সুস্থতা বজায় রাখতে সঠিক ও স্বাস্থ্যকর ইফতারি

সারাদিন রোজা রাখার পর প্রথম খাবার হলো ইফতারি। রোজার শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখতে সঠিক ও স্বাস্থ্যকর ইফতারি অনেক জরুরি। সুষম এবং স্বাস্থ্যকর ইফতারি যথাযথ পুষ্টি চাহিদা পূরণের পাশাপাশি শরীরকে সুস্থ ও সক্রিয় রাখতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে।

ইফতারির মেনু এমনভাবে নির্বাচন করতে হবে যেন পরিমাণে সবার জন্য তা উপযোগী হয়। কেননা বড় ছোট ও বৃদ্ধ শারীরিকভাবে অসুস্থ অনেকেই রোজা রেখে থাকে। তাই সবার জন্য উপযোগী মেনু ইফতারে থাকলে তা অনেক উপকারী হয়।

তরল খাবার

রোজা ভাঙা হয় যে খাবারটি দিয়ে সেটি হলো তরল খাবার। আজানের পর পানি মুখে দিয়ে ৫ থেকে ১০ সেকেন্ড বিরতি দিয়ে তরল খাবারটি খেতে হয়। এ ক্ষেত্রে আস্তে আস্তে তরলটি গ্রহণ করতে হয়। খুব তাড়াহুড়া না করে বা গড় গড় করে না খাওয়াই ভালো। তরল হিসেবে লাচ্ছি, তাজা ফলের রস, ডাবের পানি, তোকমার শরবত, আখের গুড়ের শরবত ও লেবু পানি অনেক উপকারি। শরবত বা তরল তৈরিতে তাল মিছরি, গুড়, মধু ও ব্রাউন সুগার ব্যবহার করা যেতে পারে।

ফল

যেকোনো মৌসুমী ফল অবশ্যই ইফতারির মেনুত রাখতে হবে। মিক্স ফ্রুটস বা ফল দিয়ে তৈরি ডেজার্ট খাওয়া যেতে পারে। যা ফলের ভিটামিন এবং মিনারেলের চাহিদা পূরণ করে থাকে এবং প্রয়োজনীয় খাদ্য আঁশ জোগায়।

সবজি

শুধু বেগুনি না খেয়ে বিভিন্ন সবজি দিয়ে স্বাস্থ্যকর রেসিপি তৈরি করলে তা অনেক উপকারে আসে। সবজি, স্যান্ডউইচ, সবজি নুডলস, সবজি রোল, সবজি মম, সবজি পাকোরা ইত্যাদি। বয়স্কদের সবজি স্যুপ দিলে ভালো হয়। তবে মনে রাখতে হবে সবজি দিয়ে প্রস্তুত রেসিপিতে যেন অনেক কম তেলের ব্যবহার করা হয়।

ছোলা

ছোলা অতি প্রিয় এবং রোজার পরিচিত খাবার। যদিও ছোলা প্রোটিনের ভালো উৎস। তবে দেখা যায় অনেক তেল ও মসলায় ভুনা ছোলা খেয়ে উপকারের থেকে অপকার বেশি হয়। ছোলা সারারাত ভিজিয়ে রাখলে ভালো এবং সিদ্ধ ছোলার সাথে পেঁয়াজ, মরিচ, শশা, টমেটো ইত্যাদি মিশিয়ে অথবা সামান্য তেলে ছোলার খাবার করে খেলে তা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। কাঁচা ছোলা খেলেও অনেক খাদ্য আঁশ ও প্রোটিন পাওয়া যায়।

মিষ্টান্ন

শুধু জিলাপি বা বুন্দিয়া নয়, ইফতারে স্বাস্থ্যকর মিষ্টান্ন পরিমিত পরিমাণে খাওয়া যেতে পারে। জিলাপি বা বুন্দিয়া তেলে ভেজে সিরায় ফেলা হয় যা বেশি খেলে ক্ষতিকর। তাই দুধের তৈরি মিষ্টি জাতীয় খাবার যেমন ফালুদা, কার্স্টাড, পুডিং , ফিরনি ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে।

অন্যান্য খাবার

চিড়া দই ইফতারের জন্য খুব ভালো। যা কার্ববোহাইড্রেট, প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম দেয়। এছাড়া দই বড়া, নুডলস, স্যান্ডউইচ, রুটি-কাবাব, মম ইত্যাদি ইফতারের ম্যানুতে রাখা যেতে পারে। এ ছাড়া শশা থাকলে ভালো।

পরিমিত খাবার ও সহজে হজমযোগ্য খাবার ইফতারে খেলে শারীরিকভাবে ভালো থাকা যায়।

মনে রাখবেন, ঘরে তৈরি খাবার ইফতারকে অনেক স্বাস্থ্যকর করে তোলে। ভাজা-পোড়া ও বাইরের খাবার তাই অবশ্যই এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন।