ইউএফও নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও চমকপ্রদ তথ্য দিয়েছে মার্কিন কংগ্রেস

ইউএফও (আনআইডেন্টিফাইড ফ্লাইং অবজেক্ট) বা অজ্ঞাত উড়ন্ত বস্তু নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও চমকপ্রদ তথ্য দিয়েছে মার্কিন কংগ্রেস। সম্প্রতি কংগ্রেসের এক শুনানি শেষে কর্মকর্তারা বলেছেন, এতদিন যেসব ইউএফও দেখা গেছে, তার সবই মানুষের তৈরি নয়। কংগ্রেস আরও বলেছে, ইউএফওর হুমকি দিন দিন বেড়েই চলেছে। খবর ভাইস নিউজ।

পৃথিবীর আকাশে প্রায়ই বিভিন্ন রহস্যময় উড়ন্ত বস্তু চোখে পড়ে। কিন্তু এগুলো আসলে কী–সে সম্পর্কে খুব কমই জানা যায়। আর এ জন্যই এগুলোকে ইউএফও তথা অজ্ঞাত উড়ন্ত বস্তু বলা হয়ে থাকে। এ নিয়ে মানুষের আগ্রহের শেষ নেই।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো যুক্তরাষ্ট্রেও প্রায়ই এ ধরনের উড়ন্ত বস্তু দেখার কথা জানিয়ে আসছে দেশটির নাগরিকরা। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, অতীতে এগুলোকে পৃথিবীর নানা দেশে নানা সময় আকাশে উড়তে দেখা গেছে এবং এখনও দেখা যাচ্ছে।

এগুলো বিচিত্র আকারের নভোযানের মতো দেখতে, যা অত্যন্ত দ্রুতগতিতে ওড়ে এবং হঠাৎ দেখা দিয়েই অদৃশ্য হয়ে যায়। বৈমানিক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত বহুজন এই রহস্যময় উড়ন্ত যান দেখার কথা বলেছেন। কিন্তু অনেকেই তাদের বর্ণনা বিশ্বাস করেন না। এগুলো নিয়ে বহু সিনেমা-টিভি ধারাবাহিক তৈরি হয়েছে। কিন্তু আজও এর রহস্য ভেদ হয়নি।

 

অনেকের ধারণা, এগুলো গোপন কোনো সামরিক বিমানের পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন। আবার কেউ বলেন, এগুলো ভিনগ্রহ থেকে আসা বুদ্ধিমান প্রাণীদের নভোযান। বছরের পর বছর বিষয়টি এড়িয়ে এলেও এখন এটাকে অতি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। শুধু তাই নয়, ৫০ বছরে ধরে যত ইউএফও দেখা গেছে, সেগুলোর ওপর সম্প্রতি প্রথমবারের মতো মার্কিন কংগ্রেসে উন্মুক্ত শুনানির আয়োজন করা হয়।

ইউএফও দেখাকে ঘিরে বহু দশকের যে গোপনীয়তার আবরণ, কংগ্রেসের এই শুনানির মধ্য দিয়ে তার ওপর আলোকপাত করা হয়। এর আগে ইউএফও দেখার ঘটনাগুলো তদন্ত করার জন্য দায়িত্ব দেয়া হয় মার্কিন সামরিক বাহিনীর দুজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে। তারাও এই শুনানিতে বক্তব্য দেন।

কংগ্রেসের হাউস ইন্টেলিজেন্স, কাউন্টারটেরোরিজম, কাউন্টারইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড কাউন্টারপ্রলিফারেশন উপকমিটিতে এই শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। দ্য ভাইস জানায়, চলতি বছরের মে মাসে শুরু হওয়া কংগ্রেসের ওই শুনানিতে ইউএফও নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক ও আলোচনা হয়। প্রায় দুই মাসের বিতর্ক আলোচনা শেষে গত মাসে (২৬ জুলাই) ২৩ পৃষ্ঠার একটি রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়।

একই সঙ্গে ইনটেলিজেন্স অথোরাইজেশন অ্যাক্ট নামে একটি আইন প্রণয়ন করা হয়। রিপোর্টে কংগ্রেস মূলত দুটি চমকপ্রদ তথ্য দিয়েছে। যার একটি হচ্ছে, কিছু ইউএফও মানুষের তৈরি নয়। আইনপ্রণেতারা বলছেন, ইউএফওগুলোকে তারা দুই ভাগে বিভক্ত করেছেন। এর কিছু মানুষের তৈরি আর কিছু মানুষের তৈরি নয়। দ্বিতীয় তথ্যটি হচ্ছে, মানুষের তৈরি নয় এমন ইউএফও দিন দিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি হুমকি হয়ে উঠছে।

এই হুমকি মোকাবিলায় ইন্টেলিজেন্স অথোরাইজেশন অ্যাক্ট নামে একটি খসড়া আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। আইনটি সিনেট সিলেক্ট কমিটি অন ইন্টেলিজেন্সে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হযেছে। এতে ইউএফওকে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। নতুন নাম দেয়া হয়েছে ‘আনআইডেন্টিফাইড অ্যারোস্পেস-আন্ডারসি ফেনোমেনা’ (ইউএইউপি)। এর মাধ্যমে জল-স্থলের সব অজ্ঞাত বস্তুকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।