ভারী বর্ষণের কারণে পাহাড় ধসে পড়ার আশঙ্কায় মাইকিং

দুইদিন ধরে অব্যাহত ভারী বর্ষণের কারণে পাহাড় ধসে পড়ার আশঙ্কায় চট্টগ্রামের বিভিন্ন পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে।

ইতোমধ্যে দুর্যোগ মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে চট্টগ্রাম মহানগরীর ১৭ টি ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়সহ রেলওয়ের মালিকানাধীন কনকর্ড গ্রুপকে লিজ দেয়া ফয়েজ লেক সংলগ্ন অপদখলীয় অতি ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ি বসতি এবং এশিয়ান উইমেন ইউনিভার্সিটি সংলগ্ন বায়েজিদ-ফৌজদারহাট সিডিএ লিংক রোড এলাকার ১৬ টি পাহাড়ে জোরদার মাইকিং কার্যক্রম অব্যাহত আছে।

জেলা প্রশাসনের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় করোনাভাইরাস দুর্যোগের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে যাতে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে সরে নিরাপদে অবস্থান গ্রহণ করতে পারে এজন্য চান্দগাও, বাকলিয়া, আগ্রাবাদ এবং কাট্টলী সার্কেলাধীন এলাকায় প্রস্তুত রয়েছে মোট ১৯ টি আশ্রয় কেন্দ্র।

চট্টগ্রাম মহানগরীর পাহাড়ি এলাকা সমূহে ভারী বর্ষণের মধ্যে মানুষের জানমালের সুরক্ষায় জেলা প্রশাসন চট্টগ্রামের পক্ষ থেকে ঝুঁকি পূর্ণ পাহাড় থেকে জনগণকে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নিতে মাইকিং কার্যক্রম অব্যাহত আছে।

চলমান ভারী বর্ষণে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে চট্টগ্রাম মহানগরীর ৬ টি সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) গণ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাথে সমন্বয় করে আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে।

স্থানীয় মসজিদ গুলো থেকেও মাইকিং এর মাধ্যমে লোকজন কে নিরাপদ অবস্থানে আশ্রয় নিতে আহ্বান জানানো হচ্ছে। প্রতি ওয়াক্ত নামাজের আগে-পরে এবং বৃষ্টির তীব্রতা অনুযায়ী মসজিদের মুয়াজ্জিনগণের মাধ্যমে জেলা প্রশাসন চট্টগ্রামের পক্ষ থেকে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ি এলাকা থেকে লোকজনকে সরে যেতে আহ্বান করা হচ্ছে।

মতিঝর্ণা, বাটালি হিল, একে খান পাহাড়, ট্যাংকির পাহাড়, আমিন জুট মিলস এলাকা, রউফাবাদ, খুলশী, পাহাড়তলি, ফয়েজ লেক আকবর শাহ এলাকার ঝিল-১,২,৩ নং এলাকা, জিয়ানগর, মধ্যমনগর, মুজিব নগর, শান্তিনগর এলাকা, কৈবল্যধাম বিশ্বকলোনী এলাকা, ফিরোজ শাহ এলাকা, ফরেস্ট রিসার্চ ইন্সটিটিউট এলাকা, বায়েজিদ-ফৌজদারহাট সিডিএ লিংক রোড এলাকা সমূহে ভারী বর্ষণের মধ্যে মানুষের জানমালের সুরক্ষায় জেলা প্রশাসন চট্টগ্রামের পক্ষ থেকে ঝুঁকি পূর্ণ পাহাড় থেকে জনগণকে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নিতে মাইকিং কার্যক্রম অব্যাহত আছে। এখানে উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশ রেলওয়ের সাথে কনকর্ড গ্রুপের সাথে ফয়েজ লেক এলাকার চুক্তিভুক্ত ৩৩৬ একর জায়গার মধ্যে অপদখলীয় প্রায় শতাধিক একর পাহাড়ি জায়গা বিশেষ করে আকবর শাহ থানাধীন ফয়েজ লেক এলাকাভুক্ত ঝিল-১,২,৩ নং এলাকা, জিয়ানগর, মধ্যমনগর, মুজিব নগর, শান্তিনগর এলাকা, লেকসিটি এলাকায় জেলা প্রশাসন চট্টগ্রামের পক্ষ থেকে মাইকিং কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।

এসব এলাকা কনকর্ড গ্রুপ এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের যৌথ ব্যবস্থাপনায় থাকার কথা থাকলেও এখানে বিশাল এলাকা জুড়ে ঝুঁকি পূর্ণ স্থাপনা রয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন জানান, চট্টগ্রাম মহানগরীর সহকারী কমিশনার (ভূমি) গণের তত্ত্বাবধানে মোট ১৯ টি আশ্রয়কেন্দ্র জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে সিটি কর্পোরেশন এবং জেলা প্রশাসনের ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সমন্বয় করে ত্রাণকার্য পরিচালনা করবেন।

ককরোনাভাইরাস সংক্রমণের কথা বিবেচনায় যাতে আশ্রয়কেন্দ্রে সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকে এজন্য আশ্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা জেলা প্রশাসন চট্টগ্রামের পক্ষ থেকে এবার দ্বিগুণ করা হয়েছে। সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকায় সহকারী কমিশনার (ভূমি)গণের তত্ত্বাবধানে সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিসের কর্মচারী এবং সিসিপি স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে লোকজনকে অপসারণ করা হচ্ছে। তবে করোনাভাইরাস এর সংক্রমণ পরিস্থিতিতে অধিকাংশ ঝুঁকি পূর্ণ পাহাড়ি এলাকা থেকে লোকজন সরে গিয়ে তাদের নিকটবর্তী আত্মীয়স্বজনের বাসায় নিরাপদ আশ্রয় নিচ্ছে।

আশ্রয়কেন্দ্র গুলো হলোঃ
১. পাহাড়তলি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
২. কোয়াড পি-ব্লক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বিশ্ব কলোনী, কৈবল্যধাম
৩. ফিরোজ শাহ কলোনী প্রাথমিক বিদ্যালয়। ফিরোজ শাহ হাউজিং এস্টেট, পাহাড়তলি, চট্টগ্রাম।
৪. বায়তুল ফালাহ আদর্শ মাদ্রাসা,
এইচ ব্লক, ফিরোজ শাহ হাউজিং এস্টেট
৫. চট্টগ্রাম মডেল স্কুল এন্ড কলেজ
৬.জালালাবাদ বাজার সংলগ্ন শেড
৭. রউফাবাদ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়
৮.রশিদিয়া রউফাবাদ আলিম মাদ্রাসা
৯.মহানগর পাবলিক স্কুল
১০. আল হেরা মাদ্রাসা
১১.আমিন জুট মিল ওয়ার্কার্স ক্লাব
১২.আমিন জুট মিলস নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়
১৩. লালখানবাজার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়
১৪.এবাদ উল্লাহ পন্ডিত সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়
১৫.শহীদ নগর সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
১৬.কলিম উল্লাহ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়
১৭.ywca
১৮.শেখ রাসেল প্রাথমিক বিদ্যালয়
১৯. মতিঝর্ণা ইউসেফ স্কুল