বাংলা একাডেমির কার্ডে ‘ঈদ’, হতে পারে অভিধান সম্পাদনা

‘ঈদ মোবারক। / সংযম শেষে সব/ ভেদাভেদের ঊর্ধ্বে/ বিশ্বমানুষের মনে/ সঞ্চারিত হোক/ ভারসাম্যময়,/ সদাচারময় ও/ শান্তিময় ঐক্য।

/ মানুষ হোক শতভাগ/ নান্দনিক ও মানবিক। / জয় সোনার বাংলা,/ জয় সোনার পৃথিবী। / ঈদ মোবারক। ’
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নুরুল হুদা গত সোমবার (২ মে) নিজের ফেসবুক পেজে এভাবেই ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এছাড়া বাংলা একাডেমি এবারের ঈদে যে শুভেচ্ছা কার্ড ছাপিয়েছে সেখানেও ‘ঈদ’ বানানটি ব্যবহার করা হয়েছে। অথচ বাংলা একাডেমির ‘আধুনিক বাংলা অভিধান’ বলছে ‘ঈদ’ বানানটি ‘অসংগত’। এই অভিধানেই বলা হয়েছে ‘ঈদ’-এর সংগততর বানান হলো ‘ইদ’।

ফেসবুকে কবি নুরুল হুদার এই ‘ঈদকার্ড’ পোস্ট করলে তা নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা। অনেকেই বলছেন, বাংলা একাডেমির অভিধানের বানান নির্দেশনা মানছে না খোদ প্রতিষ্ঠান।

এ বিষয়ে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি নুরুল হুদাও জানান, ঈদ প্রশ্নে জামিল চৌধুরী সম্পাদিত বাংলা একাডেমি আধুনিক বাংলা অভিধান’র অবস্থানের সঙ্গে তিনি একমত নন। নিজের একক সিদ্ধান্তেই তাই কার্ডে ‘ইদ’-এর পরিবর্তে ‘ঈদ’ ব্যবহার করেছেন তিনি। বিষয়টি সুরাহার জন্য শিগগিরই অভিধান সম্পাদনা পরিষদের সঙ্গে বসবেন বলেও জানিয়য়েছেন নুরুল হুদা।

বাংলা একাডেমি ‘ই’ দিয়ে ইদ লিখলেও সেটা সর্বসাধারণের স্বীকৃতি পায়নি বলে মনে করেন নুরুল হুদা।

তিনি বলেন, বাংলা একাডেমি এ পর্যন্ত যত বানানরীতি করেছে, কোনোটার জন্য কোনো বাইন্ডিংস (বাধ্যবাধকতা) দেয়নি। বাংলা বানানের ভেরিয়েশন প্রচুর। কিছু শব্দ আছে, এখনও যা আমাদের মধ্যে পপুলার। সেদিক থেকে বাংলা একাডেমি মনে করে, যে সমস্ত বানান বাংলা ভাষায় বিভিন্ন সময়ে প্রচলিত হয়েছে, সেখান থেকে কোনো বানান কেউ ব্যবহার করলে তা ভুল বলার কোনো সুযোগ নেই।

নুরুল হুদা বলেন, ইংরেজিতে কিন্তু ‘ঈ’ উচ্চারণ নেই। আবার ইংরেজিতে আমরা ‘আই’ দিয়েও ঈদ লিখি না, ‘ই (E)’ দিয়ে লিখি। অনেকগুলো ব্যাপার আছে এখানে। আমি যেটা বলব, সেটা হলো ঈদ, ইদ দুটোই চালু রাখা যেতে পারে। আর অভিধানে ‘ঈদ’-এর পরে ‘অসংগত’ যেটা লেখা আছে, সেখানে শুধু লিখব প্রচলিত বানান।