বছরের শেষ নাগাদ ইরাকে যুদ্ধ মিশন শেষ করবে যুক্তরাষ্ট্র

হোয়াইট হাউজে ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মুস্তাফা আল কাদিমির সঙ্গে বৈঠক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এরপর তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, এ বছরের শেষ নাগাদ ইরাক থেকে তার দেশের কমব্যাট মিশন বা যুদ্ধ মিশনের ইতি টানা হবে। তবে ইরাকি সেনাবাহিনীকে প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেয়ার জন্য কিছু সেনা অব্যাহতভাবে দায়িত্ব পালন করবে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। এতে আরো বলা হয়েছে, বর্তমানে ইরাকে আইএসের অবশিষ্টদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে স্থানীয় বাহিনীকে সহায়তার জন্য অবস্থান করছে ২৫০০ মার্কিন সেনা। কমব্যাট মিশন শেষ করা হলেও এই সেনা সংখ্যা একই থাকবে। তবে তাদের কার্যক্রম হবে শুধু ইরাকি প্রধানমন্ত্রীকে সাহায্য করা। গত বছর ইরাকের রাজধানী বাগদাদে ড্রোন হামলা করে যুক্তরাষ্ট্র হত্যা করে ইরানের শীর্ষ জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে।
এরপর থেকেই মার্কিন সেনাদের উপস্থিতি ইরাকের কাছে একটি বড় ইস্যু হয়ে উঠেছে। ইরানপন্থি রাজনৈতিক দলগুলো যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোটের সব সেনা প্রত্যাহার দাবি করে আসছে। তবে এরই মধ্যে শিয়া মিলিশিয়াদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করেছে। তারা বলেছে, এসব মিলিশিয়া ইরাকি সেনাঘাঁটিতে শত শত রকেট, মর্টার ও ড্রোন হামলা চালাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ শুরু করেছিলেন এমন আরেকটি যুদ্ধের এ বছর ইতি টেনেছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এ বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যে তারা আফগানিস্তান ত্যাগ করছে।
হোয়াইট হাউজে বক্তব্যকালে ইরাকি প্রধানমন্ত্রীকে বাইডেন বলেছেন, আমরা যেহেতু নতুন একটি পথে যাচ্ছি, তাই আমাদের সন্ত্রাস বিরোধী সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। জবাবে কাদিমি বলেন, যেকোনো সময়ের চেয়ে বর্তমানে আমাদের সম্পর্ক অধিক শক্তিশালী। আমাদের সহযোগিতা হলো অর্থনীতি, পরিবেশ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সংস্কৃতি এবং আরো অনেক কিছুর জন্য। তিনি উল্লেখ করেন, ইরাকে আর বিদেশি যোদ্ধা সেনা প্রয়োজন নেই।
উল্লেখ্য, ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনকে উৎখাত এবং তার কাছে থাকা ‘ব্যাপক বিধ্বংসী অস্ত্র’ নির্মূল করার জন্য ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ইরাকে হামলা চালানো হয়। কিন্তু ইরাকে কোনোদিনও সেই অস্ত্রের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। এরপর জর্জ ডব্লিউ বুশ প্রতিশ্রুতি দেন একটি অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ইরাক। কিন্তু ইরাক জাতিগত রক্তাক্ত বিদ্রোহে নিমজ্জিত হয়। রক্ত ঝরতেই থাকে ইরাকে। কার্যত যুক্তরাষ্ট্রের কমব্যাট সেনাদেরকে প্রত্যাহার করা হয় ২০১১ সালে। কিন্তু তারা তিন বছর পরে ইরাক সরকারের অনুরোধে আবার ফিরে আসে। ২০১৭ সালের শেষের দিকে ইরাকে আইএসকে সেনাবাহিনী পরাজিত করে। তারপরও ইরাকে আইএসের পুনর্গঠিত হওয়া প্রতিরোধে সহায়তার জন্য থেকে যায় মার্কিন বাহিনী।