এ‌গি‌য়ে চলার প্রেরণায় মহাকা‌লের মহাক্ষ‌ণে বাংলা‌দেশ

আলহাজ্ব এম. রেজাউল ক‌রিম চৌধুরী::

মহাকা‌লের মহাক্ষ‌ণে প্রিয় বাংলা‌দেশ।বাংলা‌দেশের মু‌ক্তি সংগ্রা‌মের মহানায়ক, রাজনী‌তির মহাক‌বি, স্বাধীন সার্ব‌ভৌম বাংলা‌দে‌শের মহান স্থপ‌তি জা‌তির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মু‌জিবর রহমা‌নের জ‌ন্মের শতবা‌র্ষিকী পূর্ণ হল। অর্ধশত বছ‌রে প্রবেশ করল বঙ্গবন্ধুর স্ব‌প্নের স্বাধীন বাংলা‌দেশ।ই‌তিহা‌সের এ মহালগ‌নে চট্টগ্রাম মহানগরবাসী‌কে জানাই আমার আন্তরিক শু‌ভেচ্ছা ও অ‌ভিনন্দন।

সমৃদ্ধতর সমাজ ও দেশ গঠ‌নের প্রেরণা নি‌য়ে এক‌টি মাইলফলক অ‌তিক্রম কা‌লে আ‌মি জা‌তির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মু‌জিবর রহমান ও তার প‌রিবার, জাতীয় চার নেতাসহ মহান মু‌ক্তিযু‌দ্ধের সকল শহীদ, সম্ভ্রম হারা সকল মা বোন, যুদ্ধাহত ও যুদ্ধজয়ী মহান মু‌ক্তি‌যোদ্ধা‌দের সশ্রদ্ধ সালাম জা‌নি‌য়ে পেছ‌নের ই‌তিহাস ফি‌রে দেখ‌তে চাই।

২০০ বছ‌রের ব্রিটিশ শাসন ও শোষনের অবসান ঘ‌টি‌য়ে ১৯৪৭ সা‌লে স্বাধীনতা লাভ ক‌রে ভারত বর্ষ। দ্বিজা‌তি ত‌ত্বের ভি‌ত্তি‌তে সমগ্র ভারত বর্ষ থে‌কে সৃৃ‌ষ্টি হয় ভারত ও পা‌কিস্তান না‌মে পৃথক রাষ্ট্র। ভারত ব‌র্ষের পূর্বাং‌শের পূর্ব বাংলা তথা বর্তমান বাংলা‌দেশ‌কে জু‌ড়ে দেয়া হয় এ‌কেবা‌রের প‌শ্চিম অং‌শের প‌শ্চিম পা‌কিস্তা‌নের সা‌থে। ১৯৫৫ সা‌লে পূর্ব বাংলার নাম প‌রিবর্তন ক‌রে রাখা হয় পূর্ব পা‌কিস্তান । পুর্ব পা‌কিস্তা‌নের সা‌থে প‌শ্চিম পা‌কিস্তা‌নের দুরত্ব প্রায় ১৩০০মাইল। দৈ‌হিক গড়ন, ভাষা, সংস্কৃ‌তি, রাজনী‌তি,
খাদ্যাভ্যাস, পোশাক-প‌রিচ্ছদ কোন দিক থে‌কেই পূর্ব ও প‌শ্চিম পা‌কিস্তা‌নের মানু‌ষের কোন মিলই ছিলনা। লাগামহীন ছলনা, বঞ্চনা, শোষন, নিপীড়ন, নির্যাত‌ন আর বৈষ‌ম্যের কার‌ণে পূর্ব বাংলার মানুষ‌কে নানা প্রতিকুলতা, সংগ্রাম, সংঘাত ও রক্তাক্ত প‌থে স্বাধীনতার দি‌কে এগু‌তে হয়। ১৯৪৮ সা‌লে পা‌কিস্তান সরকার কর্তৃক উর্দূ‌কে পা‌কিস্তা‌নের একমাত্র রাষ্ট্র ঘোষনা করা হ‌লে জন্মল‌গ্নেই পা‌কিস্তা‌নের সা‌থে পূর্ববাংলার মত‌দ্বৈততার শুরু হয়।

