ব্রডব্যান্ডকে বেছে নেয়ার প্রবণতা বাড়ছে

ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে ব্রডব্যান্ডকে বেছে নেয়ার প্রবণতা বাড়ছে।

করোনাকালীন ‘নিউ নরমাল’ জীবন-যাপনে প্রয়োজনের সঙ্গে সাশ্রয়ী ও মানসম্মত বিবেচনায় সর্বশেষ ৬ মাসে ব্রডব্যান্ডের সংযোগ বেড়েছে বেশ।

করোনার শুরুর মার্চ হতে সর্বশেষ হিসেবে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৭ মাসে মোবাইল ইন্টারনেট বেড়েছে ৭৩ লাখ ১০ হাজার। একই সময়ে ব্রডব্যান্ডের সংযোগ বেড়েছে ৫ লাখ ৭২ হাজার।

ব্রডব্যান্ডে প্রতি ১টি সংযোগের বিপরীতে ৪ জন ব্যবহারকারী গণনা করা হয়। সে হিসেবে ব্রডব্যান্ডে ব্যবহারকারী বেড়েছে ২৩ লাখের বেশি। অন্যদিকে মোবাইল ইন্টারনেটে প্রতিটি সিম সংযোগের বিপরীতে সাধারণত একজনই ইন্টারনেট ব্যবহারকারী থাকে।

বিটিআরসির সর্বশেষ হিসেবে দেশে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ১০ কোটি ২৪ লাখ ৭৮ হাজার আর ব্রডব্যান্ড ব্যবহারকারী ৮৬ লাখ ৫৬ হাজার।

ইন্টারনেট সেবাদাতাদের সংগঠন আইএসপিএবি এর সভাপতি এম এ হাকিম বলেন, ব্রডব্যান্ডে দেশে সাড়ে ৯’শ হতে ১ হাজার জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ ব্যবহার হচ্ছে। অন্যদিকে মোবাইল অপারেটরগুলোর নেটওয়ার্কে সব মিলে ৯’শ জিবিপিএসের মতো ব্যবহার হয়।

‘ব্রডব্যান্ডের একেকটি সংযোগ অনেক গুরুত্ব বহন করে। প্রতি ১ হাজার ব্রডব্যান্ড সংযোগের মাধ্যমে প্রায় ১০ জন কর্মহীন মানুষের কর্মসংস্থান হয়। এছাড়াও বিশ্বব্যাংকের তথ্যানুসারে প্রতি ১০ শতাংশ ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পেনিট্রেশনের মাধ্যমে ১ দশমিক ৩৮ শতাংশ জিডিপির প্রবৃদ্ধি ঘটে’ বলছিলেন এম এ হাকিম।

আইএসপিএবি সভাপতি বলেন, করোনার মাঝখানে ব্রডব্যান্ডের যে পেনিট্রেশন বেড়েছিলো সেখানে ঢাকার সংযোগই বেশি। ঢাকার একটি মেসে একটি সংযোগে রাউটারে মাধ্যমে হয়ত ব্যবহারকারী ছিলো ৪-৫ জন। করোনার শুরুতে তারা গ্রামে গিয়ে ক্লাস, কাজসহ নানা প্রয়োজনে আলাদা আলাদা সংযোগ নিয়েছেন।

এম এ হাকিম বলছেন, অনলাইন ক্লাসসহ পড়াশোনা, কাজের প্রয়োজনে ব্রডব্যান্ড সাশ্রয়ী ও মানসম্মত। ব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মীদের হোম অফিসের জন্য ব্রডব্যান্ড সংযোগ প্রোভাইড করছে। এরমধ্যে সাধারণত ৩০ শতাংশের বাড়িতে প্রথমবারের মতো ব্রডব্যান্ড সংযোগ যাবে।

‘করোনার সেকেন্ড ওয়েভে যদি পরিস্থিতি আবারও অস্বাভাবিক হয়ে যায় তাহলে ব্রডব্যান্ডের ব্যবহার আরও বাড়বে’ মনে করেন তিনি।

করোনার শুরতে মার্চে মোবাইল ইন্টারনেট সংযোগ ছিল ৯ কোটি ৫১ লাখ ৬৮ হাজার, এপ্রিলে ৯ কোটি ৩১ লাখ ১ হাজার, মে মাসে ৯ কোটি ৪০ লাখ ২৮ হাজার, জুনে ৯ কোটি ৪৯ লাখ ৫ হাজার, জুলাইয়ে ৯ কোটি ৭৮ লাখ ৪০ হাজার এবং আগস্টে ছিল ৯ কোটি ৯৬ লাখ ১৮ হাজার সংযোগ।

একই সঙ্গে ব্রডব্যান্ডে মার্চে ছিলো ৮০ লাখ ৮৪ হাজার, এপ্রিলে ও মে মাসে এই সংখ্যা আর বাড়েনি।

জুনে এসে এটি এক লাফে প্রায় ৬ লাখ বেড়ে হয়ে দাঁড়ায় ৮৫ লাখ ৭১ হাজার । কিন্তু আবারও জুলাই এবং আগস্ট মাসে তা আর বাড়েনি।

এরপর সেপ্টেম্বরে এসে ব্যবহারীর সংখ্যা বাড়ে ১ লাখের মতো, দাঁড়ায় ৮৬ লাখ ৫৬ হাজার।