কামারপল্লীতে বাজছে টুং টাং শব্দ, তবুও বিক্রি নেই

এ.এম হোবাইব সজীব, মহেশখালী: টুং টাং শব্দে মুখরিত মহেশখালী ও বদরখালীর কামার পল্লী। ঈদকে সামনে রেখে মহেশখালীর-বদরখালী বাজারের কামারদের ব্যস্ত সময় কাটছে এখন। অন্যান্য সময়ের তুলনায় তাদের কাজের চাপও এখন একটু বেশি। দিনরাত সমানতালে কাজ করছেন তারা। শেষ মুহুর্তের ব্যবসায়িক কর্ম ব্যস্ততায় সময় পার করছেন এ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কামার‘রা।

অপরদিকে একই চিত্র দেখা গেছে পাশ্ববর্তী বদরখালী ইউনিয়নেও।

কর্মকারদের সাথে কথা বলে জানাযায়, ঈদুল আযহা এলেই তাদের ব্যস্ততা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। এতে অনেক খুশি তারা। তবে ঈদ ছাড়া বাকি দিনগুলোতে তাদের তেমন একটা ব্যস্ততা থাকে না বললেই চলে। বছরের অন্যান্য সময় তাদের দিনে ৫/৬ শত টাকা আয় হয় আবার কোনা কোন দিন হয়ই না। সে তুলনায় এখন আয় কয়েকগুণ বেড়ে গেলেও গত বছরের ঈদের আয়ের তুলনায় এখন অনেক কমে গেছে করোনার প্রভাবে বলে জানান। বদরখালী বাজারের কর্মকার বাবু চন্দ্র নামে এক কামার জানান, তাদের এ কাজে কয়লার চাহিদা রয়েছে প্রচুর। বর্তমানে কয়লা পাওয়া খুবই কঠিন। তাছাড়া দামও বেশি। পাশাপাশি লোহার দামও বেশি। সরকার সুলভ মূল্যে কাচাঁমাল কেনার নীতিমালা সহ আর্থিক সহযোগীতায় ঋণের ব্যবস্থা করে দিলে ব্যবসায়ীক ভাবে সফলতার মুখ দেখা যেত।

মহেশখালীর ও বদরখালীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, কেউ তৈরি করছে দা, কেউ বা তৈরি করছে চাপাতি আবার কেউ কেউ তৈরি করছে ছুরি। আবার কেউ পুরাতনগুলোর শান দিচ্ছেন এবং নতুনগুলো সারিবদ্ধভাবে দোকানের সামনে সাজিয়ে রেখেছেন বিক্রির উদ্দেশে। বদরখালী বাজারের একজন কামার জানান, নতুন চাপাতি ১০০০টাকা থেকে ১২০০টাকা, দা ৫০০ টাকা থেকে ৯০০ টাকা, চাকু ৭০ টাকা, ১০০ টাকা থেকে ১২০টাকা, খুন্তি ৪০ টাকা, শাবল ১৫০থেকে ২০০, হাতা ৫০ টাকা থেকে ৯০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছি। তিনি আরো জানান, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে আমাদের ব্যবসা এখন খুব ভালো চলছে ও আগের তুলনায় লাভ খুবই কম। এ ঈদকে সামনে রেখে আমরা মোটা অংকের টাকা বিনিয়োগ করে থাকি এবং সেখান থেকে উপার্জিত অর্থে আমরা সারা বছর সংসার চালাই। তাই এখন সারাদিন সারারাত ধরে আমরা পরিশ্রম করে যাচ্ছি। এতে আমাদের উপার্জনও মোটামুটি ভালই হচ্ছে। কিন্তু এবার লাভের মূখ দেখব কিনা সন্দিহান।

মহেশখালীর উপজেলার কালারমারছড়া বাজারের এক কর্মকার জানান, নতুনের চাইতে তারা পুরানো দা ছুরি শান দিয়ে নতুন করে তোলার কাজে বেশি আগ্রহ নিয়ে এখন ভিড় জমাচ্ছেন কামারের দোকানে। এ সময় দোকানে দা, বটি শান দিতে আসা শিমুল জানান, কামারদের কাজের নির্দিষ্ট কোন মূল্য তালিকা না থাকার কারণে তারা নিজেদের ইচ্ছে মতো দাম নিচ্ছে।

মহেশখালী-বদরখালী বিভিন্ন দোকানে কর্মরত কর্মকাররা জানান, অন্যান্য পেশার মতো আমাদের কোন সংগঠন না থাকায় আমরাও বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা হতে বঞ্চিত হচ্ছি।