কক্সবাজারে হোটেল ‘ম্যানেজারের’ রহস্যজনক মৃত্যু

কক্সবাজার শহরের কলতালী হোটেল-মোটেল জোনের ‘সি কক্স’ আবাসিক হোটেলের স্টাফ কোয়ার্টারে খালেদ আশরাফ বাপ্পি (২২) নামে এক যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে।

তিনি ওই হোটেলের ফ্রন্ট ডেস্কের ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে কলাতলী হোটেলের স্টাফ কোয়ার্টারে এ ঘটনা ঘটে।

খালেদ আশরাফ বাপ্পি কক্সবাজার সদরের বাংলাবাজার কাজীর রোড এলাকার বাসিন্দা। তিনি কক্সবাজার সরকারি কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তিনি ওই হোটেলে পার্টটাইম চাকরি করতেন।

সি কক্স হোটেলের রিজার্ভেশন অফিসার অর্ণব বলেন, হোটেল থেকে কিছু দূরে পাহাড়ের সঙ্গে লাগোয়া হোটেলের স্টাফদের কোয়ার্টার। ওখানে স্টাফরা রাত্রিযাপন করেন। শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে হোটেলের ডিউটি শেষ করে বাপ্পি স্টাফ কোয়ার্টারে চলে যান। পরে তাকে মৃত অবস্থায় বাসার থেকে উদ্ধার করা হয়। ওই সময় বাসায় কেউ ছিল না এবং তার রুমটি ভেতর থেকে ‘লক’ করা ছিল।

তবে পরিবারের দাবি, খালেদ আশরাফ বাপ্পীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।

নিহত বাপ্পীর মা রোকেয়া বেগম বলেন, অনেকেই আমার ছেলে আত্মহত্যা করেছে বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু আমি বলব, আমার ছেলে আত্মহত্যা করার মতো কোনো ছেলে নয়।

তিনি বলেন, আমার ছেলের সঙ্গে মফিজ নামে এক যুবকের পরিচয় ছিল। পরিচয় সূত্রে আমার ছেলে ধারদেনা ও ব্যাংকের ঋণ নিয়ে ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যবসার জন্য মফিজের হাতে তুলে দেয়। কিন্তু মফিজ করোনা ও দোকান ভেঙে ফেলার অজুহাতে আমার ছেলেকে টাকা ফেরতের কথা বলে সময় নিতে থাকে। আমার ধারণা, ঠাণ্ডা মাথায় আমার ছেলে বাপ্পীকে হত্যা করা হয়েছে।

খালেদ আশরাফ বাপ্পীর ছোট ভাই রিহাদ জানান, রোববার দিবাগত রাত ১২টা ৩০ মিনিটের সময় একই এলাকার সম্পর্কে চাচা নুরুল আজিমের ফোনে একটি কল আসে। ফোন করে বলে বাপ্পী মারা গেছে আপনারা তারাতাড়ি আসেন। তখন নুরুল আজিম রিহাতকে সঙ্গে নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গেলে জানতে পারে বাপ্পীকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

ছোট ভাই রিহাতের দাবি, তার বড় ভাইয়ের ব্যবসায়িক পার্টনার মফিজ এ হত্যকাণ্ড ঘটিয়েছে। তিনি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।

সদর থানার এসআই রিয়াজ বলেন, লাশটি হাসপাতালে ছিল। সূত্রানুসারে জানতে পারলাম, হোটেল সী কক্সের ৫তলা বিশিষ্ট ভবনের ২য় তলায় একটি ঝুলন্ত লাশ দেখতে পেয়ে তার সহকর্মীরা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে আমরা ঘটনাস্থলে এসে রুম তল্লাশি করে আলামত হিসেবে ফাঁসের একটি গামছা ও মোবাইল জব্দ করি। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।

সদর থানার ওসি (তদন্ত) মো. সেলিম বলেন, প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলে জানতে পেরেছি। এর পরও যদি কোনো অভিযোগ পাই, তবে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।