স্কুল-কলেজ অন্যত্র স্থানান্তর করতে বিজ্ঞপ্তি: হুমকির মুখে শিক্ষার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক:: চট্টগ্রাম নগরীর নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটির বিধি বহিভূত ও সেচ্ছাচারিতামূলক সিদ্ধান্তের কারণে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে সংশ্লিষ্ট আবাসিকের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। শুধু তাই নয়, এখতিয়ার বহিভূত এমন সিদ্ধান্তের কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক সম্মানহানিসহ কোমলমতি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে ভীষণভাবে ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে। এতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষতির পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে।

এদিকে গত ৬ অক্টোবর চট্টগ্রামের স্থানীয় পত্রিকায় একটি ‘সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি’ প্রচার করে সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহজাহান। এতে বলা হয়, আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে স্কুল-কলেজ এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো অন্যত্র স্থানান্তর করতে হবে। অন্যথায় সোসাইটি কর্তৃক বরাদ্দকৃত প্লটের বন্দোবস্তি দলিলের শর্ত অনুযায়ী প্লট বরাদ্দ বাতিলের বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে। আরও বলা হয়, নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটির ১ নং রোড় থেকে ৬ নং রোড় এলাকায় সংশ্লিষ্ট স্কুল-কলেজ সমূহের শিক্ষার্থীদেও ভভিভাবকবৃন্দকে আগামী ১ জানুয়ারি থেকে উক্ত স্কুল-কলেজ সমূহে কোন শিক্ষার্থী ভর্তি না করানোর জন্য অনুরোধ জানানো হয়। অন্যথায় তাদেও শিক্ষাজীবনে কোন সমস্যা সৃষ্টির জন্য সোসাইটি কর্তৃপক্ষকে দায়ী করা যাবে না। এ ঘটনার পর উক্ত বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করে নিতে সোসাইটির সম্পাদকে আইনগত নোটিশ প্রদান করেছে সাউথ পয়েন্ট স্কুল এন্ড কলেজের পরিচালক এডভোকেট মিজবাহুল মুনির। নোটিশে বলা হয়, সাধারণ সম্পাদক কর্তৃক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ভর্তি না করানোর জন্য অনুরোধ জানানোর আহবান এখতেয়ার বহির্ভূত কার্য হয়। এতে প্রতিষ্ঠানের মালিক ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এবং উল্লেখিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়–য়া শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদেও মাঝে এক অজানা আশংকায় ভীষণভাবে ভীতি সন্ত্রস্থ হয়ে পড়েছে। এতে আরও বলা হয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রনকারী সংস্থা শিক্ষা মন্ত্রণালয় হওয়ার সত্বেও সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক বেআইনী, হিংসাত্মক, অকার্যকর, কর্তৃত্ববিহীন ও বিধি বহির্ভূতভাবে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদেও মাঝে ভীতি ছড়িয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সম্মানহানিসহ প্রচুর আর্থিক ক্ষতি সাধনে লিপ্ত রয়েছেন। আর পত্রিকায় প্রচারিত বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারের অনুরোধ জানানো হয়। অন্যথায় শিক্ষার্থীদেও শিক্ষাজীবন ব্যাহত করার দায়সহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সম্মাহানিসহ আর্থিক ক্ষতি করার জন্য এবং কতৃত্ববহির্ভূত বিজ্ঞপ্তি প্রচারের জন্য আইন আদালতের আশ্রয় নেওয়ার কথা বলা হয়।

আবাসিক এলাকায় বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলেও শুধুমাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে টার্গেট করার কারণ কি-এমনটা প্রশ্ন অভিভাবক ও সংশ্লিষ্টদের। সাউথ পয়েন্ট স্কুল এন্ড কলেজের পরিচালক এডভোকেট মিজবাহুল মুনির বলেন, আমার বক্তব্য এই স্কুলের পরিচালক হিসেবে নয়, একজন আইনজীবি হিসেবে। নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটি সমবায় আইন দ্বরা গঠিত ও পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান। সমবায়ের কোন ধারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া সমর্থন করে না এবং তা নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটির এখতিয়ার বহির্ভূত। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ শিক্ষা মন্ত্রণালয় অন্তভর্’ক্ত। সুতারাং কো-অপারেটিভ এর বিজ্ঞপ্তি আকাওে প্রকাশিত বক্তব্য সমবায় সমিতির আইন বহিভর্’ত। এমতাবস্থায় হাউজিং সোসাইটির যথাযথ আইন পক্রিয়া অনুসরণ না করে এবং সমবায় সমিতির আইন বহির্ভূতভাবে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে অত্র এলাকায় অবস্থিত স্কুলসমূহে শিক্ষার্থী ভর্তি না করার অনুরোধ করা এবং শিক্ষার্থীদেও শিক্ষাজীবনে বিঘিœত হলে তার দায় এড়িয়ে যাওয়ার বিষয়টি আমার কাছে হীন উদ্দেশ্য প্রণোদিত মনে হয়েছে। এসব বিষয়ে নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহজাহান এর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।