তরুণরা স্বপ্ন দেখার পাশাপাশি নেতৃত্বও সৃষ্টি করছে: তাজুল ইসলাম

দেশের তরুণরা স্বপ্ন দেখার পাশাপাশি নেতৃত্বও সৃষ্টি করছে বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে রেডিসন ব্লু চট্টগ্রাম বে ভিউতে জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল (জেসিআই) চট্টগ্রাম কসমোপলিটনের ‘চেইন হ্যান্ডওভার সিরোমনি ২০২১’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানটি।

মন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের তরুণরা স্বপ্ন দেখছে। সেই স্বপ্ন পূরণে নেতৃত্ব সৃষ্টি করছে। উন্নত জাতির বুনিয়াদ আছে, অতীত অাছে। আমাদের জাতি অনেক প্রতিকূলতা মোকাবেলা করেছে। জাতির পিতার নেতৃত্বে ৩০ লাখ শহীদ, ২ লাখ মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে স্বাধীন করেছেন। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার জন্য সোনার মানুষ চাই। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার স্তম্ভ ধ্বংস করে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। বিকৃত ইতিহাস পড়ে শিশুরা বড় হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের ক্ষুধা, দারিদ্র্য থেকে মুক্তি দিয়েছেন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছেন। একসময় সাবমেরিন কেবল বিনামূল্যে বসাতে পারতাম, বিএনপি বলল নিরাপত্তার জন্য হুমকি হবে। এখন ডিজিটাল দেশ হওয়ায় মানুষের আয় বেড়ে গেছে। আমাদের তরুণদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে। নিজেকে ভালোবাসলে মানুষকে, প্রতিবেশীকে ভালোবাসতো হবে।

মাথাপিছু আয়সহ বিভিন্ন সূচকের উন্নতির কথা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, আমাদের মেয়েরা এখন রাত ১০-১১টায়ও বাসে উঠে লাইন ধরে। মাগো চারটা ভাত দেন- এখন শুনি না। বাংলাদেশ অসম্ভব সম্ভাবনার দেশ। শেখ হাসিনার কারণে আমাদের মানুষ সম্পদে পরিণত হয়েছে। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ চলে গেছে, সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হয়ে গেছে। চট্টগ্রামে ২টি ফ্রুটসের দোকান ছিল। এখন গ্রামেও টিভি ফ্রিজের দোকান আছে। বিদেশি বিনিয়োগে অনেক কারখানা হবে। আমাদের ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ কারখানা গড়তে হবে। দারিদ্র্য খুঁজে পাওয়া যাবে না।

তিনি বলেন, আমি মনে করি না দুর্নীতি, অন্যায়, অপরাধ না করলে আমরা টিকে থাকব না। আমার বাবাকে প্রথম উপার্জনের টাকা দেওয়ার সময় বলেছিলেন, তোমার টাকায় সন্দেহ থাকলে আমাকে দিও না। সেই থেকে এখনো আমি অসৎ পথে রোজগার করিনি।

বিশেষ অতিথি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম বাংলাদেশের প্রবেশদ্বার। একসময় চট্টগ্রাম ব্যবসার ক্ষেত্রে দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছে। সেটা যেন আবার ফিরিয়ে আনতে পারি। চট্টগ্রামকে সুন্দর পরিকল্পিতভাবে গড়তে হলে সকলের দায়িত্ব রয়েছে। আমি ব্যবসায়ী, বুদ্ধিজীবী, ডাক্তার, পরিকল্পনাবিদ সবার পরামর্শ নিতে চাই। টেকসই উন্নয়নের জন্য যদি গ্রহণযোগ্য পরামর্শ হয় কাজে লাগাব। তরুণ ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানাব চট্টগ্রামকে গড়ে তুলতে দায়িত্ব পালন করুন। এ শহর আপনার আমার সবার।
কি নোট স্পিকার ছিলেন জেসিআই বাংলাদেশের সভাপতি নিয়াজ মোরশেদ এলিট। তিনি বলেন, আট বছর আগে জেসিআই নিয়ে কাজ শুরু করি। ২০১২ সালে শুরু করতে পেরেছি বলে আজ এত বেশি ইয়াং বিজনেস লিডার পেয়েছি। আজ আমার মনে শান্তির জায়গা তৈরি হয়েছে। অনেক তরুণ উদ্যোক্তার পণ্য, সেবা প্রদর্শন করতে পেরেছে জেসিআই। শুধু ব্যবসায়ী নন, পাশাপাশি সব তরুণদের প্রশিক্ষণ, উদ্বুদ্ধকরণ, গাইডলাইন দিতে হবে। দেশের জনসংখ্যার মধ্যে তারুণ্যের শক্তিটা যেন বিপর্যয়ে পরিণত না হয়।

জেসিআই চট্টগ্রামের তরুণ উদ্যোক্তাদের সমস্যা, সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলার, কাজ করার জন্য আহ্বান জানান তিনি।

স্বাগত বক্তব্যে জেসিআই চট্টগ্রাম কসমোপলিটনের বিদায়ী সভাপতি শহীদুল মোস্তফা চৌধুরী  মিজান বলেন, কোভিডের মধ্যেও আমরা বেশ কিছু কাজ করতে সক্ষম হয়েছি। গরিব মানুষদের মাস্ক ও স্যানিটাইজার দিয়েছি। দায়িত্ব পালনে যেসব প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়ী সংগঠন সহযোগিতা করেছেন সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আশাকরি, এ সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

বক্তব্য দেন জেসিআইর সহ সভাপতি মাহমুদুননবী বলেন, চট্টগ্রামকে বিজনেসের হাব বলা হয়। চট্টগ্রামের বিজনেস কমিউনিটিকে সংগঠিত করে একসঙ্গে পথচলার জন্য জেসিআই চট্টগ্রাম কসমোপলিটনের যাত্রা শুরু হয়েছিল। ইতিমধ্যে অনেক তরুণ বিজনেস লিডার উপহার দিয়েছে এ সংগঠন।

অনুষ্ঠানে জেসিআই চট্টগ্রাম কসমোপলিটনের সাবেক সভাপতি রইসুল উদ্দিন সৈকত, জসিম আহমেদ, মো. গিয়াস উদ্দিন, মাশফিক আহমেদ রুশাদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন বিদায়ী ও নতুন সভাপতি।

জেসিআই চট্টগ্রাম কসমোপলিটনের বিদায়ী সভাপতি শহীদুল মোস্তফা চৌধুরী মিজান চেইন হস্তান্তর করেন জেসিআই চট্টগ্রাম কসমোপলিটনের নবনির্বাচিত সভাপতি মো. টিপু সুলতান সিকদারকে।

অনুষ্ঠানে নতুন কমিটির নির্বাহী সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার এসএম ইশতিয়াক উর রহমান, সহ-সভাপতি রাজু আহমেদ, মোহাম্মদ জালাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সাহেদ, কোষাধ্যক্ষ মো. আশরাফ বান্টি, জেনারেল লিগ্যাল কনসাল জেসির চৌধুরী, স্পেশাল অ্যাসিস্ট্যান্ট টু প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ রুবায়েল শাফি, পরিচালক আয়াজ ইসলাম চৌধুরী, মো. আবু তৈয়ব, মোহাম্মদ ইসমাইল, সুদর্শন দেবাশীষ দাশ, ইঞ্জিনিয়ার এমএন আব্বাস আদনান ও মীর মোহাম্মদ নাসির এবং বিদায়ী কমিটির নেতৃবৃন্দের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন বিদায়ী সভাপতি।