পরিবেশ বান্ধব গৃহায়নের নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করলেন বাংলাদেশি বিজ্ঞানীরা

রোহিঙ্গাদের জন্য পরিবেশ বান্ধব গৃহায়নের নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করলেন বাংলাদেশি বিজ্ঞানীরা। কক্সবাজারের শিবিরগুলোতে নতুন একটি টেকসই উপাদান দিয়ে বাড়ি তৈরির পদ্ধতি চালু করেছেন তারা। এই প্রকল্পে অর্থায়ন করেছে জেদ্দা-ভিত্তিক ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক।
আরব নিউজের খবরে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের যে স্থানে রয়েছে তা প্রায়ই প্রাকৃতিক দুর্যোগে আক্রান্ত হয়। সাইক্লোন, ভূমিধস এবং বন্যার প্রকোপ দেখা যায় প্রায়ই। রোহিঙ্গারা আসায় বাংলাদেশের উপরেও ব্যাপক চাপ সৃষ্টি হয়েছে। তাদের আশ্রয় দিতে গিয়ে ব্যাপক বনাঞ্চল ধ্বংস করতে হয়েছে, তৈরি করতে হয়েছে বাড়িঘর। এবার এই বাড়ি তৈরির একটি বিকল্প রাস্তা দেখালেন বাংলাদেশি বিজ্ঞানীরা।
জানা গেছে, পাঁটের আশ ও রজন থেকে পাওয়া জুটিন দিয়ে এই বাড়িগুলো তৈরি করা হবে। প্রকল্পের নেতৃত্বে আছে ঢাকাভিত্তিক আইসিডিডিআরবি। প্রকল্পের সমন্বয়কারী ড. মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান আরব নিউজকে জানান, জুটিন দিয়ে তৈরি বাড়িগুলো তাপ প্রতিরোধী। এর ভেতরে থাকা মানুষেরা বাইরের তুলনায় কম গরমে থাকতে পারবেন

আমাদের গবেষণা এখনও চলছে। বিভিন্ন পরিবেশে এই বাড়িগুলো কীভাবে কাজ করে সে বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। কক্সবাজারে এরইমধ্যে জুটিন দিয়ে তৈরি ৬টি বাড়িও নির্মান করেছে আইসিডিডিআরবি। এরমধ্যে দুটি রোহিঙ্গাদের দেয়া হবে এবং বাকি চারটি পাবে স্থানীয়রা।
২০০৮ সালে জুটিন আবিষ্কার করেন বাংলাদেশি বিজ্ঞানী ড. মুবারক আহমেদ খান। এটি বেশ হালকা, টেকশই, তাপ ও পানি প্রতিরোধী। সবথেকে বড় সুবিধা হলো এটি পরিবেশ বান্ধব। মূলত দুর্যোগপূর্ণ এলাকাগুলোতে বাড়ি নির্মানের জন্যই জুটিন ব্যবহার করা হয়। এটি টিনের থেকেও ৪ গুণ বেশি শক্তিশালী। ঐতিহ্যগতভাবে বাংলাদেশে টিনের বাড়ি ব্যাপকহারে নির্মিত হয়।
মুবারক আহমেদ খান বলেন, জুটিন মূলত কাঠের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়। গাড়ি তৈরি শিল্পেও এর ব্যাবহার রয়েছে। এবার রোহিঙ্গাদের জন্য বাড়ি নির্মানে জুটিনের ব্যাবহার নিশ্চিত করতে ১ লাখ ডলার বা ৮৬ লাখ টাকা বরাদ্দ করেছে ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক। একটি জুটিনের বাড়ি তৈরিতে খরচ হয় ১ হাজার ডলার বা ৮৬ হাজার টাকা। এর আকৃতি ১৪ স্কয়ার মিটার এবং উচ্চতা হয় ২.৬ মিটার।