বেত চাষ

শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর থেকেঃ দিনাজপুরে হুমকির মুখে থাকা উদ্ভিদ প্রজাতি ‘বেত’। জলবায়ুর পরিবর্তন, নগরায়ন, বৃক্ষনিধনসহ নানা কারণে দিনাজপুরে হারিয়ে যাচ্ছে বেত ঝাড়। তাই বন বিভাগের আওতায় জেলার বিভিন্ন বনাঞ্চলে গড়ে তোলা হয়েছে বেত বাগান। কিন্তু,বেত বাগান উজার হওয়ায ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে,বনাঞ্চল ও পরিবেশের। সেই সাথে বিলুপ্ত হচ্ছে জীব-বৈচিত্র ও জীবজন্তুর।
এক সময় প্রচুর বেত জন্মাতো দিনাজপুরে। শুধু বনাঞ্চল নয়,গ্রামীণ জনপদের আনাচে-কানাচে দেখা যেতো বেত ঝাড়। পরিবেশ বান্ধব এই বেত ঝাড় শক্রু প্রতিরোধে বেড়া হিসেবে কাজ হতো। তৈরী হতো বেতের নানা বাহারী কুঠির শিল্প। শুধু তাই নয়,এতে রক্ষা পেতো জীব-বৈচিত্র ও জীবজন্তুর।
অর্থকরী বনজ উদ্বিদ বেত একটি অর্থকারী সম্পদ। শুধু বনাঞ্চল নয় এক সময় প্রচুর বেত ঝাড় দেখা যেত দিনাজপুরের গ্রামীণ জনপদে। এমনটাই জানিয়েছেন,উদ্ভিদবিদ মোসাদ্দেক হোসেন। তিনি জানান,এর ঘন ডালপালা ও পত্রপল্লব মাটির আদ্রতা ধরে রাখে। মরুকরণের প্রকৃতি দূর্যোগ থেকে রক্ষা করে। কিন্তু জলবায়ুর পরিবর্তন, নগরায়ন, বৃক্ষনিধনসহ নানা কারণে এখন এ জেলায় হারিয়ে যেতে বসেছে বেত ঝাড়।
দিনাজপুর সামাজিক বন বিভাগের ফরেষ্টার মো. সাদেকুর রহমান সাদেক জানিয়েছেন,পরিবেশের ভারসাম্য ও জীব-বৈচিত্র রক্ষায় বেত চাষের উদ্যোগ নিয়েছে দিনাজপুর বনবিভাগ। জেলার জাতীয় উদ্যান রাম সাগর, আসুরা বিল, সিংড়া ফরেষ্ট, নবাবগঞ্জ ফরেষ্ট,বিরল ধর্মপুর ফরেষ্ট,বীরগঞ্জ ফরেষ্টে বেত চাষ করা হচ্ছে। এই প্রকল্পে যুক্ত করা হয়েছে স্থানীয়দের।
দিনাজপুরে এক সময় বেত দিয়ে দৈনন্দিন কাজের বিভিন্ন পণ্য ছাড়াও তৈরি হয় ঘর সাজানোর হরেক পণ্য। আর সে পণ্য শুধু আমাদের দেশেই নয়; রফতানি হতো বিদেশেও।
সরজমিনে দেখা গেছে,পরিবেশ বান্ধব এই বেত চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে,দিনাজপুর সামাজিক বন বিভাগ। তাদের এই সাফল্য এখন অনেকের অনুপ্রেরণা। এই বিভাগের সহায়তা পেলে অনেকে ব্যক্তি উদ্যোগে বেত চাষ করার অগ্রহ প্রকাশ করেছেন।