ফ্রেন্ডস এসোসিয়েশনের দশম মিলন মেলা সম্পন্ন

মির্জা ইমতিয়াজ শাওন :: ঘুমহীন রাত পেরিয়ে কুয়াশার চাঁদর ঠেলে ভোরের আলো ফুটতেই বন্ধুদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে পুরো ক্যাম্পাস। পুরনো বন্ধুদের সমাগমে মিলন মেলায় পরিণত হয় উৎসবস্থল। উত্তর চট্টগ্রামের শীর্ষস্থানীয় বিদ্যাপীঠ ফতেয়াবাদ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়। পুরোনো স্মৃতিকে সাথে করে ক্যাম্পাসে যান উৎফুল্ল পুরোনো ছাত্রদের দল। কখনও মনের অজান্তে উঁকি মারে মাঠে চষে বেড়ানো, খেলায় মশগুল থাকা, টিফিন পিরিয়ডের কোলাহল কিংবা দিঘির পাড়ের গাছ তলার আড্ডা। স্মৃতির সাথে মাখামাখি করে বন্ধুদের সাথে মাখামাখিতে উৎসবমুখর পরিবেশে ফ্রেন্ডস এসোসিয়েশন আয়োজিত ১০তম মিলন মেলা বাঁধভাঙা আনন্দ–উচ্ছ্বাসে সম্পন্ন হয়েছে।

গতকাল ৭ জানুয়ায়ী শুক্রবার ১৯৯৯-২০০০ এসএসসি ব্যাচ নিয়ে গড়া সামাজিক ও অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান ফ্রেন্ডস এসোসিয়েশন আয়োজিত দশম মিলন মেলা বেশ জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে হয়ে গেল।

দুই পর্বের এই পিকনিকে ১ম পর্ব ছিল বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী দর্শনীয় স্থানগুলোর একটা ময়নামতির শালবন বিহার এবং ২য় পর্বে ছিল ম্যাজিক প্যারাডাইস ভ্রমণ। আয়োজনের এক ফাকে শুভ কামনা চট্টগ্রাম এর বিশেষ পর্ব (পর্ব ২৩) সব অংশ গ্রহনকারীদের নিয়ে ধারন করা হয়। বিশেষ পর্বটিতে ফ্রেন্ডস এসোসিয়েশনের একটা সংক্ষিপ্ত পরিচিতি তুলে ধরে ফ্রেন্ডস এসোসিয়েনের জন্য শুভ কামনা ও মানবিক কাজের জন্য সদস্যদের ধন্যবাদ জানানো হয়।

আয়োজকেরা জানান, বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে বন্দীদশা থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার বাসনায় আয়োজন করা হয় মনোমুগ্ধকর এ পুনর্মিলনী। বন্ধুত্বের বন্ধনে একসঙ্গে রব চিরজীবনে এ শ্লোগানে সবাই যেন এদিন একাকার হয়ে যান। পরিচয় সবার যেন একটা সেটা হলো আমরা স্কুল বন্ধু। এবার বন্ধুদের স্বতস্ফূর্ত ও প্রাণবন্ত অংশগ্রহণ মিলন মেলাকে করেছে সাফল্য মন্ডিত!
মিলনমেলার অন্যতম আকর্ষণ ছিলো বিশেষ হলুদ রং এর গিফট হ্যাম্পার (যেটায় ভরা ছিলো বন্ধুদের সৌজন্যে দেয়া গিফট সমূহ)। ওড়না ফ্যাশন (মহিউদ্দিন ), নিশান শাড়ি এন্ড বুটিকস (মো: আলমগীর) এবং প্রবাসী বন্ধু মহিউদ্দিন এর সৌজন্যে এবারের মিলন মেলার সুদৃশ্য টি-শার্ট। খান ফুডস(রাসেল) এর সৌজন্যে সিরাসিকের লগো অংকিত মগ। যোগেশ ও মহিউদ্দিন এর সৌজন্যে এক্সপোর্ট কোয়ালিটির ক্যাপ। প্রবাসী বন্ধু মোর্শেদ এর সৌজন্যে লগো খচিত কাপরের মাস্ক। মাসুদ ও সাজ্জাদ এর সৌজন্যে মজাদার সকাল-বিকেলের নাস্তা । সালাউদ্দিন আলী নুর মিন্টুর সৌজন্যে র‍্যাফল ড্র এর আকর্ষনীয় সব পুরুষ্কার । বা’বুল কাবা হজ কাফেলার (শাওন) এর সৌজন্যে লগো খচিত চাবির রিং, ক্যালেন্ডার ও গিফটের প্যাকেটের। খ্যাতি মান বাবুর্চির সম্মানী মিটায় ডা. রাসেল আইচ। ফয়সাল এর সৌজন্যে কোল্ড ড্রিংকস পানি ও মিষ্টি দই। এস কে রাজিবের সৌজন্যে পরিশোধ করা হয় পিকনিক স্পট ফি। ফারুক এর সৌজন্যে ব্যানার এবং প্রবাসী বন্ধু ড. জাহেদের বিশেষ স্পনসর তো ছিলই। মিন্টু, মাসুদ, মোরশেদ, জাহাঙ্গীর, দিপু, রাজিব, মইনুলের পরিশ্রম ছিল চোখে পড়ার মতো।

যাওয়া-আসার পথে মিন্টু, মিজান, মইনুল, তারেক, জাহেদের অসাধারণ সুন্দর সুন্দর গান, আরমানের কৌতুক আযোজনকে করেছে প্রাণবন্ত ।

অপেক্ষা করতে হবে আবার একবছর, ইনশাআল্লাহ আবার হবে।

“প্রিয় মুখের সব মিলন মেলা আজ,
পরেছো সবাই বাহারি রঙের সাজ;
তারুণ্যের আভা ফুটে সব চেহারায়,
চির সবুজের নদে ঢেউ খেলে যায়।
তারাগুলো আজ দিনের আলোতে,
নেমে এলো ধরায় আলো বিলাতে;
চিরকালের বন্ধন আমাদের মাঝে,
আলোর শিখা হয় সকাল সাঁঝে।
এই দিন যেন আবার ফিরে আসে,
তারাগুলো ফের সবার আশে পাশে;
বছর ঘুরে ফের সোনালী আলোয়,
মিলন মেলায় মোরা একসাথে হই ।
হৃদয়ের ব্যাকুলতা জমিয়ে আবার,
অপেক্ষায় বুক বাঁধি বন্ধু সবার;
আমাদের চাঁদ তারা নামবে তটে,
ফুটবে সুখের ফুল সবার ললাটে।”

(লেখক: মির্জা ইমতিয়াজ শাওন, নির্বাহি সম্পাদক- দৈনিক প্রিয় চট্টগ্রাম ও সদস্য- ফ্রেন্ডস এসোসিয়েশন)

তথ্য সহায়তা- অনুপম হায়াত দিপু ও জাহাঙ্গীর, ছবি- গাজি সালাউদ্দিন ও ফ্রেন্ডস এসোসিয়েশন সদস্যবৃন্দ