এনবিআর চেয়ারম্যানকে চেম্বারের একগুচ্ছ বাজেট প্রস্তাবনা

অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের হাতে একগুচ্ছ প্রস্তাবনা দিয়েছেন চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম।

রোববার (২০ মার্চ) সকালে আগ্রাবাদের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রাক বাজেট মতবিনিময় সভায় এসব প্রস্তাবনা তুলে দেন।

চেম্বার সভাপতি বলেন, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি চেম্বারের পক্ষ থেকে শুল্ক সংক্রান্ত ৮৪, ভ্যাট বিষয়ে ২২, আয়কর সংক্রান্ত ১০২টি প্রস্তাব এনবিআরে পাঠানো হয়েছে।

চেম্বার সভাপতি দ্রব্যমূল্য বাড়ায় আয়কর সীমা ৩ লাখ থেকে বাড়িয়ে ৪ লাখে, নারী ও ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বের করদাতাদের সীমা সাড়ে ৪ লাখে উন্নীত করার প্রস্তাব দেন। পাবলিকলি ট্রেডেড নয় এমন কোম্পানির কর হার আড়াই শতাংশ কমিয়ে সাড়ে ২৭ শতাংশ, পাবলিকলি ট্রেডেড কোম্পানির করহার ২০ শতাংশ নির্ধারণ, সারচার্জে নিট পরিসম্পদ ২ কোটি বাড়িয়ে ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত শূন্য করার প্রস্তাব দেন।

চেম্বার সভাপতি লৌহ ও লৌহজাত পণ্য সেক্টরে সরবরাহ পর্যায়ে উৎসে কর কর্তনের হার ২ শতাংশ থেকে ১ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবি জানান। তিনি আয়কর আইনের ৫৩ ধারা অনুযায়ী স্ক্র্যাপে কর হার টন প্রতি ৫০০ টাকা থেকে কমিয়ে ১০০ টাকায় হ্রাস করা ও চূড়ান্ত নিষ্পত্তি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার অনুরোধ জানান।

এলপি গ্যাস শিল্পে বিক্রয় পর্যায়ে বিক্রীত মূল্যের ওপর আরোপিত ৭ শতাংশ হারে ভ্যাট বাদ দিয়ে এর পরিবর্তে আমদানি পর্যায়ে প্রতি কেজি ২ টাকা ট্যারিফ ভ্যাট প্রবর্তনের প্রস্তাব করেন মাহবু্বুল আলম।

চেম্বার সভাপতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের নিম্নস্তর মূল্য বিভাজন পদক্ষেপ অনুয়ায়ী দেশি ও বিদেশি সিগারেটের প্রতি শলাকায় দামের মধ্যে কমপক্ষে ১ টাকা পার্থক্য করে দাম নির্ধারণ বা পরের অর্থবছরের বাজেট অনুযায়ী নিম্নস্তর শুধু দেশি কোম্পানির জন্য সংরক্ষণের প্রস্তাব দেন।

চেম্বার সভাপতি মেডিক্যাল ডিভাইস অ্যান্ড সার্জিক্যাল ইনস্ট্রুমেন্টস উৎপাদনকারী শিল্প বেগবান করতে উপকরণ আমদানি পর্যায়ে কাস্টমস ডিউটি ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দেন।

তিনি ২ কোটি মানুষ কোনো না কোনো ভাবে কিডনি রোগে আক্রান্ত উল্লেখ করে দরিদ্র ও হতদরিদ্র রোগীদের জন্য বিদ্যমান হাসপাতাল ও ক্লিনিকে মানসম্মত ডায়ালাইসিস সেন্টার স্থাপনে বিশেষ বরাদ্দের দাবি জানান।

সভায় উপস্থিত ছিলেন এনবিআর সদস্য মাসুদ সাদিক, বিজিএমইএ, চিটাগাং উইম্যান চেম্বার,
কক্সবাজার, রাঙামাটি চেম্বারের সভাপতিসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামের বড় শিল্প কারখানা ও বাণিজ্য সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

বিজিএমইএর প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, এইচএস কোডের কারণে সমস্যায় পড়ছি। এটা সহজ করতে হবে। ৪ কোটি মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ পোশাক শিল্পের সঙ্গে জড়িত। তাই ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ, ইজি অব ডুয়িং বিজনেসকে শিল্পকে পৃষ্ঠপোষকতা দিতে হবে।

উইম্যান চেম্বারের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আবিদা সুলতানা বলেন, কোভিডের কারণে নারী উদ্যোক্তাদের ক্ষতি হয়েছে বেশি। অবিক্রীত পণ্যের স্তূপ তাদের ঘরে। তাদের আয়কর সীমা বাড়াতে হবে। নতুন নারী উদ্যোক্তাদের ঋণ দিতে হবে। অনলাইন ব্যবসায়ীদের জন্য নীতিমালা দরকার।

সারাদেশের শুল্ক স্টেশনে অভিন্ন শুল্কহার নির্ধারণের প্রস্তাব দেন সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের আলতাফ হোসেন বাচ্চু।