“বৈশ্বিক পরবর্তী উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে কার্যকর বাজেট”

১১জুন বৈশ্বিক মহামারী পরবর্তী এই কঠিন সময়ে প্রস্তাবিত বাজেট অত্যন্ত সাহসী এবং সময়োপযোগী। চিটাগাং উইম্যান চেম্বারের প্রেসিডেন্ট মনোয়ারা হাকিম আলী ০৯ জুন জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আ.হ.ম. মুস্তফা কামাল কর্তৃক ঘোষিত দেশের ৫১তম প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন-কে স্বাগতজানিয়ে ঘোষিত বাজেটের প্রতিক্রিয়ায় তিনি এই কথা বলেন। পর পর দুইধাপে মহামারীর কারনে দেশের সর্বস্তরের মানুষ যখন অর্থনৈতিকভাবেক্ষতিগ্রস্ত হয়ে দিগ-বিদিগ জ্ঞান-শূন্য হয়ে পড়েছিল ঠিক সেই মুহুর্তে বর্তমান সরকারের ঘোষিত বাজেট দেশের মানুষকে কিছুটা হলেও আশার আলো দেখালো। নানান সীমাবদ্ধতার মাঝে এই ধরনের সময়োপযোগী বাজেট প্রণয়ন করায় বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও অর্থমন্ত্রী আ.হ.ম. মুস্তফা কামাল-কে অভিনন্দন জানান তিনি। মহামারী পরবর্তী পরিস্থিতিতে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি মহামারীতে ভেঙ্গেপরা শিক্ষা-খাতকে পুনরুজ্জ্বীবিত করতে সাহায্য করবে। স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্ধবৃদ্ধি, চলমান মহামারী মোকাবেলার কার্যক্রমকে আরো ত্বরান্বিত করবে। কৃষি খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির ফলে মহামারী পরবর্তী এই দুঃসময়ে দেশের খাদ্য-নিরাপত্তা ঝুকি কমবে। কিন্তু পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ এবং খাদ্যখাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করলে বৈশ্বিক বাজার দরের অস্থিতিশীলতার সাথে তাল রেখেচলা সম্ভব হতো। জ্বালানী ও বিদ্যুৎ এবং শিল্প ও অর্থনৈতিক খাতেবরাদ্ধ বৃদ্ধি করলে ব্যবসায় বাণিজ্যের উন্নয়ন তথা দেশের জনগনেরউন্নয়নের পথ ত্বরানিত হত। এছাড়া পরিবহন ও যোগাযোগ এবংজনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির ফলে সাধারণ জনগনের জীবন-মানের উন্নয়ন ঘটবে এবং মানুষের জীবন থেকে অনিশ্চয়তা লাঘব হবে।স্টার্টআপ উদ্যোক্তাদের টার্নওভার করের হার কমানো এবং আয়রকত রিটার্ন দাখিল বাদে বাকি সব রিপোর্টিং থেকে অব্যহতি, এবং তরুণদের নতুন ধারনা বিকাশে সহায়তা করার জন্য এফবিসিসিআই প্রস্তাবিত ইনোভেশন সেন্টার প্রতিষ্ঠায় সহায়তা প্রদান করার প্রস্তাবের ফলে তরুণ উদ্যোক্তাদের সামনে এগিয়ে যেতে সহায়তা করবে। এছাড়া “ই-বাণিজ্য করবো, নিজের ব্যবসা গড়বো”র্শীর্ষক প্রকল্পের অধীনে নতুন উদ্যোক্তাকে ই-কমার্স বিষয়ে প্রশিক্ষন প্রদান করার উদ্যোগ বাজেটের একটি ইতিবাচক দিক। তাছাড়া পর্যটন খাতকে সমৃদ্ধ করার জন্য আন্তর্জাতিক মানের আবাসন ও বিনোদন সুবিধা নিয়ে কক্সবাজার জেলার সবরাং ট্যুরিজম পার্ক, নাফ ট্যুরিজম পার্ক এবং সোনাদিয়ায় ইকোট্যুরিজম পার্ক স্থাপন সত্যিই প্রশংসার দাবী রাখে। যা পর্যটন খাতকে আরো সামনে এগিয়ে নিতে ভূমিক রাখবে। বিড়ি-সিগারেট ও ধোয়াবিহীন তামাকজাত পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি দেশের সাধারণ জনগণকে ধুমপান থেকে বিরত থাকতে উৎসাহিত করবে। এছাড়া গাড়ীসহ বিলাস বহুল পণ্যের উপর শুল্ক বৃদ্ধি করায়, এই সমস্ত পণ্য ক্রয়কে নিরুৎসাহিত করবে। দেশীয় তৈরী ল্যাপটপ, ডেস্কটপ ও অন্যান্য অন্যান্য আইসিটি পণ্য থেকে ৫ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহারের ফলে দেশীয় তৈরী এই সমস্ত পণ্যের দাম কমবে এবং দেশের তথ্য প্রযুক্তি খাত ও প্রতিষ্ঠানসমূহ আরো অগ্রসর হবে। আয়কর, শুল্ক ও মুশক বিভাগে ই-পেমেন্ট অটো মেটেড চালান প্রবর্তন একটি যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জন্য ৪ হাজার ২৯০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব নারীদের জন্য প্রস্তাবিত বিষয় সমূহ বাস্তবায়নে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। এই বরাদ্দকৃত টাকা সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারলে দেশের নারী ও শিশুদের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন ও স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে ভুমিকা রাখবে। এছাড়া এসএমই খাতে নারী উদ্যোক্তাদের বার্ষিক টার্নওভার ৭০ লক্ষ টাকা আয়কে করমুক্ত বিদ্যমান রাখা বাজেটের ইতিবাচক দিক। যা নারীদেরকে সামনে এগিয়ে যেতে সহায়তা করবে। বাজেটে আদিবাসী ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সম্প্রদায়ের জীবন-মান উন্নয়ন এবং ক্ষুদ্র শিল্পে তাদের চলমান অংশগ্রহন ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে আলাদাভাবে প্রকল্প গ্রহনের প্রস্তাব করছি। যার ফলে তাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি কৃষ্টি ও ঐহিত্য ধরে রাখতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।