নির্বাচ‌নে সাংবা‌দিক‌দের নিরাপত্তার দা‌বি

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচ‌নের দি‌নে ও নির্বাচ‌নের প‌রে সাংবা‌দিক‌দের নিরাপত্তা এবং নবাবগ‌ঞ্জে সাংবাদিক‌দের ওপর হামলার বিচা‌রের দা‌বি জা‌নি‌য়ে‌ছে সাংবাদিক সমাজ।

শুক্রবার (২৮ডিসেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি সামনে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির উদ্যোগে নবাবগঞ্জে সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদ ও নির্বাচনকালীন নিরাপত্তার দাবিতে আ‌য়ো‌জিত মানববন্ধনে তারা এ দাবি জানান।

মানববন্ধ‌নে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশ‌রে সভাপতি রুহুল আমিন গাজী বলেন, ‘আমরা পেশাদার সাংবাদিকরা একটি পরিবার। আমরা এ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চাই না। ক্ষমতায় বসাতে চাই না। আমরা সত্য ঘটনা তুলে ধরতে চাই। সরকারের পক্ষে ও বিপক্ষে যাক আর না যাক আমরা আমা‌দের দা‌য়িত্ব পালন কর‌বো। ত‌বে যারা সাংবা‌দিক‌দের উপর হামলা ক‌রে তারা সু‌যোগ সন্ধানী। তাই আমা‌দের সাংবা‌দিক সমাজ‌কে ঐক্যবদ্ধ হ‌য়ে কাজ কর‌তে হ‌বে।’

‌তি‌নি ব‌লেন, ‘সাংবাদিকদের যত হত্যা করা হয়েছে তার মধ্যে একজনের বিচার হলে বাকিগু‌লো হ‌তো কিন্তু এক‌টিরও বিচার করা হয় নাই জন্য আজ সাংবা‌দিরা নির্যাত‌নের শিকার হ‌চ্ছে।’

নবাবগঞ্জে সাংবাদিকরা তাদের দায়িত্ব পালন করতে গেছে তাদের ওপর হামলা করা হয়েছে তা ন্যক্কারজনক উল্লেখ ক‌রে তি‌নি ব‌লেন, ‘একটা সময় আসবে গোটা দেশের সাংবাদিক ঐক্যবদ্ধ হ‌বে। তখন সাংবা‌দিক‌দের উপর কেউ হামলা নির্যাতন কর‌তে পার‌বে না। আর এ সময়টা বেশী দূ‌রে না।’

এসময় তি‌নি নির্বাচন ক‌মিশন ও আইনশৃংখলা বা‌হিনীর উদ্দেশ্যে ব‌লেন, ‘৩০ তা‌রিখ নির্বাচন ঐদিন সাংবা‌দিকরা তা‌দের দা‌য়িত্ব পালন কা‌লে য‌দি নির্বাচনের দিন এবং পরবর্তীকালে সাংবাদিকদের ওপর হামলা করা হয় তাহলে এর কঠোর জবাব দেয়া হবে।’

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন একাংশের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী ব‌লেন, ‘আগা‌মী ৩০ ডি‌সেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচন সেই নির্বাচন উপল‌ক্ষে সিইসি বলছে হাসপাতালগুলোকে রেডি করার জন্য। কিন্তু তা‌দের উচিত ছি‌লো যা‌তে কোন স‌হিংসতা না হয় তার ব্যবস্থা করা।’

সিইসির উদ্দেশ্যে ‌তি‌নি আরও ব‌লেন, ‘এই নির্বাচনে একজন সাংবাদিকও যেন নির্যাতনের শিকার না হয় তার ব্যবস্থা আপনারা কর‌বেন। এসময় তি‌নি নবাবগ‌ঞ্জের সাংবাদক‌দের ওপর হামলার নিন্দা ও হামলাকারী‌দের শা‌স্তির দা‌বি জানান।’

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন একাংশের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘সাংবাদিকের মধ্যে যে বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে। তার জন্য আমরা সাংবা‌দিকরাই ক্ষ‌তিগ্রস্থ হ‌য়ে‌ছি। ত‌বে আমরা য‌দি ঐক্যবদ্ধভা‌বে কাজ কর‌তে পা‌রি তাহ‌লে আমা‌দের ওপর হামলা নির্যাতন কর‌তে পার‌বে না কেউ।’

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি ইলিয়াস হোসেন বলেন, ‘সারাদেশে সাংবাদিকদের টুটি চেপে ধরা সংস্কৃতি চালু হয়েছে এটা কোন ধরনের রাষ্ট্র?’

‌তি‌নি ব‌লেন, ‘তবে যারা সাংবা‌দি‌ক‌দের ওপর হামলা করছে তারা সুবিধাবা‌দী লোক। তা‌দের প্রতিহত করার দা‌য়িত্ব প্রশাস ও সরকা‌রের ।

‌তি‌নি আরও ব‌লেন, ‘দে‌শে সাংবাদিকদের মত প্রকা‌শের স্বা‌ধীনতা রাখতে হবে। গণতন্ত্রকে রাখতে হবে। আর সেটা রাখতে সরকার কে পদ‌ক্ষেব নি‌তে হ‌বে আমাদের সাংবাদিক‌দের ঐক্যবদ্ধ হ‌তে হ‌বে।’

‌তি‌নি ব‌লেন, ‘সাগর-রুনি হত্যার পরে আমরা যে পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিলাম তা ধরে রাখতে পারলে তাহলে যে কোন দল বা সরকার তার সাংবা‌দিক‌দের হামলা হত্যার বিচার কর‌তে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে বাধ্য হতো।’

এসময় তি‌নি সাংবা‌দিক‌দের আহবান ক‌রে ব‌লেন, ‘চলুন আমরা সব বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হই, পরিকল্পিতভাবে কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করি তাহ‌লে সাংবা‌দিক‌দের মত প্রকা‌শের স্বা‌ধীনতা পা‌বে।’

মানববন্ধ‌নে আরও উপ‌স্থিত ছি‌লেন রি‌পোর্টার্স উই‌নি‌টির সা‌বেক সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন একাং‌শের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক কবির আহমেদ খান, ক্র্যা‌বের সাধারণ সম্পাদক দিপু সারওয়ার প্রমুখ।