রাশিয়ান নাবিকের আত্ম বিসর্জন মৈত্রীর বন্ধনকে মর্যাদাপূর্ণ ও সুদৃঢ় ভিত্তি দিয়েছে

রাশিয়ান নাবিক রেডকিনের স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা নিবেদনকালে মেয়র

আজ শনিবার অপরাহ্নে রাশিয়ার রাস্ট্রদূত এইচ.ই.মিং আলেক্সন্ডার ম্যানটিটাক্সি (ঐ.ঊ.গৎ.অষবীধহফবৎ গধহঃুঃংশরু) চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর সাথে টাইগারপাসস্থ চসিকের অস্থায়ী ভবনে তাঁর কার্যালয়ে সাক্ষাত শেষে মেয়র সহ লালদীঘি পার্কে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের নাবিক ইউরিজ রেডকিনের স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন। উল্লেখ্য, ইউজিন রেডকিন ১৯৭৩ সালে মুক্তিযুদ্ধকালীণ সময়ে হানাদার বাহিনী কর্তৃক কর্ণফুলীর বন্দর চ্যানেলে পুঁতে রাখা মাইন সরাতে গিয়ে আকস্মিক বিস্ফোরনে প্রাণ হারান।
সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন নাবিকের আত্ম বিসর্জনকে দুই বন্ধু রাস্ট্রের মৈত্রীর বন্ধনকে মর্যাদাপূর্ণ ও সুদৃঢ় ভিত্তি দিয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের কুটনৈতিক অবদান ও ভূমিকা, বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের সময় হানদার বাহিনীর বন্ধু রাষ্ট্রদের যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক ভেটো প্রদানের ঘটনাটি ইতিহাসের পাতায় একটি স্বাধীন জাতি সত্তার অভ্যূদয়ের অন্যন্য নজির হিসেবে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
তিনি আরো বলেন, একাত্তরে হানাদার বাহিনী তাদের পরাজয় নিশ্চিত জেনে নবউদিত বাংলাদেশের অর্থনীতি পঙ্গুকরার অসৎ উদ্দেশ্যে কর্ণফূলীর বন্দর চ্যানেলে শত-শত মাইন পুঁতে রাখে। চট্টগ্রাম বন্দর চ্যানেলকে সচল করার জন্য চ্যানেলটিকে মাইন মুক্ত করতে তৎকালীণ সোভিয়েত ইউনিয়ন বাংলাদের আহ্বানে সাড়া দেন এবং তাদের নাবিকদের একটি দলের মাইন মুক্ত করার সফল অভিযানের ফলশ্রুতিতে চট্টগ্রাম বন্দর চ্যানেল আশঙ্খা মুক্ত হয়ে গতিশীলতা ফিরে পায়। এজন্য রেডকিনের আত্মত্যাগ আমরা কখনো ভূলতে পারিনা। তিনি শুধু বন্ধু নন, বাঙালির পরামাত্মীয়।
রাশিয়ান রাষ্ট্রদূত বলেন, চট্টগ্রামে আমরা প্রথম সফর। এখানকার প্রাকৃতি সৌন্দয্য দেখে আমি মুদ্ধ হয়েছি। স্বাধীনতার পর খুব কম সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘাতকদের হাতে নির্মম ভাবে খুন হওয়ায় বাংলাদেশের উন্নতি ও অগ্রগতিতে ভাঁটা পড়ে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণতা ও দূরদর্শি নেতৃত্বে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এই দেশটি এখন সারাবিশে^ উন্নয়নের রোড মডেল। এ জন্য বন্ধু রাস্ট্র হিসেবে আমরা গর্বিত। রাশিয়ার সহযোগিতায় পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপিত হচ্ছে। এর কাজ সম্পন্ন হলে বাংলাদেশ পারমানবিক শক্তির অংশ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি এতদিন পরও তাদের নাবিক রেডকিনকে স্মরণ রাখায় বাংলাদেশের জনগনের প্রতি বিশেষ করে সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন-চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলম, সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম, রাশিয়ান অনারারী কনসাল স্থপতি আশিক ইমরান, রুমকি সেন গুপ্ত প্রমুখ।