মঙ্গল থেকে এল ভিডিও ও অডিও

মঙ্গল গ্রহে অতীতে প্রাণের অস্তিত্ব ছিল কি না, তার অনুসন্ধান করতে গত সপ্তাহে মঙ্গলপৃষ্ঠে অবতরণ করে নাসার পারসেভারেন্স নামের একটি মঙ্গলযান (রোভার)। মঙ্গলে নামার সেই দৃশ্যের প্রথম ভিডিও গতকাল সোমবার প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। লাল গ্রহে অভিযানের একটি অডিও প্রকাশ করা হয়েছে। পারসেভারেন্সের ধারণ করা ওই অডিওতে ঝাপটা বাতাসের শব্দ ধরা পড়েছে।

মঙ্গলপৃষ্ঠে অবতরণের সময় রোভারের একটি মাইক্রোফোন কাজ করছিল না। কিন্তু লাল গ্রহে অবতরণের পর এটি অডিওটি ধারণ করতে সক্ষম হয়। নাসার প্রকৌশলীরা ৬০ সেকেন্ডের ওই অডিওটি চালিয়ে দেখেছেন। পারসেভারেন্সের ক্যামেরা ও মাইক্রোফোন ব্যবস্থার প্রধান প্রকৌশলী ডেভ গ্রুয়েল বলেছেন, মাইক্রোফোনে ধারণ করা এবং পৃথিবীতে পাঠানো অডিওর ১০ সেকেন্ড মঙ্গলে ঝাপটা বাতাসের শব্দ শোনা গেছে।

মঙ্গল গ্রহ থেকে পাঠানো উচ্চমানের ভিডিও ক্লিপটিও তাক লাগানো। এটি ৩ মিনিট ২৫ সেকেন্ডের। ২১ দশমিক ৫ মিটার প্রস্থ লাল ও সাদা রঙের প্যারাসুটের সাহায্যে নাসার রোভারটির মঙ্গলপৃষ্ঠে নামার দৃশ্য ধরা পড়েছে ওই ভিডিওতে। রোভারের ভেতরে লাগানো ক্যামেরার সাহায্যে ভিডিওটি ধারণ করা হয়েছে।

ভিডিওতে দেখা গেছে, মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের সময় পারসেভারেন্সকে সুরক্ষা দিতে তাপ প্রতিরোধক ঢাল ব্যবহার করা হয়। বায়ুমণ্ডলের সুরক্ষিত পর্যায়ে পৌঁছানোর পর রোভারটি থেকে ঢালটি আলাদা হয়ে পড়ে যায় এবং রোভারটি লাল গ্রহের বিষুবরেখার কিছুটা উত্তরে জেজারো খাদের ধুলা-আচ্ছন্ন এলাকায় অবতরণ করে।

এই মঙ্গল অভিযানের ব্যবস্থাপনাকারী প্রতিষ্ঠান নাসার জেট প্রোপালশন ল্যাবরেটরির পরিচালক মাইকেল ওয়াটকিনস বলেছেন, ‘আমরা প্রথমবারের মতো মঙ্গলে অবতরণের মতো ঘটনার দৃশ্য ধারণ করতে সক্ষম হলাম। এগুলো আসলেই দারুণ ভিডিও। আমরা সারা সপ্তাহ ধরে এগুলোই দেখছি।’

নাসার বিজ্ঞানবিষয়ক সহযোগী প্রশাসক টমাস জারবুচেন বলেছেন, পারসেভারেন্সের অবতরণের ভিডিও দেখে মনে হচ্ছে, খুব নিকটেই মানুষও মঙ্গলে পা রাখতে পারবে।

মঙ্গল থেকে এল ভিডিও ও অডিও

গত বছরের ৩০ জুলাই পারসেভারেন্স রোভারটি লাল গ্রহে পাঠানো হয়। দীর্ঘ ছয় মাসের বেশি সময় ভ্রমণের পর গত বৃহস্পতিবার সফলভাবে মঙ্গলপৃষ্ঠে অবতরণ করতে সক্ষম হয় রোভারটি। রোভারের ভেতরে থাকা ইনজেনুইটি নামের একটি হেলিকপ্টার মঙ্গলপৃষ্ঠে ওড়ানো হবে। মঙ্গলে প্রথমবারের মতো এ রকম পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এই কাজে সফল হলে তা হবে মঙ্গল অভিযানের জন্য একটি বিস্ময়কর সফলতা।