মুহুর্মুহু করতালি। ফুল, স্মারক, সনদ, উপহার প্রদান।
সেরা করদাতার স্বীকৃতি পাওয়া গর্বিত চেহারায় খুশির ঝিলিক। সেই আনন্দ উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়ে পরিবারের সদস্য, স্বজনসহ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে উপস্থিত সবার মধ্যে।
বুধবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও কক্সবাজারের ৪২ জন সেরা করদাতার সম্মাননা অনুষ্ঠানের চিত্রটা ছিল এমন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, কর দিয়ে যারা দেশের উন্নয়নকে এগিয়ে নিচ্ছেন তাদের সামাজিকভাবে সম্মান দেওয়া হলে বড় স্বীকৃতি হবে।
তিনি বলেন, ভিশন নিয়ে কাজ করছেন প্রধানমন্ত্রী। এর জন্য ভ্যাট ট্যাক্স দিতে হবে। কিন্তু ব্যবসায়ীদের হয়রানি থেকে মুক্তি চাই। আমরা ভ্যাট দেব ট্যাক্স দেব হয়রানিমুক্ত ভ্যাট ট্যাক্স দেব। স্বেচ্ছায় দেশের উন্নয়নে ভ্যাট, ট্যাক্স দেব।
প্রতিটি উপজেলায় কর অফিস চালুর জন্য প্রস্তাব দিয়ে চেম্বার সভাপতি বলেন, তাহলে করদাতা বাড়বে।
সেরা করদাতা সম্মাননা অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক ও কর অঞ্চল-১ এর কমিশনার সৈয়দ মোহাম্মদ আবু দাউদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন কর কমিশনার (অঞ্চল-৪) এমএম ফজলুল হক।
শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন কর কমিশনার একেএম হাসানুজ্জামান, কর আপিল কমিশনার মঞ্জু মান আরা বেগম, ভ্যাট কমিশনার মোহাম্মদ আকবর হোসেন, কর কমিশনার (অঞ্চল ৩) মো. মাহমুদুর রহমান, মেট্রোপলিটন চেম্বার সিএমসিসিআই পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, কর আইনজীবী সমিতির সভাপতি এনায়েত উল্লাহ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, দেশের উন্নয়নের চাবিকাঠি অভ্যন্তরীণ উৎসের রাজস্ব। উন্নত সভ্য জাতি গড়তে হলে কর দিতে হবে। করদাতা, গ্রহীতা ও সরকার একসূত্রে গাঁথা। কর সম্পর্কিত আইন কঠিন। এটি সহজ সরল ও জটিলতামুক্ত করতে হবে। তাহলে করদাতাদের ভীতি, হয়রানি কমবে। আয়কর দেওয়ার প্রক্রিয়া আরও সহজ করতে হবে। ট্রেড ফ্যাসিলিটি বাড়াতে হবে। কর অফিস বিকেন্দ্রীকরণ করে সেবার পরিধি বাড়াতে হবে।
সেরা করদাতা নাদের খান বলেন, যারা কর দেন তাদের ওপর বার বার হামলা হয়। আমরা যদি ভীতিতে থাকি করের আওতা বাড়বে না। ফটিকছড়িতে আমার চা বাগান আছে। সেখানে নিয়মিত যাতায়াত করি। এখন ভিলেজ ইকোনমি ভাইব্রেন্ট। ভ্যাট নিয়ে অনেকের ভীতি আছে। কর কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। ভ্যাটের আদি রীতি মডিফাই করে এখানে চালু করা হয়েছে। কর দিতে ইচ্ছে হবে যদি সঠিক উন্নয়ন অব্যাহত থাকে। যা উন্নয়ন হবে তা পরিচর্যাও করতে হবে। করদাতা ও গ্রহীতা একই মাটির সন্তান, কেউ কারও প্রতিদ্বন্দ্বী নই।
সেরা করদাতা কাজল কান্তি দাশ বলেন, এ দেশে জন্মেছি এ দেশে মরবো। এ দেশকে ভালোবাসতে হবে। কর দিচ্ছি দেশের উন্নয়নের জন্য। কারও লাইসেন্স ব্যবহার করে কেউ যেন বৈষম্যমূলক ঠিকাদারি কাজ নিতে না পারে সেদিকে নজর দিতে হবে।
অনুষ্ঠানে করোনায় মারা যাওয়া কর কর্মকর্তা ইমরান হোসেনের স্ত্রী নাজমা আকতার ও মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসকে স্মারক তুলে দেন সৈয়দ মোহাম্মদ আবু দাউদ।
সঞ্চালনা করেন সহকারী কমিশনার আমিরুল ইসলাম ও তাসনিম আফরিন।