১৯৫২ সা‌লের ভাষা আ‌ন্দোল‌নের মাধ্যমে সূ‌চিত স্বাধীনতার আকাঙ্খা থে‌কে ৫৪`র ‌নির্বাচন, ৬২`র শিক্ষা আ‌ন্দোলন, ৬৬`র ৬দফা, ৬৯`র গণঅভ্যূত্থান, ৭০`র নির্বাচন ও সর্বকা‌লের সর্ব‌শ্রেষ্ট বাঙা‌লি, জা‌তির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মু‌জিবর রহমা‌নের ডা‌কে সাড়া দি‌য়ে মু‌ক্তিকামী বাঙা‌লি ৭১`র মহান মু‌ক্তিযু‌দ্ধে ত্রিশ লাখ শহীদ, দুই লাখ মা বো‌নের ইজ্জত ও হাজা‌রো মু‌ক্তি‌যোদ্ধার পঙ্গুত্ব বর‌ণের পর ছি‌নি‌য়ে আ‌নে মহান গৌরবময় বিজয়। পৃ‌থিবীর বু‌কে সৃ‌ষ্টি হয় স্বাধীন বাংলা‌দেশ। কিন্তু বাঙা‌লি তার স্বাধীনতার পূর্ণ স্বাদ পা‌চ্ছিল না। কারণ, যার না‌মে সারা জা‌তি একই জাতীয়তাবা‌দে এক‌টি স্বাধীন ভূখ‌ন্ডের জন্য প্রাণপন লড়াই ক‌রে‌ছে সেই মহামানব প্রিয় বঙ্গবন্ধু মু‌জিব তখ‌নো পা‌কিস্তা‌নের কারাগা‌রে বন্দী।

পা‌কিস্তা‌নের কারাগার থে‌কে মুক্ত হ‌য়ে ১৯৭২ এর ১০ জানুয়ারী বাঙ্গালির প্রা‌ণের নেতা, স্বাধীনতা সংগ্রা‌মের মহানায়ক, ই‌তিহা‌সের রাখাল রাজা জা‌তির জনক বঙ্গবন্ধু দে‌শে প্রত্যাবর্তন ক‌রেন।যুদ্ধ বিধ্বস্ত এক‌টি দেশ। নেই অবকাঠা‌মো, ভঙ্গুর অর্থনী‌তি, খা‌দ্যের অভাব। বঙ্গবন্ধু শূন্য থে‌কে শুরু ক‌রেন দেশ গঠ‌নের কাজ। মাত্র তিন বছ‌রেই বঙ্গবন্ধুর অসীম ম‌নোবল, প্রজ্ঞা ও দুরদর্শী নেতৃ‌ত্বে বাংলা‌দে‌শের অর্থ‌নৈ‌তিক প্রবৃ‌দ্ধি হয়ে‌ছিল ৭.৪ শতাংশ।

স্বাধীনতা অর্জ‌নের ৫০তম বছ‌রে আমরা দে‌খি, যে প‌শ্চিম পা‌কিস্তান এই পূর্ব বাংলা‌কে শোষ‌নের মধ্য দি‌য়ে এক‌টি চলমান অর্থ‌নৈ‌তিক প্রক্রিয়ায় ছিল সেই পা‌কিস্তান আজ সব সূচ‌কে ৪৯বছর আ‌গে শূণ্য থে‌কে শুরু করা বাংলা‌দেশ থে‌কে অ‌নেকটাই পি‌ছি‌য়ে প‌ড়ে‌ছে।

বঙ্গবন্ধুর দুরদৃ‌ষ্টি সে‌দিন বু‌ঝে‌ছিল ধ‌র্মান্ধতায় ডু‌বে থাকা প্রবঞ্চক যুদ্ধবাজ পাকি‌দের সা‌থে থাক‌লে এ জা‌তি অন্ধ গহ্ব‌রে নিম‌জ্জিত হ‌বে। তাই তি‌নি সংগ্রা‌মের প‌থে স্বাধীনতা‌কে বাঙা‌লির ব্রত ক‌রে তু‌লে‌ছি‌লেন।

