কেটেছে শঙ্কা সাকিবের প্রশংসায় অনুপ্রাণিত তাসকিন

অবশেষে শঙ্কা কেটেছে তাসকিন আহমেদকে নিয়ে। ইনজুরি কাটিয়ে মাঠে ফিরলেও টাইগার পেসারের দেখা দিয়েছিল পিঠের ব্যথা (ব্যাক পেইন)। যে কারণে বিসিবি থেকে দেয়া হয়েছিল বিশ্রাম। গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে দিতে হয়েছে ফিটনেস টেস্ট। এরপর নিজেই জানিয়েছেন তিনি এখন ফিট আছেন, উইন্ডিজে তার খেলতে কোনো সমস্যা নেই। গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা মাঠে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তাসকিন বলেন, ‘কয়েকদিন আগে জিম করতে গিয়ে ব্যথা পেয়েছিলাম এখন আল্লাহর রহমতে ঠিক আছি। গত দুইদিন বোলিং করলাম আল্লাহর অশেষ রহমতে আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি এখন। ম্যানেজমেন্ট তারা সবাই সন্তুষ্ট, আমিও সন্তুষ্ট। আল্লাহ যদি চান, পরশু যাবো ইনশাআল্লাহ্‌।’ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে তাসকিনের খেলার কথা ছিল শুধু ওয়ানডে ম্যাচ। তবে কালই তিনি দেশ ছাড়বেন।

জানা গেছে, যেহেতু পেসার শহিদুল ইসলাম নেই তার পরিবর্তে হাসান মাহমুদকেও দলে নেয়া হয়নি তাই টি-টোয়েন্টি দলে তাসকিনকে যুক্ত করা হতে পারে।
দৈনিক মানবজমিনকে বিসিবির একটি সূত্র জানায়, শেষ পর্যন্ত টি-টোয়েন্টি দলেও যুক্ত হতে পারেন এই পেসার। আগামী ২রা জুলাই শুরু হবে টি-টোয়েন্টি সিরিজ। ক্যারিয়ারের বড় একটা অংশ জুড়ে তাসকিনের দলে আসা যাওয়ার পেছনে অন্যতম কারণ একের পর এক চোট। সবশেষ দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে টেস্ট সিরিজে ইনজুরিতে পড়ে দল থেকে ছিটকে যান এই পেসার। এরপর খেলা হয়নি দেশের মাটিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে। একই কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজেও খেলতে পারেননি তিনি। ক্যারিয়ারে বার বার ইনজুরিতে পড়ে ফিরে এসেছেন তাসকিন। এমনকি ফর্ম হারালেও বসে থাকেননি, রীতিমতো যুদ্ধ করেই ফিরেছেন মাঠে। তাসকিনের প্রশংসা করেছেন টেস্ট অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও। সাকিবের মুখে নিজের প্রশংসা শুনে আপ্লুত তাসকিন। গতকাল তিনি বলেন, ‘আসলে নো ডাউট তিনি একজন লিজেন্ড। তিনি যখন বলেছেন পার্সোনালি খুবই ভালো লেগেছে আমার। আরো অনুপ্রাণিত করেছে আমাকে যে, আমি আরো ভালো করতে পারলো।

খুব ভালো লেগেছে আসলে।’ অন্যদিকে কাঁধের ইনজুরি কাটিয়ে ফিট হলেও এবার পড়েছিলেন নতুন জটিলতায়। শুরু হয়েছিল ব্যাকপেইন। মূলত তরুণ পেসার শরিফুল ইসলামকে তড়িঘড়ি করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ পাঠানোর কারণও তাসকিনের হঠাৎ পিঠে ব্যাথা। যদি কোনো কারণে তিনি যেতে না পারেন সেই ক্ষেত্রে শরিফুল আগেই কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে প্রস্তুত হতে পারবে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টির জন্য। তবে তাসকিন জানালেন গত দুই দিনে যে বোলিং করেছেন সেখানে সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়েছে। এই কারণে বেশি জোর দিয়ে বল করারও চেষ্টা করেননি। গতকাল তিনি বল করেছেন ৭ ওভার। তাসকিন বলেন, ‘গতকাল এবং আজকে একশ শতাংশ দিয়েই বোলিং করার চেষ্টা করেছি এবং এফোর্টগুলো ঠিক ছিল। সবধরনের বলই চেষ্টা করেছি এবং এখানে আমাদের নির্বাচকরা, ডাক্তার সবাই ছিলেন। তারাও সেফিসফাইড’ আমিও সেটিসফাইড। সমস্যা হয়নি, এখন সামনে বাকি সব আল্লাহর ইচ্ছা।’ তাসকিন বলেন, ‘আসলে একজন খেলোয়াড়ের যেকোন সময় ইনজুরি হতে পারে। আসলে ভয় পেয়ে লাভ নাই। যখন খেলতে নামবো শতভাগ দিয়েই চেষ্টা করবো।

ইনজুরি হলে আবার রিহ্যাব করে আবার (ফিরে) আসবো।’ ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে সিরিজে অন্যতম আলোচনায় ডিউক বল। যে বল দিয়ে বাংলাদেশ কখনো খেলেনি। প্রথম টেস্টে এই বলে টাইগার ব্যাটাররা খেলতেই পারেননি। চরম ব্যাটিং ব্যর্থতায় ম্যাচ হেরেছে ৭ উইকেটে। তবে বোলাররা দারুণ করেছেন। যদিও ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি হবে কুকাবুরা বলে। যে বলে টাইগাররা অভ্যস্ত। তাসকিন তাসকিন বলেন, ‘টেস্ট ম্যাচ তো ডিউক বলে খেলা হচ্ছে, আমার ইচ্ছা ছিল কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত খেলা হলো না। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি কুকাবুরা বলেই হবে, তো যেটাতেই হোক নিজের সেরাটা দেবো। হাতে যেটা আছে প্রসেস, সেটাই ফলো করবো। দিনশেষে বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছা। আমি চাইবো সুযোগ পেলে নিজের সেরাটা দিয়ে যেন জয় উপহার দিতে পারি। সবসময় এটাই ইচ্ছা থাকে।’ অনেকেই মনে করেন, তাসকিন একটু চোটপ্রবণ খেলোয়াড় তাই সব ফরম্যাটে খেলাও ঝুকিপূর্ণ। তবে তিনি তা মানতে নারাজ। তাসকিন বলেন, ‘আমি সব ফরম্যাট খেলতে চাই, যদি কখনও দেখি পারছি না, তখন বলবো। এখন আসলে ফিট হয়ে ভালো মতো খেলার রাইট টাইম। আমার স্বপ্ন আসলে ওয়ার্ল্ডক্লাস হতে চাই। এখনও আসলে ঐ সময় আসে নাই যে আই নিড রেস্ট। যদি কখনও মনে হয় না ম্যানেজ করতে পারছি না তখন, কিন্তু এখনও ঐ সময় হয় নাই।’