চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থগিত হওয়া পরীক্ষা শুরু

শিক্ষার্থীদের টানা তিন মাস আন্দোলনের পর করোনার কারণে স্থগিত হওয়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বিভিন্ন বিভাগের পরীক্ষা অবশেষে শুরু হয়েছে।

ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনিস্টিউট অব ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস ৮ ও ৯ ডিসেম্বর ৮ম সেমিস্টারের মৌখিক পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে।

এছাড়া প্রাণিবিদ্যা বিভাগ ১৩ থেকে ১৯ ডিসেম্বরের মধ্যে ল্যাব ও মৌখিক পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করেছে। রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগ আগামী ২০ ডিসেম্বর থেকে চতুর্থ বর্ষের স্থগিত হওয়া পরীক্ষাসমূহ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

এর আগে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর থেকে ‘স্থগিত’ পরীক্ষাসমূহ নেওয়ার দাবিতে আন্দোলন শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের শুরুতে একাধিকবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে স্মারকলিপি দেয় তারা।

শিক্ষার্থীদের এ দাবিতে সম্মতি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগও একটি স্মারকলিপি দেয় প্রশাসনকে।

সবমিলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে চার দফায় স্মারকলিপি, তিন দফায় মানববন্ধন এবং সর্বশেষ গত ১ ডিসেম্বর আমরণ অনশনের ঘোষণা দিয়ে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয় ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী সংসদ, চবি’।

পরবর্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিলে অনশন কর্মসূচি স্থগিত করা হয়। ডিসেম্বরের তিন তারিখ পরীক্ষার বিষয়ে অনুষদের ডিন অফিসে নোটিশ পাঠায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. আনোয়ারা বেগম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী এবং সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষার্থীরা স্বশরীরে পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে।

তিনি বলেন, ২০ ডিসেম্বর থেকে রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের ৪র্থ বর্ষের অসমাপ্ত পরীক্ষাগুলো শুরু হবে। এছাড়া ৩য় বর্ষের অসমাপ্ত পরীক্ষাগুলোর বিষয়েও আলোচনা চলছে।

এদিকে পরীক্ষা চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলসমূহ খোলার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. মো. আতিকুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরীক্ষা চলাকালে কোনো আবাসিক হল খোলা হবে না। শিক্ষার্থীরা যদি এসে পরীক্ষা দিতে রাজি হয়, তবেই বিভাগ পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করবে।

তিনি বলেন, সর্বোচ্চ সতর্কতার অংশ হিসেবে অনেকগুলো বিভাগের পরীক্ষার তারিখ যেন একই দিনে না পড়ে, সে দিকেও আমরা নজর রাখবো।

চবি সম্মিলিত শিক্ষার্থী সংসদের মুখপাত্র মো. ফোরকানুল আলম  বলেন, আমাদের আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য ছিলো যেসব বিভাগের চতুর্থ বর্ষের কয়েকটি পরীক্ষা স্থগিত হওয়ায় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন চাকরি পরীক্ষায় আবেদন করতে পারছে না, সেই পরীক্ষাগুলো নেওয়া।

তিনি বলেন, ইতিমধ্যে শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অনেক বিভাগ দ্রুত সময়ে পরীক্ষাগুলো নিচ্ছে এবং অনেক বিভাগ প্রস্তুতি নিচ্ছে। আশা করি সব বিভাগ শীত এবং করোনার প্রকোপ বাড়ার আগেই পরীক্ষাগুলো নেবে।