হাসিনা, এরদোগান, রুহানি, ইমরান খান বৈঠক আজ

উন্নয়নশীল আট মুসলিম রাষ্ট্রের জোট ডি-৮ এর দশম শীর্ষ সম্মেলনের চূড়ান্ত পর্ব আজ। বাংলাদেশের আয়োজনে গত সোমবার থেকে ভার্চ্যুয়ালি সম্মেলনের সিরিজ বৈঠক চলছে। করোনাকালীন পরিস্থিতির জন্য সদস্যভুক্ত রাষ্ট্রগুলোর রাষ্ট্র বা সরকার প্রধানরা সশরীরে ঢাকায় আসতে পারেননি। ফলে বিশেষ ওই সম্মেলনে আজ জোটের শীর্ষ নেতারা ভার্চ্যুয়ালি বৈঠকে বসছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শীর্ষ বৈঠকে ডি-৮ এর আগামী ১০ বছরের রোডম্যাপ নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। পূর্ব নির্ধারিত সূচি মতে, আজকের বৈঠকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেফ তাইয়্যেপ এরদোগান, ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রোহানি, ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো, নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদ বুহারি, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মুহিদ্দীন ইয়াসিন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও মিশরের প্রধানমন্ত্রী মোস্তাফা বাদবৌলির অংশ নেয়ার কথা রয়েছে। গত বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন জানান, এবারের শীর্ষ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করার পাশাপাশি বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ডি-৮ দেশের রাষ্ট্র বা সরকার প্রধানরা সম্মেলনে বক্তব্য দেবেন।
মন্ত্রী বলেন, শীর্ষ সম্মেলনের বর্তমান চেয়ার তুরস্কের কাছ থেকে বাংলাদেশ সভাপতির দায়িত্ব বুঝে নেবে। আগামী দুই বছর ঢাকা ওই দায়িত্ব পালন করবে। উল্লেখ্য, শীর্ষ সম্মেলনের আগে ৭ই এপ্রিল ১৯তম ডি-৮ কাউন্সিল অব মিনিস্টার্স এবং তার আগে ৫ থেকে ৬ই এপ্রিল ডি-৮ কমিশনের ৪৩তম সেশন হয়েছে। উদ্বোধনী দিনে (৫ই এপ্রিল) ডি-৮ বিজনেস ফোরাম এবং প্রথম ডি-৮ ইয়ুথ সামিট অনুষ্ঠিত হয়েছে। কাউন্সিল অব মিনিস্টার্সে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন। আজকের শীর্ষ সম্মেলনে বাণিজ্য, কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা, শিল্প সহযোগিতা এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, পরিবহন, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ এবং পর্যটন- এই ছয়টি ক্ষেত্রে আন্তঃ ডি-৮ সহযোগিতা বৃদ্ধিসহ আন্তর্জাতিক, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক বিষয়ে সম্মিলিত নীতিগত অবস্থান গ্রহণ করা হবে বলে জানান মন্ত্রী মোমেন। তিনি বলেন, দশম ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলন উপলক্ষে ফ৮ফযধশধ.পড়স নামে একটি ওয়েবসাইট চালু করা হয়েছে, যেখানে আগামী দুই বছর, অর্থাৎ বাংলাদেশের চেয়ার থাকাকালীন সময়ে বিভিন্ন তথ্য প্রকাশ করা হবে। সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে গৃহীত ‘রূপকল্প-২০২১’ এর মাধ্যমে একটি মধ্যম আয়ের দেশ এবং ‘রূপকল্প-২০৪১’ এর মাধ্যমে একটি উন্নত দেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন এবং আগামী দুই বছর সভাপতির দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে বাংলাদেশের উন্নয়নের এসব অভাবনীয় সাফল্যগাঁথা বিশ্বের দরবারে তুলে ধরার সুযোগ সৃষ্টি হবে। ওদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের ডি-৮ কমিশনের বৈঠকে আসন্ন দশম শীর্ষ সম্মেলনের ‘ঢাকা ঘোষণা-২০২১’ এবং জোটের আগামী ১০ বছরের কর্মপরিকল্পনার রোডম্যাপের বিষয়ে নীতিগতভাবে সম্মতি মিলেছে। পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন সচিব পর্যায়ের বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। তাছাড়া ডি-৮ পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বুধবারের সভায় ডকুমেন্ট দুটি অনুমোদন পেয়েছে। বৃহস্পতিবার শীর্ষ সম্মেলনে নেতাদের সম্মতিক্রমে তা গৃহীত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।