অক্টোবরে চা উৎপাদন হলো

করোনাকালেও বেড়েছে বাংলাদেশে চায়ের উৎপাদন। গত অক্টোবরে ১৪ দশমিক ৫৭ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদন হয়েছে বাংলাদেশে।

যা অতীতের যেকোনো মাসের উৎপাদন রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে। মূলত অনুকূল আবহাওয়া, সরকারের আর্থিক প্রণোদনা, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও চা বোর্ডের নিয়মিত মনিটরিং, বাগান-মালিক ও শ্রমিকদের নিরলস প্রচেষ্টার ফলে এ রেকর্ড অর্জিত হয়েছে। বাংলাদেশ চা বোর্ড সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে দেশের ১৬৭টি চা বাগান এবং ক্ষুদ্রায়তন চা বাগানে ৭৯ দশমিক ৩৩ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, কোভিড পরিস্থিতিতেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় দেশের সব চা-বাগানের সার্বিক কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। এ ছাড়া চা শিল্পের জন্য বাগানগুলোকে ১২০ কোটি টাকা আর্থিক প্রণোদনা বিতরণ, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চা নিলামকেন্দ্র চালু রাখা, চা রফতানির ক্ষেত্রে প্রণোদনা, সঠিক সময়ে ভর্তুকি মূল্যে সার বিতরণ, চা শ্রমিকদের নির্ধারিত সময়ে মজুরি পরিশোধ, রেশন এবং স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণের ফলে এ বছর চায়ের উৎপাদন অনেক ভালো হয়েছে। অক্টোবর মাসে রেকর্ড উৎপাদন চা শিল্পের জন্য একটি মাইলফলক।

তিনি জানান, কোভিড পরিস্থিতিতেও উৎপাদনের এ ধারাবাহিকতা থেকে এটাই প্রতীয়মান হয় যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ চা বোর্ড, বাগান মালিক, চা ব্যবসায়ী ও চা শ্রমিকদের ধারাবাহিক প্রচেষ্টার ফলে চা শিল্পের সক্ষমতা অনেক বেড়েছে।

ক্ষুদ্রায়তন চা চাষিদের কাঁচা চা পাতা সংগ্রহের সুবিধার্থে বান্দরবান সদর উপজেলার শ্যারণ পাড়ায় গত ১৬ নভেম্বর ‘সম্প্রীতি লিফ কালেকশন সেন্টার’ উদ্বোধন করা হয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের অর্থায়নে নির্মিত লিভ কালেকশন সেন্টারের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে জেনারেল অফিসার কমান্ডিং, ২৪ পদাতিক ডিভিশন ও চট্টগ্রাম এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল মো. সাইফুল আবেদীন প্রধান অতিথি এবং বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম বিশেষ অতিথি ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেজর জেনারেল মো. সাইফুল আবেদীন বান্দরবান পার্বত্য এলাকায় নৃগোষ্ঠী চা চাষিদের জন্য ভবিষ্যতেও বিভিন্ন কার্যক্রমে সহায়তার আশ্বাস দেন।

মেজর জেনারেল মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, সম্প্রীতি লিফ কালেকশন সেন্টার চালুর ফলে এ অঞ্চলের ক্ষুদ্রায়তন চা চাষিদের কাঁচা চা পাতা সংগ্রহ এবং তা নির্দিষ্ট সময়ে চা কারখানায় পাঠানো অনেক সহজ হবে। এতে কাঁচা পাতা থেকে তৈরি চায়ের মান ও গুণাগুণ বজায় থাকবে।

বান্দরবানে উৎপাদিত চা’কে ব্যাপক পরিচিতির জন্য স্পেশাল চা হিসেবে ‘বান্দরবান টি’ নামে ব্রান্ডিং করার বিষয়ে চা বোর্ডের পরিকল্পনার কথাও তিনি জানান। এ ছাড়া বান্দরবানের ক্ষুদ্র পর্যায়ের চা চাষে বাংলাদেশ চা বোর্ডের চলমান সহায়তা সবসময় অব্যাহত থাকবে বলে চাষিদের আশ্বস্ত করেন।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ৬৯ পদাতিক ব্রিগেডের ব্রিগেড কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল খন্দকার জিয়াউল হক, বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. মোহাম্মদ আলী, বাংলাদেশ চা বোর্ডের উপ-পরিচালক (পরিকল্পনা) মুনির আহমদ, সিএইচটি প্রকল্পের পরিচালক সুমন সিকদার, বান্দরবান চা চাষি কল্যাণ সমবায় সমিতির নেতাসহ ক্ষুদ্রায়তন চা চাষি, বান্দরবানের বিভিন্ন মৌজার হেডম্যান-কারবারিরা।