বোয়ালখালীতে প্রস্তুত খামারীরা, দাম নিয়ে শঙ্কা

পূজন সেন, বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি : কোরবানির ঈদ ঘনিয়ে আসছে। ইতিমধ্যে গবাদিপশু বিক্রির জন্য প্রস্তুত রয়েছেন খামারীরা। তবে করোনা পরিস্থিতিতে ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন তারা। ঈদের বাকি মাত্র ১৬-১৭দিন। অথচ চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার গবাদিপশুর হাটগুলো শূন্য পড়ে রয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক দূরাবস্থার কারণে পশুখাদ্য ও লালনপালনে যে অর্থ ব্যয় হয়েছে তা পশু বিক্রি করে উঠবে কি না সেই চিন্তা জেঁকে বসেছে খামারীদের মাথায়। উপজেলার সারোয়াতলী ইউনিয়নের গরুর খামারী মুহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, ‘গোখাদ্যের মূল্য বেড়েছে। বাজারে ভূসি কেজি প্রতি ৪০ টাকা, সয়াবিন কেজি প্রতি ৫২ টাকা, মটরের ছোলা কেজি প্রতি ৬৫ টাকা, খৈল ৪৫ টাকা। এছাড়া প্রায় সব রকমের গোখাদ্যের দাম বাড়তি।’ তিনি বলেন, ‘ঈদের দিন ঘনিয়ে এসেছে। অথচ ক্রেতার দেখা নেই। যাও কয়েকজন এসেছে তারা যে দাম বলছেন তাতে খরচও উঠে আসবে না। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে ঋণ নিয়ে ৪টি গরু মোটাতাজা করেছি। ভালো দাম না পেলে লোকসান গুণতে হবে। খরণদ্বীপ এলাকার মৌসুমে গরু ব্যবসায়ী মো. মিজান জানান, উত্তরবঙ্গ থেকে বোয়ালখালীতে এবার ২১টি গরু এনেছেন। আরো গরু আনার জন্য রংপুরে তার লোক অবস্থান করছে। গরুর দাম সহনীয় পর্যায়ে থাকলেও লকডাউন চলায় হাট না মিলছে না। এতে অন্যান্য খরচ বেড়ে যাচ্ছে। বোয়ালখালীতে ৬টি গবাদিপশুর বড় হাট বসে। উপজেলার মুরাদ মুন্সির হাট, নুরুল্লাহ মুন্সির হাট, হাজীর হাট, কালাইয়ার হাট, চৌধুরী হাট ও শাকপুরা চৌমুহনী বাজার ঘুরে দেখা গেছে কোরবান উপলক্ষে গবাদিপশু বিক্রির প্রস্তুতি নেই। অনেকটাই ফাঁকা পড়ে আছে। অথচ ঈদের বাকি আর বেশিদিন নেই। বোয়ালখালী পৌরসভার কাউন্সিলর শেখ আরিফ উদ্দিন জুয়েল বলেন, ‘পৌরসভার মুরাদ মুন্সির হাটে পশু বিক্রি বিষয়ে এখনো প্রশাসনিক কোনো সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়নি। তবে বাজার বসানোর জন্য পৌরসভার সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে। বিগত অন্যান্য বছর এ সময়ে হাটে গবাদিপশু নিয়ে আসতেন বিক্রেতারা। ক্রেতা বিক্রেতায় জমজমাট থাকতো হাট। এবারের চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন।’ উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন ডা. আবদুল্লাহ আল মামুন সাগর বলেন, চলমান করোনা পরিস্থিতিতে খামারীদের সার্বিক সহযোগিতা করে যাচ্ছে সরকার। তাদেরকে ইতিমধ্যে গোখাদ্য ও ১ম পর্যায়ের প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আরো কয়েকটি ধাপে প্রণোদনা দেওয়া হবে। উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সেতু ভূষণ দাশ বলেন, এবারের কোরবানির জন্য বোয়ালখালীতে ৩৮ হাজার ২৯০টি গবাদিপশু প্রস্তুত রয়েছে। এর মধ্যে গরু ২৬হাজার ১০০টি, মহিষ ৪৪৫৬টি, ছাগল ৬হাজার ১২৯টি, ভেড়া ১হাজার ৬০৮টি। এছাড়া দেশের অন্যান্য এলাকা থেকেও বোয়ালখালীর হাটগুলোতে এক তৃতীয়াংশ গরু নিয়ে আসেন ব্যবসায়ীরা।