বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। বিশেষ করে বহির্নোঙরে জাহাজের অপেক্ষার সময় হ্রাস পাওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হচ্ছে।

এ জেটিতে ১৭০ মিটার লম্বা দুটি জাহাজ একসঙ্গে ভিড়তে এবং ১০ থেকে ১২টি জাহাজ একসঙ্গে পণ্য খালাস এবং কম করে হলেও দৈনিক ছয় হাজার টন ও মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার টন পণ্য খালাস করতে পারবে।

এ ইকোনমিক জোনের আওতায় আরও দুটি জেটি ও কনটেইনার টামিনাল নির্মাণের জন্য ২০.৯৮ একর জমি বেজার মাধমে লিজ নেয়াসহ কর্ণফুলি শিপ বিল্ডার্সের নিজস্ব জমিতে আরও দুটি জেটি নির্মাণ করা হবে।