কো‌ভিড ১৯ এর ধকল সাম‌লেও বাংলা‌দে‌শের প্রবৃ‌দ্ধি আজ ৫ শতাং‌শের উ‌র্ধে অর্থাৎ ৫.২৪ শতাংশ আর পক্ষান্ত‌রে পা‌কিস্তা‌নের প্রবৃ‌দ্ধি ১ শতাং‌শেরও নি‌চে।

বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০১৮-১৯ অর্থবছ‌রে প্রবৃ‌দ্ধি হ‌য়ে‌ছিল ৮.১৫ শতাং‌শে। আর পা‌কিস্তা‌নের প্রবৃ‌দ্ধি ছিল মাত্র ৩.২৯শতাংশ।

স্বাধীনতার পরা‌জিত শত্রু ও স্বার্থা‌ন্বেষী মহ‌লের প্রত্যক্ষ মদদ ও প্ররোচনায় বিপথগামী সেনা কর্তৃক ১৯৭৫ এর ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু‌কে সপ‌রিবা‌রে নৃশংসভা‌বে হত‌্যা ক‌রে বাংলা‌দে‌শের উন্নয়ন অগ্রগ‌তি‌কে স্থ‌বির ক‌রে দেয়া না হ‌লে বাংলা‌দেশের আজ‌কের যে অবস্থান, সেই উজ্জ্বল অবস্থান হ‌তে পারত আ‌রো দুই দশক আ‌গেই। বঙ্গবন্ধুকন্যা রাষ্ট্র প‌রিচালনার দা‌য়ি‌ত্বে আসার আ‌গে বঙ্গবন্ধু সরকা‌রের ৭.৪ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সেই রেকর্ড ৪০ বছর পর্যন্ত কোন সরকারই স্পর্শ কর‌তে পা‌রে‌নি। ২০০১-২০০৬ সালে বিএনপি আমলে বিশ্ব অর্থনীতির পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর গড় প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশ থাকা সত্ত্বেও দেশের গড় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ছিল ৫ দশমিক ৪ শতাংশ। বঙ্গবন্ধুর দর্শন ও দিক নি‌র্দেশনা অনুযায়ী রাষ্ট্র প‌রিচা‌লিত হওয়ায় গত দশ‌কে বাংলা‌দেশ এ‌গি‌য়ে‌ছে অশ্বগ‌তি‌তে।

বিগত অর্থবছর (২০১৯-২০) শেষে দেশের মানুষের মাথাপিছু গড় আয় দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৬৪ ডলার আর পা‌কিস্তা‌নের মাত্র ১১৩০ ডলার। তার আগের অর্থবছরে মাথাপিছু গড় আয় ছিল ১৯০৯ ডলার। ২০০৯ সা‌লে শেখ হা‌সিনার সরকার গঠনের সময় এ রিজার্ভ ছিল মাত্র ৭০৩ মাকির্ন ডলার।

২০০৮-৯ সা‌লে বৈদেশিক র্মদ্রার রিজার্ভ ৭,৪৭০.৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর জন‌নেত্রী শেখ হা‌সিনার বিচক্ষন নেতৃ‌ত্বে বাংলা‌দে‌শে বৈ‌দে‌শিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ৪২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গে‌ছে, আর পা‌কিস্তা‌নের রিজার্ভ ২১ বি‌লিয়ন ডলা‌রের কম। বাংলা‌দে‌শের মানু‌ষের গড় আয়ু ৭২ বছর আর পা‌কিস্তা‌নের ৬৭বছর। বাংলা‌দে‌শে শিশু মৃতু‌্যর হার ২৫ শতাংশ আর পা‌কিস্তা‌নের ৫৯ শতাংশ। বাংলা‌দে‌শের মানু‌ষের প্রাথ‌মিক শিক্ষার হার শতকরা ৯৮ভাগ আর পা‌কিস্তা‌নের মাত্র ৭২ভাগ। বাংলা‌দে‌শে প্রাই‌ভেট ব‌্যাং‌কের সংখ‌্যা ৪৪‌টি আর পা‌কিস্তা‌নে মাত্র বাইশ‌টি। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের হয়ে এ এম এ মুহিতের প্রথম বাজেট ছিল ২০০৯-১০ অর্থবছরে। ওই অর্থবছরের বাজেট ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ১৭০ কোটি টাকা। এবারে ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাজেটের আকার দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩০ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। অর্থাৎ এই দশ‌কে বা‌জে‌টের আকার বে‌ড়ে‌ছে ৪ গুন।

