দিনাজপুরে বাণিজ্যিকভাবে লতিরাজ কচু চাষ

শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর থেকেঃ ধানের জেলা দিনাজপুরে বাণিজ্যিকভিত্তিতে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে লতিরাজ কচু চাষ। পতিত ও অনাবাদি জমিতে এ কচু চাষ করে ঘুরছে,অনেক কৃষকের ভাগ্য’র চাকা। দিনাজপুরে মাটি ও আবহাওয়া লতিরাজ কচু চাষের জন্য উপযোগি বলেও জানাচ্ছেন,কৃষিবিদরা। সহযোগিতা পেলে এ অঞ্চলে লতিরাজ কচু চাষের বিপ্লব সাধিত হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন অনেকেই।
শাহীনুর ইসলামের অভাবের সংসারে ভাগ্য বদলে দিয়েছে, লতিরাজ কচু। কচু চাষাবাদ করে স্বাবলম্বী হয়ে বেশ ভালোই আছেন দিনাজপুরের বিরল উপজেলার ৯ নং মঙ্গলপুর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের এই কৃষক। শাহীনুর জানান,এক একর জমিতে দলগতভাবে ৪ জন এই লতিরাজ কচু চাষ করে নিজেদের পাল্টে দিয়েছেন তারা। একই ভাবে দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার ৩ নং মুকুন্দপুর ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের কৃষক দিলীপ চন্দ্র রায়ের অভাবের সংসারে ভাগ্য ফেরাল লতিরাজ কচু। দিলীপ ৫০ শতাংশ জমিতে এই লতিরাজ কচু চাষ করে নিজেকে পাল্টে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। আগামী আরো জমিতে এ জাতের কচু চাষ সম্প্রসারণ করবেন বলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।
শুধু শহীদুল ইসলাম আর দিলীপ চন্দ্র রায় নয়,দিনাজপুরের অসংখ্য কৃষকের এখন ভাগ্য পরিবর্তনের ফসল লতিরাজ কচু।,অনেকেই চাষ করছেন এ জাতের কচু। তার সাফল্য দেখে ও চারা নিয়ে ওই এলাকাসহ পাশের জেলা ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড়ের বিভিন্ন জায়গার অনেকেই লতিরাজ কচুর আবাদ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। অনেকে আগ্রহ হয়েছেন এ জাতের কচু চাষে।এমনি কথা জানালেন এই কচুচাষীরা।
জেলার বিস্তৃর্ণ ক্ষেতজুড়ে শোভা পাচ্ছে এ জাতের কচু।দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্গরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. তৌহিদুল ইকবাল জালালেন, লতিরাজ কচুর লতা, পাতা, ডাইগা কান্ড সব কিছুই যাওয়ার উপযোগী এবং চৈত্র বৈশাখ মাস থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত লতা হয় লতিরাজ কচুর। লতিরাজ কচুর কান্ড কাঠকচু বিক্রি হয় বাজারে। লতিরাজের চারা হয় লতা থেকেই। আশ্বিন,কার্তিক ও অগ্রহায়ণ মাসে যে সমস্ত চারা উৎপন্ন হয় সেগুলো নতুন করে রোপণ করতে হয় পরবর্তী সময়ে লতিরাজ কচু চাষ স¤প্রসারণ জন্য।এ কচু গাছের যখন তিন মাস বয়স হয়, তখন গাছের গুড়ায় যে লতি বের হয়।প্রথম দিকে ক্ষেত থেকেই তা কেজি প্রতি খুচরা বিক্রি হয় ২৫ থেকে ৪০ টাকা। কচু গাছের ছয় মাস বয়স সম্পূর্ণ হলে তা বাজারজাত করার উপযোগী হয়। কৃষিতে সমৃদ্ধ লতিরাজ কচু চাষে সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে আসছে কৃষি বিভাগ।দিনাজপুরে মাটি ও আবহাওয়া লতিরাজ কচু চাষের জন্য উপযোগি বলের জানিয়েছেন,এই কৃষিবিদ। সুষ্ঠু বাজারজাতের ব্যবস্থা করা গেলে উদ্যোগী কৃষকদের মুখে হাসি ফুটবে বলে মনে করছেন তিনি।
সরজমিনে দেখা গেছে,ধানের জেলা দিনাজপুরে এ লতিরাজ কচু চাষের ধুম পড়েছে। এই লতিরাজ কচু চাষাবাদ করে ঘুরছে,অনেক কৃষকের ভাগ্যেও চাকা। সংশ্লিষ্ট বিভাগের সহযোগিতা অব্যাহত খাকলে এবং এই লতিরাজ কচুর ভালো দাম পেলে এ অঞ্চলে আগামীতে লতিরাজ কচু চাষাবাদের পরিধি আরো বেড়ে যাবে, এমনটাই মন্তব্য করছেন,সংশ্লিষ্টরা।