রুশ সেনাদের লাশ সত্যিই কি হাওয়ায় উড়ে যায়

যুদ্ধে অংশ নেওয়া সেনাদের মরদেহ তাৎক্ষণিকভাবে পুড়িয়ে ফেলার জন্য রাশিয়া গাড়িতে ‘শ্মশান’ প্রস্তুত করেছে। দ্য টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ওই গাড়িতে মানবদেহ ‘বাষ্পীভূত’ করার জায়গা রয়েছে বলে একটি ভিডিওতে দেখা গেছে।

এর আগে যুদ্ধক্ষেত্রে সৈন্যদের অনুসরণ করার জন্য এই ‘শ্মশান গাড়ি’ পাঠানো হয় বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস। তিনি বলেন, এই ধরনের সিস্টেমের ব্যবহার ক্রেমলিনের ভবিষ্যত যেকোনো যুদ্ধের ক্ষতি ধামাচাপা দেওয়ার একটি উপায় হতে পারে।

এর সমালোচনা করে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস বলেন, ‘আমি যদি রাশিয়ার সেনা হতাম এবং জানতাম যে, সেনাদের আমার প্রতি কোনো আস্থাই নেই, তাই যুদ্ধের ময়দানে পিছনে একটি চলমান শ্মশানও পাঠানো হয়েছে, তবে চিন্তায় পড়ে যেতাম’।

তিনি আরও বলেন, ‘ওই সেনার মা-বাবা হলেও চিন্তা হতো। কারণ যুদ্ধের ময়দানে চলমান শ্মশান পাঠানোর অর্থ, যুদ্ধে ক্ষয়ক্ষতির মতো বিষয়টিই ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে’।

এমওডি’র পক্ষ থেকে প্রকাশ করা ভিডিওতে বলা হয়, এই গাড়ি বিপজ্জনক জৈবিক বর্জ্য ধ্বংসের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছিল। সেন্ট পিটার্সবার্গের ট্যুরম্যালিন নামের একটি সংস্থা এটি সরবরাহ করে।

প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, এটি ‘দ্য রাশিয়ান ইনসিনারেটর কোম্পানি’।

দ্য টেলিগ্রাফের পক্ষ থেকে কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগকরার চেষ্টা করা হলেও তার উত্তর পাওয়া যায়নি।

ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই বর্হিবিশ্বের পাশাপাশি রাশিয়ার ভেতরেও সমালোচনার ঝড় উঠেছে। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন তারই দেশের বহু নাগরিক। এবার শ্মশান গাড়ির ছবি নিয়ে নেটমাধ্যমে শোরগোল হওয়ার পর সরব হয়েছেন রাশিয়ার বহু সেনার মায়েরাও।

রুশ সেনার মায়েদের নিয়ে গঠিত একটি কমিটির দাবি, তাদের ছেলেদের ঠকিয়ে ইউক্রেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বলা হয়েছিল, ইউক্রেন সীমান্তে তাদের সামরিক মহড়ার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তবে সেখানে যাওয়ার পর সরাসরি তাদের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের ময়দানে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে।

ইউক্রেনে ৪৩০০ রুশ সেনা নিহত
রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেনের সেনারা। রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) চতুর্থ দিনের মতো যুদ্ধ চলছে। এই যুদ্ধে রুশ ক্ষয়ক্ষতির একটি তালিকা প্রকাশ করেছেন ইউক্রেনের উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী হানা মালিয়া। এক ফেসবুক পোস্টে তিনি দাবি করেন, এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৩০০ জন রুশ সেনা নিহত হয়েছেন।

তবে বিবিসি এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি। রাশিয়াও এখন পর্যন্ত হতাহতের কোনো সংখ্যা প্রকাশ করেনি।

ইউক্রেনের মন্ত্রীর দেওয়া তালিকায় ২৭টি বিমান, ২৬টি হেলিকপ্টার, ১৪৬টি ট্যাংক, ৭০৬টি সাঁজোয়া যান, ৪৯টি কামান, ১টি বুক এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, ৪টি গ্র্যাড রকেট লঞ্চ সিস্টেম, ৩০টি যানবাহন, ৬০টি ট্যাঙ্কার, ২টি ড্রোন ও ২টি নৌকা ধ্বংসের কথা বলা হয়।