২০০৯ সা‌লে দে‌শে বিদ্যু কেন্দ্র ছিল ২৭ টি এখন ১১৩টি নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্র যুক্ত হ‌য়ে এ সংখ্যা দাঁ‌ড়ি‌য়ে‌ছে
১৪০ টি‌তে। বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ছিল ৪,৯৪২ মেগাওয়াট এখন বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৩,৭৭৭ মেগাওয়াট। গ্রামীন অবকাঠা‌মোসহ সা‌র্বিক অবকাঠা‌মোগত উন্নয়ন হ‌য়ে‌ছে অভাবনীয় মাত্রায় প্রত্যেক উপ‌জেলায় এই দশ‌কে প্রায় গ‌ড়ে ৫০‌কো‌টি টাকারও বেশী টাকার অবকাঠা‌মো উন্নয়ন হ‌য়ে‌ছে।

এছাড়া মহসড়ক গু‌লো‌কে চার লে‌নে উন্নীতকরণ, যমুনা বহুমুখী সেতু বাস্তবায়ন সহ সারা‌দে‌শে অসংখ্য সেতু নির্মান, চলমান পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মান, কর্ণফুলী টা‌নেল, রাজধানী‌তে মে‌ট্রো রেল, ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ গুরুত্বপূর্ণ শহ‌রে ফ্লাই ওভার, এ‌লি‌ভে‌টেড এক্স‌প্রেস ও‌য়ে নির্মান দে‌শের অবকাঠা‌মোর চিত্রকে সম্পূর্ণ পা‌ল্টে দি‌চ্ছে।

৪ হাজার ৫৫৫টি ইউনিয়ন পরিষদে স্থাপিত ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে প্রযুক্তির সেবা পৌঁছে গে‌ছে দেশের তৃণমূ‌লে । কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যন্ত পোর্টালের সংখ্যা প্রায় ২৫ হাজার। দেশের সবক’টি উপজেলাই ইন্টারনেটের আওতাধীন। টেলিযোগাযোগ উন্নয়‌নের ফলে বর্তমানে বাংলাদেশে মোবাইল ফোন গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় ১৩ কোটি, ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৪ কোটি। কেনাকাটা থেকে শুরু করে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ, এমনকি ব্যাংকিং কার্যক্রম এখন ঘরে বসেই অতি অল্প সময়ের মধ্যে করা সম্ভব হচ্ছে। প্রায় ১৮ কোটি জনসংখ্যার এ দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও খাদ্য রপ্তানি করছে বাংলা‌দেশ। বিগত বছরগুলোতে ধানের উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ৫০ লাখ টন।

