যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি জাহানারা ইমাম জনমনে প্রতিষ্ঠা করেছেন

শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ২৮তম মৃত্যুবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন উপলক্ষে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি চট্টগ্রাম জেলার উদ্যোগে গত ২৬ জুন, বিকেলে নগরীর মোমিন রোডস্থ চট্টলবন্ধু এস.এম জামাল উদ্দিন মিলনায়তনে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর চেতনার ধারাবাহিকতায় শহীদজননীর আন্দোলনের প্রাসঙ্গিকতা ও বর্তমান বাস্তবতা’ শীর্ষক স্মরণ সভায় বক্তারা বলেছেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চেতনার ধারাবাহিকতায় শহীদজননী জাহানারা ইমাম বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এর প্রয়োজনীয়তা জনমনে গেঁথে দিতে সমর্থ হয়েছিলেন।’ বক্তারা আরো বলেন, বাঙালির যেকোনো সংকটে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলো পথরেখার ভূমিকা পালন করেছে সবসময়। অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সংগঠনের সাবেক সহ-সভাপতি জননেতা মফিজুর রহমান। প্রধান বক্তা ছিলেন সংগঠনের ৮ম জাতীয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব লেখক-সাংবাদিক শওকত বাঙালি। সংগঠনের জেলা সভাপতি প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদারের সভাপতিত্বে ও কার্যকরি সাধারণ সম্পাদক মো. অলিদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য, সংগঠনের সাবেক প্রচার-প্রকাশনা সম্পাদক ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া, সংগঠনের জেলা সহ-সভাপতি আওয়ামী লীগ নেতা দীপঙ্কর চৌধুরী কাজল, মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন চৌধুরী, মহিলা শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও সংগঠনের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক শ্রমিকনেত্রী রুবা আহসান, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর রেখা আলম চৌধুরী, সহ-সাধারণ সম্পাদক এ.কে.এম জাবেদুল আলম সুমন, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক দেবাশীষ আচার্য্য। অন্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন সংগঠনের জেলা সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন চৌধুরী, মিথুন মল্লিক, অ্যাডভোকেট মো. সাহাব উদ্দিন, অসিত বরণ বিশ্বাস, সহ মহিলা বিষয়ক সম্পাদক সূচিত্রা গুহ টুম্পা, সহ-প্রচার ও গণমাধ্যম সম্পাদক রুবেল চৌধুরী, সাংস্কৃতিক সম্পাদক রাজীব চৌধুরী, সংগঠনের বাঁশখালী থানা কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক সাদ্দাম হোসাইন সায়েম ও সদস্য সচিব আজমীরুল ইসলাম, জেলা কার্যনির্বাহী সদস্য নাছিমা আকতার, আয়শা ছিদ্দিকা, রুনা মোস্তাক, মুক্তা আহমেদ, তানিয়া কামাল, জয়া সিংহ, রুজিনা আক্তার, রিয়া, রিনা, রোকসানা পারভীন রুবা, সেলিনা, শারমিন প্রমুখ। প্রধান আলোচক মফিজুর রহমান বলেন, শহীদজননী জানতেন, জনগণই সকল শক্তির উৎস। আর তাই একাত্তরের ঘাতক ও যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন’ ও ‘একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল সমন্বয় আন্দোলনের’ দায়িত্বভার তিনি বাংলাদেশের জনগণের হাতে অর্পণ করেছিলেন। বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেই অর্পিত দায়িত্ব যথাযথ পালন করেছেন এবং করছেন। তিনি আরো বলেন, ’৯২ সালের ২৬ মার্চ ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নজিরবিহীন গণ-আদালতে যুদ্ধাপরাধীদের শিরোমণি গোলাম আযমের প্রতীকী বিচার হলো। এরপর জাহানারা ইমামের আন্দোলন ছড়িয়ে পড়লো সারাদেশে। প্রধান বক্তা শওকত বাঙালি বলেন, শহীদজননী জাহানারা ইমাম জানতেন, সেদিনের সেই আন্দোলনকে দুস্তর পথ পাড়ি দিতে হবে। দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, মুক্তিযোদ্ধা, ছাত্র ও যুব শক্তি, নারী সমাজসহ দেশের সর্বস্তরের মানুষ এই লড়াইয়ে আছে। শেষবার তিনি তাঁদের অঙ্গীকার পালনের কথা আরেকবার স্মরণ করিয়ে দিয়ে আন্দোলনের শেষ পর্যায় পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ে থাকার আহ্বান জানান। তাঁর উত্তর-প্রজন্ম সেই কথা রেখেছে। ২০১৩ সালে গণজাগরণ মঞ্চ নিয়ে এই প্রজন্ম হাজির হলেও তারা শহীদজননীর আদর্শকেই সামনে রেখে এগোয়। শহীদ জননীর আন্দোলনের আজকের বাস্তবতা প্রসঙ্গে বহুমুখী প্রলোভনে বিভ্রান্ত প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রশ্নে অবিচল রাখা অন্য সময়ের চেয়ে কঠিন বলে উল্লেখ করেন তিনি।