দেশের প্রতিটা মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে গেছে

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া জেলে থাকা অবস্থায় তার শরীরে স্লো পয়জনিং করা হয়েছিল কিনা- সরকারের কাছে এমন প্রশ্ন রেখেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে সুচিকিৎসার দাবিতে জাতীয়তাবাদী যুবদল আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এসব প্রশ্ন রাখেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে সরানোর জন্য এক এগারোতে যেমন ষড়যন্ত্র হয়েছিল, চক্রান্ত হয়েছিল, সেই চক্রান্তের অংশ হিসেবে তাকে একটি মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের একটা পরিত্যক্ত ভবনে, স্যাঁতস্যাঁতে একটি ঘরের মধ্যে তাকে প্রায় দুই বছর আটক করে রাখা হয়েছিলো। এর পরে তাকে পিজি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল।

 

সেখানেও তাকে কোনো চিকিৎসা দেয়া হয়নি। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার শরীরে যে রোগের সূত্রপাত হয়েছিল, আজকে অনেকের মধ্যে একটা প্রশ্ন এসেছে, সেদিন কি বেগম খালেদা জিয়াকে স্লো পয়জনিংয়ের কোন ব্যবস্থা করা হয়েছিল? আমরা এটা পরিষ্কার করে জানতে চাই। কারণ এদের (সরকার) পক্ষে কোনো কিছুই অসম্ভব নয়।

সম্প্রতি কুমিল্লায় কাউন্সিলরসহ দু’জনকে গুলি করে হত্যার ঘটনা দেশের জন্য অশনি সংকেত মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, এই সরকার দেশকে একটা নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

 

তারা এখন নিজেরা নিজেদের উপর হামলা চালাচ্ছে। কুমিল্লায় কমিশনারকে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করা হয়। এটা একটি অশনি সংকেত। তিনি বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে, আমরা এমন এক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করছি। যাদের কাজ হচ্ছে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা, মানুষকে হত্যা করা এবং আমাদের সমস্ত স্বপ্নগুলোকে ভেঙ্গে চুরমার করা। এর জন্য আমাদের এই যুদ্ধে সাবধান এবং কৌশলীভাবে যেতে হবে।

আপনাদের সঙ্গে আমি একমত, আমরা চাই আজকেই এই সরকারকে ঘাড় ধরে ফেলে দেই। সবাই চাই, এদেশের প্রত্যেকটা মানুষ চায়। শুধু, আমি, আপনি, বিএনপি না দেশের প্রতিটা মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। যদি আমরা ভুল করি তাহলে আমরা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাব। সুতরাং আমাদের প্রতিটি পদক্ষেপ অত্যন্ত ধৈর্যের সঙ্গে সাহসের সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে। বেগম খালেদা জিয়ার অবস্থা সম্পর্কে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তিনি অত্যন্ত অসুস্থ। ডাক্তাররা বলছেন, আমাদের জ্ঞান প্রায় শেষ। আমরা এখানে এর বেশি কিছু করতে পারবনা।

 

চিকিৎসকরা বলছেন, অবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানো দরকার। শেখ হাসিনা তা শুনতে চায় না। আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা বলছে মানবিক কারণে তাকে বিদেশে যেতে দেয়া উচিত। আর সারা দেশের সাধারণ মানুষ থেকে সব পেশার মানুষ তো বলছেই। কিন্তু শেখ হাসিনা এটা শুনতে চান না। কারণ তার মধ্যে প্রতিহিংসা। বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনীতি নয়, জীবন থেকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য চক্রান্ত করছে।

 

জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নিরব এর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোরতাজুল করিম বাদরু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন হাসান, মহানগর উত্তরের সাবেক সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর, ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি আলমগীর হাসান সোহান প্রমূখ।