প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে নিবিড় সমন্বিত ব্যবস্থাপনা, বৈশ্বিক মহামারি, দারিদ্র্য দূরীকরণে যথাযথ ভূমিকা, বৃক্ষরোপণ ছাড়াও বিশেষত শিক্ষা সুবিধা, নারীর ক্ষমতায়ন, শতভাগ বিদ্যুৎ সংযোগ, উন্নত যাতায়াত ব্যবস্থা, মাতৃ ও শিশু মৃত্যুহার হ্রাস করা, দরিদ্র মানুষের জন্য স্বাস্থ্য সুবিধা নিশ্চিত করা- প্রভৃতি জনহিতকর কার্যক্রমের জন্য বর্তমান বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে এক অনন্য নজির হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত প্রায় ১৬ লাখ মানুষ মারা গেলেও। বাংলাদেশে এ সংখ‌্যা ৭০০০এর কম। জাতিসংঘ বাংলাদেশে দুই মিলিয়ন মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যেতে পারে ব‌লে ধারণা ক‌রে‌ছিল। বিচক্ষন নেত্রী শেখ হা‌সিনার সম‌য়ো‌চিৎ পদ‌ক্ষে‌পে বাংলা‌দেশ তেমন ক্ষ‌তির সম্মূখীন হয়‌নি। সরকারী, বেসরকারী ও আন্তর্জা‌তিক বি‌ভিন্ন সংস্থা ও দপ্ত‌রের সমীক্ষায় উ‌ঠে আসা উপ‌রোক্ত তথ‌্যা ও প‌রিসংখ‌্যান বি‌শ্লেষন ক‌রে বলা যায় বঙ্গবন্ধু‌কে য‌দি হত‌্যা করা না হত এবং আওয়ামী লীগ য‌দি রাষ্ট্র প‌রিচ‌লিনায় থাকত ৮০র দশ‌কেই বাংলা‌দেশ হত উন্নয়‌নে বি‌শ্বের বিষ্ময়। আর স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী‌তে আজ বাংলা‌দেশ হ‌তে পারত উচ্চ আ‌য়ের দেশ।

স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীতে নতুন আশায় বুক বাঁধতে চাই, গ্লানি মুছে, দুর্যোগ কাটিয়ে বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থেই বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। কিন্তু আমা‌দের পর্য‌বেক্ষ‌নে আমরা যা বু‌ঝি, অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি ধর্মীয় রাজনীতি এবং তার থেকে উৎপত্তি হওয়া চরম উগ্রবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা। ধর্মান্ধতা, চরম সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদী মতাদর্শের রাষ্ট্রীয় নীতির কারণেই পাকিস্তান আজ তলানিতে এবং ব্যর্থ রাষ্ট্র।

বঙ্গবন্ধু হত্যার বে‌নি‌ফি‌সিয়ারী গোষ্ঠীর প্রত্যক্ষ মদ‌দে স্বাধীনতা বি‌রোধী ধর্মীয় মৌলবাদীদের যে বিস্তার এ দে‌শে হ‌য়ে‌ছে শুধু তার বিস্তার রোধ নয়, জঙ্গী মৌলবাদ‌কে নি‌শ্চিহ্ন ক‌রেই বাংলা‌দেশ‌কে এ‌গি‌য়ে নি‌তে নতুন প্রজন্ম জন‌নেত্রী শেখ হা‌সিনার পা‌শে থাক‌বে এই আশাবাদ ব্যক্ত কর‌ছি।

দেশবাসীর সমর্থন বঙ্গবন্ধু কন্যা জন‌নেত্রী শেখ হা‌সিনা ও আওয়ামী লী‌গের সা‌থে থাক‌লে এবং বর্তমা‌নে বঙ্গবন্ধু কন‌্যার ঘো‌ষিত ভিষন ২০৪১ এর আ‌লো‌কে দেশ যে গ‌তি‌তে এ‌গি‌য়ে যা‌চ্ছে তা‌তে কোন স‌ন্দেহ নেই অ‌চি‌রেই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা হ‌বে ক্ষুধা, দা‌রিদ্র, বেকারমুক্ত উচ্চ আ‌য় সম্পন্ন উন্নত এক‌টি রাষ্ট্র।

নবদিগ‌ন্তের সূচনায় এ শুভ প্রত্যাশা নি‌য়ে সকল‌কে জানাই প্রাণঢালা শু‌ভেচ্ছা ও অ‌ভিনন্দন। জয় বাংলা,জয় বঙ্গবন্ধু,জয়তু শেখ হা‌সিনা,বাংলা‌দেশ চিরজী‌বি হোক।

লেখক: আলহাজ্ব এম. রেজাউল ক‌রিম চৌধুরী, বীর মু‌ক্তি‌যোদ্ধা, মেয়র, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন
ও সিনিয়র যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ।