শ্রদ্ধা জানাতে আসলেন না !

হায়রে জাতি, মাত্র কয়েকদিন আগে ১২৪ জন যাত্রীর জীবন যে পাইলট ক্যাপ্টেন নওশাদ কাইয়ুম রক্ষা করলেন, তাঁর মৃতদেহ দেশে বিমান বন্দরে আসার পর হাজার-হাজার জনতা শ্রদ্ধা জানাতে আসলেন না ! এর আগেও তাঁর দক্ষতায় ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর একই রুটে বেঁচেছিল যাত্রী, ক্রুসহ বিমানের ১৫০ মানুষের প্রাণ।
অথচ দেশের বারোটা বাজানো কোন রাজনৈতিক নেতাও অসুস্থ হলে বা মারা গেলে তখন কি ঘটে? আমি তুলনা করছিনা, তবে প্রশ্নটি মাথায় আসছে বারবার, তাই সবার সাথে শেয়ার করলাম । এটি আমাদের মূল্যবোধ আর চেতনাগত একটি প্রশ্ন । আর যাঁরা নিরবে মানুষের সেবা করে যান , তাঁদের বেশীরভাগ নিরবেই বিদায় নেন । যদিও মানুষের সম্মান বা স্বীকৃতির অপেক্ষায় তাঁরা থাকেন না, তারপরও নাগরিক হিসেবে আমাদের উচিত তাঁদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা যাতে অন্যরাও এতে উৎসাহিত হয় । এক্ষেত্রে সরকারী দ্বায়িত্বটা অনেক বেশী নয় কি? ক্যাপ্টেন নওশাদের জন্য একদিন জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা বা সারাদেশে অফিস-আদালতে, শপিং সেন্টারে ২ মিনিট নিরবতা পালন করা কি যায় না ? কিছুদিন আগে বাংলাদেশের প্রখ্যাত নিউরোলজিস্ট ডাঃ এল এ কাদেরী চলে গেলেন অনেকটা নিরবে । অথচ মুক্তিযুদ্ধের সময় যুক্তরাজ্যে তাঁর ভূমিকা, সেখান থেকে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে এসে নিউরোলজী চিকিৎসা সেবার সুযোগ ঢাকার পর চট্টগ্রামে করে দিতে আর নিজের জন্য ঢাকা বা বিদেশের সব বড় সুযোগ-সুবিধা বিসর্জন দিয়ে চট্টগ্রামে থেকে গেলেন আর নিউরোলজি বিভাগ প্রতিষ্ঠা করে লক্ষ মানুষকে সেবা দিলেন । অথচ আমাদের নতুন প্রজন্মের কাছে বিশেষ করে দেশের চিকিৎসা বিজ্ঞানের ছাত্রদের এবং তরুণ চিকিৎসকদের কাছে তিনি এবং এ ধরনের মানুষগুলো কেন অজানা থাকবেন ? এটা সব সেক্টরের জন্য প্রযোজ্য ।আমি যেটি বুঝাতে চাচ্ছি এটি সহজ একটি কাজ, সুন্দর সমাজ বিনির্মাণের স্বার্থে সরকারের দায়িত্ববানরা একটু সিষ্টেম করলেই বা নড়াচড়া করলেই কোন বড় খরচ ছাড়াই এসব সম্ভব । ক্যাপ্টেন নওশাদ এর মতো বীরদের জাতীয় সম্মাননা দেওয়া হলে তরুণ প্রজন্ম দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হবে। এই সাথে বলতে হয়, আকাশে বসে অসুস্থ হয়ে পড়লে তত্ক্ষণাৎ তিনি বিচক্ষনতার সাথে কো-পাইলট মোস্তাকিমের কাছে বিমানটির নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তর করেন
যিনি ভারতের মহারাষ্ট্রের নাগপুরের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইটটি জরুরি অবতরণ করান । তিনিও সম্মানিত হওয়া প্রয়োজন |