পর্যটকে মুখর বান্দরবানের পাহাড়

ছুটি শেষ হলেও এখনও বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে রয়ে গেছে ঈদের আমেজ। বান্দরবানের সবগুলো পর্যটন কেন্দ্রে মানুষের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। তবে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবার আশানুরূপ পর্যটক আসেনি বান্দরবানে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, জেলা প্রশাসন পরিচালিত নীলাচল, মেঘলা ও শৈলপ্রপাত, চিম্বুক, সেনাবাহিনী পরিচালিত নীলগিরি, বগালেক, রিজুক ঝর্ণাসহ বান্দরবান জেলা শহরের নিকটবর্তী বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে হাজারও পর্যটক ঘুরে বেড়াচ্ছেন। পাশাপাশি থানচি, আলীকদম ও রুমা উপজেলায় পর্যটকদের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা গেছে। ঈদ উপলক্ষে অনেকে পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব নিয়ে এসেছেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বান্দরবানের সৌন্দর্য উপভোগ করতে।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চ‌ব্বিশ পরগণার নয়াহা‌টি থেকে আসা পর্যটক উমা সরকার ও আকাশ সরকার বলেন, ঈদ উপলক্ষে আমরা বেড়া‌তে এসেছি। ভীষণ ভালো লাগছে। বান্দরবান জায়গাটা খুবই সুন্দর। আমরা প্রথমবার এসেছি বান্দরবানে। যদি আরেকবার কলকাতা থেকে বাংলাদেশে আসি, আবার বেড়াতে আসব।

চট্টগ্রাম থেকে আসা র‌্যাম্প মডেল পিয়াল সরকার বলেন, বান্দরবানে আমরা পরিবারের সবাই মিলে ঘুরতে এসেছি। আগে এসেছি। এবারও এসেছি কারণ এখানে বারবার আসতে ভালো লাগে। রিফ্রেশমেন্টের জন্য ভালো জায়গা বান্দরবানের নীলাচল।

বান্দরবানে বেড়াতে আসা পর্যটক ব্যান্ড শিল্পী ফাইরুজ নাজিফা ও তার মা মুক্তা বলেন, আমরা বান্দরবানে প্রায়ই বেড়াতে আসি। বান্দরবান আমাদের প্রিয় জায়গা। এখানে বিভিন্ন জায়গা থেকে পর্যটক আসেন। এখানে এসে শান্তি পাই, তাই বেড়াতে আসি বারবার।

জেলা প্রশাসনের পরিচালিত নীলাচল পর্যটন কেন্দ্রের টিকিট কাউন্টারের ম্যানেজার সুমি ত্রিপুরা বলেন, ঈদের পর থেকে নীলাচলে প্রচুর পর্যটক আসছে। নীলাচলে প্রতিদিন প্রায় এক থেকে দেড় হাজার পর্যটকের সমাগম হয়।

পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানায়, পাহাড়ি জেলা বান্দরবানে আগের তুলনায় আশানুরূপ পর্যটক এখনও আসছে না। তবে পর্যটকদের থাকা খাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে বলেও তারা জানান।

জেলা প্রশাসন ও পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সূত্রে জানা যায়, জেলা শহর ও শহরতলীতে ছোট বড় প্রায় ৬৫টি আবাসিক হোটেল-মোটেল ও অবকাশ কেন্দ্রে চার হাজার পর্যটক থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। পাশাপাশি রুমা উপজেলার বগালেক, কেওকারাডং, তাজিংডং, থান‌চি উপজেলার তিন্দু, রেমাক্রি, নাফাখুম’সহ বিভিন্ন বিভিন্ন স্থানে আরও কয়েক হাজার পর্যটক থাকার জন্য ইতোমধ্যে আবাসন গড়ে উঠেছে।

বান্দরবানের মেঘলা এলাকার হোটেল নাইট হ্যাভেনের ম্যানেজার ওমর ফারুক জানান, ঈদ উপলক্ষে মোটামুটি পর্যটক আসছে। পর্যটক আসা শুরু হওয়ায় তাদেরও ভালো লাগছে। পর্যটকদের সেবা দেওয়ার জন্য তারা প্রস্তুত আছেন বলেও জানান তিনি।

এ ব্যাপারে বান্দরবানের হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি অমল কান্তি দাশ বলেন, শীত মৌসুম পর্যটকদের ভরা মৌসুম। এসময়ে পর্যটকদের আগমন বেশি ঘটে। তবে করোনার পর বান্দরবানে আগের মতো পর্যটকের সমাগম হয় না। তবে ভবিষ্যতে কোনো দুর্যোগ-মহামারির কারণে বাধার সম্মুখীন না হলে বান্দরবানে প্রচুর পর্যটকের সমাগম হবে বলে ধারণা এই ব্যবসায়ীর।

বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াসমিন পারভীন তিবরিজী বলেন, বান্দরবানে আসা পর্যটকদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে কড়া নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে। বান্দরবানের পর্যটন কেন্দ্রগুলো দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বান্দরবানের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বছরের পুরোটা সময়ই পর্যটকদের আগমন ঘটে এখানে। তবে ঈদ উপলক্ষে এখনও প্রচুর পর্যটক আসছে বলে তিনি জানান।